শঙ্খ বাজানোর উপকারিতা অনেক, যেমন স্বাস্থ্যের উন্নতি থেকে মানসিক শান্তি পর্যন্ত, Health benefits of blowing conch are extensive, ranging from improved health to mental peace. শঙ্খ হল এক ধরণের সামুদ্রিক শামুক। এর বৈজ্ঞানিক নাম “turbinella pyrum “। এটি হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন প্রভৃতি ধর্মে পূজার উপাচার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।শঙ্খ বাজানো একটি প্রাচীন অনুষ্ঠান, যার শারীরিক, মানসিক, এবং আধ্যাত্মিক উপকারিতা রয়েছে। শঙ্খ বাজানোর প্রক্রিয়ায় গভীর শ্বাস নেওয়া এবং দীর্ঘস্থায়ী নির্গমন প্রয়োজন হয়, যা ফুসফুসের ক্ষমতা বাড়ায় এবং অক্সিজেনের গ্রহণ উন্নত করে। এটি মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ কমানোর সাথে সাথে মনোনিবেশ এবং একাগ্রতাও বৃদ্ধি করে। শঙ্খ বাজানোর সময় উৎপন্ন ধ্বনি শব্দ থেরাপির মতো কাজ করে, যা মনের শান্তি এনে দেয় এবং আত্মিক শক্তির উন্নতি ঘটায়। আধ্যাত্মিক দিক থেকে, শঙ্খের ধ্বনি পবিত্র মনে করা হয়, যা নেতিবাচক শক্তি দূর করে এবং ইতিবাচক কম্পন আকর্ষণ করে। এই অনুশীলন হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নত করতে এবং ইমিউন সিস্টেম বাড়াতে সাহায্য করে। মৌখিক এবং গলার মাংসপেশীগুলোর শক্তি এবং টোন বৃদ্ধি পেয়ে মৌখিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে। সংক্ষেপে, শঙ্খ বাজানো একটি সম্পূর্ণ অনুশীলন, যা শারীরিক, মানসিক এবং আধ্যাত্মিক স্তরে ব্যাপক উপকার প্রদান করে।
শঙ্খ বাজানোর উপকারিতা I Health benefits of blowing conch I
প্রাচীন সময় থেকেই শঙ্খ বাজানোর প্রথা আমাদের সংস্কৃতিতে গভীরভাবে প্রোথিত। বিশেষ করে পুজোর সময়ে, শঙ্খ বাজানো একটি অপরিহার্য অংশ যা নিষ্ঠা এবং ভক্তির প্রতীক হিসেবে গৃহীত। কিন্তু কখনও ভেবেছেন কি, নিয়মিত শাঁখ বাজানো আমাদের শরীর এবং মনের উপর কী ধরনের প্রভাব ফেলে? এই ব্লগে, আমরা শঙ্খ বাজানোর উপকারিতা এবং এর বিশেষ গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করবো। শঙ্খ বাজানো কেবল একটি ধর্মীয় রীতি নয়, বরং এটি শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি সাধন করে। গভীর শ্বাস নেওয়া এবং নিয়ন্ত্রিত শ্বাস ছাড়ার মাধ্যমে, এটি ফুসফুসের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, হার্ট রেট ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং স্ট্রেস কমাতে সহায়ক। শঙ্খের সুমধুর ধ্বনি মানসিক শান্তি বয়ে আনে এবং নেতিবাচক শক্তি দূর করে। এছাড়াও, এটি ইমিউন সিস্টেমের উন্নতি, মৌখিক স্বাস্থ্যের উন্নতি, এবং মনের একাগ্রতা বৃদ্ধি করে। তাহলে, পুজোর সময়ে নিজেই শাঁখ বাজানোর প্রথা কেন মেনে চলা উচিত? এর উত্তর লুকিয়ে আছে শঙ্খ বাজানোর অপার স্বাস্থ্যকর এবং আধ্যাত্মিক উপকারিতায়। এই ব্লগে, আমরা শঙ্খ বাজানোর বিজ্ঞান এবং এর প্রাচীন ঐতিহ্যের সংমিশ্রণে এক অনন্য দৃষ্টিকোণ তুলে ধরবো, যা আপনাকে নিয়মিত এই অনুশীলনে অংশ নেওয়ার প্রেরণা জোগাবে। হিন্দু ধর্মে দেব-দেবীর আরাধনার পাশাপাশি, পুজোয় ব্যবহৃত সামগ্রীরও বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। পুজোয় ফুল, প্রদীপ, প্রসাদ, গঙ্গাজল, সিঁদুর, রোলী ও শঙ্খ অবশ্যই ব্যবহার করা হয়। পুজোর সময় শঙ্খনাদ শুভ মনে করা হয়। বিষ্ণু ও লক্ষ্মীর হাতে শঙ্খ সুশোভিত থাকে। প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, যে বাড়িতে শঙ্খ থাকে না, সেখানে লক্ষ্মী বাস করেন না। রোজ শঙ্খ বাজালে বাড়ির নেগেটিভ এনার্জি দূর হয় ও পজিটিভ এনার্জির সঞ্চার হয়।
শঙ্খ বাজানোর অনেক ধরনের উপকারিতা রয়েছে, যা শারীরিক, মানসিক এবং আধ্যাত্মিক স্তরে প্রভাব ফেলে। নিম্নে শঙ্খ বাজানোর কিছু উপকারিতা বর্ণনা করা হলো:
১. শ্বাস প্রশ্বাসের উন্নতি
- ফুসফুসের ক্ষমতা বৃদ্ধি: শঙ্খ বাজানোর জন্য গভীর শ্বাস নেওয়া এবং নিয়ন্ত্রিতভাবে শ্বাস ছাড়া প্রয়োজন, যা ফুসফুসের ক্ষমতা বাড়ায়।
- শ্বাসপ্রশ্বাসের কৌশল: এটি প্রাণায়ামের মতো শ্বাসপ্রশ্বাসের কৌশল উন্নত করে, যা শ্বাসপ্রশ্বাসের দক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করে।
২. অক্সিজেনের গ্রহণ বৃদ্ধি
- গভীর শ্বাস নেওয়ার ফলে অধিক পরিমাণে অক্সিজেন গ্রহণ হয়, যা রক্ত সঞ্চালন এবং দেহের অক্সিজেনেশন উন্নত করে, এবং সার্বিক স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
৩. মাংসপেশীর শক্তি ও টোন উন্নতি
- শঙ্খ বাজানোর সময় মুখ, পেট এবং বুকের মাংসপেশী ব্যবহৃত হয়, যা এই অঞ্চলগুলোর মাংসপেশীর শক্তি এবং টোন উন্নতি করে।
৪. মানসিক চাপ ও উদ্বেগ কমানো
- এই অনুশীলনটি ধ্যানের মতো এবং মানসিক চাপ ও উদ্বেগের মাত্রা কমাতে পারে। শঙ্খের শব্দের মধ্যে একটি শান্তির প্রভাব রয়েছে।
৫. মনোনিবেশ ও একাগ্রতা বৃদ্ধি
- শঙ্খ বাজানোর জন্য প্রয়োজনীয় মনোনিবেশ এবং স্থিরতা মানসিক ফোকাস এবং একাগ্রতা উন্নত করতে পারে।
৬. আধ্যাত্মিক উপকারিতা
- অনেক সংস্কৃতিতে, শঙ্খের শব্দকে আধ্যাত্মিক পবিত্রতা সঙ্গে যুক্ত করা হয় এবং এটি নেতিবাচক শক্তিকে দূর করে এমন বিশ্বাস করা হয়। ধার্মিক অনুষ্ঠানে এটি শুভ শুরুর প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং ইতিবাচক কম্পন আহ্বান করে।
৭. শব্দ থেরাপি
- শঙ্খের উৎপন্ন শব্দ ফ্রিকোয়েন্সির নিরাময় গুণাবলী রয়েছে, যা শব্দ থেরাপির নীতির সাথে মিলে যায়। এই থেরাপি বলে যে, নির্দিষ্ট শব্দগুলো দেহের শক্তির ভারসাম্য ও সামঞ্জস্য তৈরি করতে পারে।
৮. ইমিউন সিস্টেম বৃদ্ধি
- গভীর শ্বাস নেওয়া ভ্যাগাস নার্ভকে উদ্দীপ্ত করে, যা চাপ কমাতে এবং সম্ভাব্যভাবে ইমিউন সিস্টেম বৃদ্ধি করতে পারে।
৯. হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নতি
- নিয়মিত অনুশীলন হৃদস্পন্দন এবং রক্তচাপে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, যা উন্নত ফুসফুসের কার্যকারিতা এবং চাপ হ্রাসের কারণে।
১০. মৌখিক স্বাস্থ্য উন্নতি
- শঙ্খ বাজানোর জন্য মুখ এবং গালের অনন্য ব্যবহার মৌখিক মোটর দক্ষতার উন্নতি করতে এবং এই মাংসপেশীগুলোর শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে, যা মৌখিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে অবদান রাখতে পারে।
এই উপকারিতাগুলো শুধুমাত্র গভীর শ্বাস নেওয়া এবং নিয়ন্ত্রিত শ্বাস ছাড়ার অভ্যাসের সাথে যুক্ত নয়, শঙ্খ বাজানোর সাংস্কৃতিক এবং আধ্যাত্মিক গুরুত্ব অনেকের জন্য অতিরিক্ত মানসিক এবং আত্মিক উপকার সৃষ্টি করে। তবে, অতিরিক্ত অনুশীলন এড়িয়ে চলা এবং নিজের শারীরিক সীমাবদ্ধতার প্রতি সচেতন থাকা গুরুত্বপূর্ণ, যাতে কোনো আঘাত বা ক্ষতি এড়ানো যায়।
শঙ্খ বাজানোর নিয়ম-
১) ভগবানের আরাধনা করার সময় শঙ্খ ভুলেও বাজাবেন না। এতে করে সেই পুজোর কোনও শুভ ফল দেয় না।
২) বাড়িতে যদি শঙ্খ থাকে তবে একটি নয় দুটি শাঁখা রাখুন। একটি শঙ্খ ফুঁকের জন্য এবং অন্যটি অভিষেক করার জন্য রাখুন।
৩) এটা বিশ্বাস করা হয় যে শঙ্খ থেকে ভগবান বিষ্ণুকে জল নিবেদন করা শুভ। কিন্তু ভগবান শিব ও সূর্যদেবকে ভুলেও শঙ্খ থেকে জল নিবেদন করবেন না।
৪) পূজার ঘরে একটি মাত্র শঙ্খ রাখুন, যা পূজায় ব্যবহৃত হয়। দ্বিতীয় শঙ্খটিকে একটি সাদা কাপড়ে মুড়ে পূজা ঘর বা মন্দিরের চারপাশে রাখুন।
৫) বরং পুজোর আগে বা পুজো শুরুর সঙ্গে সঙ্গে শঙ্খে ফুঁ দিয়ে পুজো শুরু করা উচিত নয়।
এক নজরে শঙ্খ বাজানোর ৫০ টি উপকারিতা II শাঁখ বাজানোর আছে হরেক উপকারিতা! শঙ্খ বাজানোর উপকারিতা I শঙ্খ বাজানোর আধ্যাত্মিক উপকারিতা I Health benefits of blowing conch I
শঙ্খ বাজানো একটি প্রাচীন অনুশীলন যার বহুমুখী উপকারিতা রয়েছে, তবে এখানে ৫০টি বিশেষ উপকারিতা তুলে ধরা হল:
১. ফুসফুসের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
২. শ্বাস-প্রশ্বাসের গতিবিধি উন্নত হয়।
৩. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ হয়।
৪. মানসিক চাপ হ্রাস পায়।
৫. অন্ত্রের কার্যকারিতা উন্নত হয়।
৬. মনের একাগ্রতা বৃদ্ধি পায়।
৭. স্মৃতিশক্তি উন্নত হয়।
৮. কণ্ঠস্বর পরিষ্কার ও শক্তিশালী হয়।
৯. থাইরয়েড গ্ল্যান্ডের সমস্যা নিয়ন্ত্রণ হয়।
১০. ইমিউন সিস্টেম বৃদ্ধি পায়।
১১. অন্ত্রের মধ্যে বায়ু প্রবাহ সহায়তা করে।
১২. হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নত হয়।
১৩. স্ট্রেস হরমোনের মাত্রা কমে।
শঙ্খ বাজানোর উপকারিতা I শঙ্খ বাজানোর আধ্যাত্মিক উপকারিতা I Health benefits of blowing conch I পুজোর সময়ে নিজেই শাঁখ বাজান? শাঁখ বাজানোর ফলে শরীরের উপর কী প্রভাব পড়ে?
১৪. অবসাদ দূর হয়।
১৫. স্নায়ুতন্ত্র সক্রিয় হয়।
১৬. আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পায়।
১৭. কর্মক্ষমতা উন্নত হয়।
১৮. শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি পায়।
১৯. মনোযোগ বাড়ে।
২০. শান্তি এবং স্থিরতা আনে।
২১. আধ্যাত্মিক উন্নতি সাধন করে।
২২. নেতিবাচক শক্তি দূর করে।
২৩. পজিটিভ এনার্জি বাড়ায়।
২৪. মনের সঙ্গে শরীরের সংযোগ সৃষ্টি করে।
২৫. ব্যাক্তিগত চেতনা বৃদ্ধি পায়।
২৬. পরিবেশকে শুদ্ধ করে।
২৭. সম্প্রীতি ও ঐক্যের বোধ তৈরি করে।
২৮. ক্লান্তি দূর করে।
২৯. ঘুমের মান উন্নত হয়।
৩০. শ্বাস-প্রশ্বাসের রোগ প্রতিরোধ করে।
৩১. মুখের মাংসপেশী শক্তিশালী হয়।
৩২. কানের স্বাস্থ্য উন্নত হয়।
৩৩. অ্যালার্জি প্রতিরোধ করে।
৩৪. সাইনাসের সমস্যা উন্নত হয়।
৩৫. হাড়ের স্বাস্থ্য উন্নত হয়।
৩৬. শরীরের বিষাক্ত পদার্থ বের হয়।
৩৭. মাথাব্যথা দূর হয়।
৩৮. চোখের দৃষ্টিশক্তি উন্নত হয়।
৩৯. মুখের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করে।
৪০. হজমশক্তি উন্নত হয়।
৪১. রক্তসঞ্চালন উন্নত হয়।
৪২. চিন্তা ও মেধাশক্তি বৃদ্ধি পায়।
৪৩. আত্ম-সচেতনতা বাড়ে।
৪৪. আত্ম-নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধি পায়।
৪৫. শারীরিক ও মানসিক ব্যালান্স সৃষ্টি হয়।
৪৬. আবেগীয় স্থিতিশীলতা আসে।
৪৭. শরীরের মেটাবলিজম বাড়ে।
৪৮. আয়ু বৃদ্ধি পায়।
৪৯. শরীরের লচক বাড়ে।
৫০. জীবনে নতুন উদ্দীপনা আনে।
উপরোক্ত উপকারিতাগুলি শঙ্খ বাজানোর অভ্যাস করার অনেক কারণ প্রদান করে এবং এর মাধ্যমে শারীরিক, মানসিক, এবং আধ্যাত্মিক স্বাস্থ্যের উন্নতি সাধিত হয়।
কারা শাঁখ বাজানো থেকে বিরত থাকবেন ? শাঁখ বাজানোর সময় কী কী মাথায় রাখবেন?
আপাত ভাবে শাঁখ বাজানো শরীরে ইতিবাচক ফল দিলেও সকলের জন্য তা সমান ফলাফল না-ও দিতে পারে। কারা শাঁখ বাজানো থেকে বিরত থাকবেন এবং শাঁখ বাজানোর সময় কী কী মাথায় রাখবেন?
১) শাঁখ বাজানোর একটি পদ্ধতি আছে। যাঁরা এ বিষয়ে অভিজ্ঞ, তাঁদের কাছ থেকে শিখে নিন শাঁখ বাজানো। অসাবধানে জোরে ফুঁ দিলে চোখের এবং কানের পেশি ছিঁড়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রবল।
২) শাঁখ বাজানোর সময়ে অনেকেই মুখ দিয়ে শ্বাস নিয়ে ফেলেন। এটি ভুল পদ্ধতি। শাঁখ বাজানোর সময়ে মুখ দিয়ে শ্বাস না নিয়ে নাক দিয়ে শ্বাস নিন।
৩) উচ্চ রক্তচাপ, হার্নিয়া, গ্লোকোমার সমস্যা থাকলে শাঁখ না বাজানোই ভাল।
শঙ্খ বাজানোর উপকারিতা I শঙ্খ বাজানোর আধ্যাত্মিক উপকারিতা I Health benefits of blowing conch I শাঁখ বাজানোর অনেক উপকারিতা, জানলে অবাক হবেন
১) তিনবার শঙ্খ বাজানো হয় কেন?
গীতায় শঙ্খনাদ করেছিলেন শ্রীকৃষ্ণ
শাস্ত্র মতে নিত্য পুজোর পরে যদি নিয়ম করে তিনবার শঙ্খ বাজানো যায়, তাহলে গৃহস্থের অন্দরে অশুভ শক্তির প্রভাব কমতে থাকে এবং শুভ শক্তির মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। ফলে কোনও খারাপ ঘটনা ঘটার আশঙ্কা যেমন কমে, তেমনি ভাগ্যও ফিরে আসে। শাস্ত্রে বলা হয় বাড়িতে শঙ্খ তিনবার বাজানো উচিত।
২) শঙ্খের মুখ কোন দিকে রাখা উচিত?
– শঙ্খ সর্বদা দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে রাখা উচিত, যার কারণে ঘরে সুখ শান্তি বজায় থাকে।
৩) শঙ্খ কোন দিকে রাখা উচিত?
কোন দিকে আমার শঙ্খ রাখা উচিত? আপনি যদি পূজা ঘরে আপনার শঙ্খ স্থাপন করেন তবে এটি দেবতার দিকে নির্দেশ করা ভাল। সাধারনত, শঙ্খটি তার খোলার সাথে সিলিংয়ের দিকে মুখ করে স্থাপন করা উচিত।
৪) বাড়িতে কোন শঙ্খ ফুঁ দেওয়া যায়?
বামাবর্তি শঙ্খ – ফুঁ দেওয়া শঙ্খ
বাম হাতে ধরে রাখা, এটি সবচেয়ে বেশি পাওয়া শাঁখ এবং এটি সব ধর্মীয় উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়। একটি বামাবর্তি শঙ্খ ফুঁ দিলে নেতিবাচক শক্তি দূর হয় এবং চারপাশ পরিশুদ্ধ হয়। এটি দেবী লক্ষ্মীর ভাই এবং ভগবান বিষ্ণুর প্রিয় হিসাবে বিবেচিত হয়।
৫) পুজোয় শাঁখ কিভাবে রাখবেন?
শঙ্খ রাখার আগে পরিষ্কার করে নিন। বৃহস্পতিবার বা গুপ্তধনের একটি সুন্দর মহূর্তে শঙ্খ পরিষ্কার করা যেতে পারে। – পুজোর ঘরে শঙ্খ সবসময় মূর্তির দিকে মুখ করে রাখুন । – শঙ্খটি ছাদের দিকে মুখ করে খোলা অংশ এবং তার পাশে ঠোঁট দিয়ে সংরক্ষণ করতে হবে।
৬) শঙ্খ কিসের প্রতীক?
শিশু হিসাবে, আমরা জীবনের প্রতীক হিসাবে শঙ্খের খোলস ধারণ করা হিন্দু দেব-দেবীদের ছবি দেখে বড় হয়েছি, কারণ শঙ্খের খোল জল থেকে আসে এবং জল থেকে জীবন বিবর্তিত হয়। এটি বিশুদ্ধতার প্রতীক – কিছু খুব পবিত্র, কিছু ঐশ্বরিক ।
৭) শঙ্খ শব্দের অর্থ কি?
শঙ্খ শব্দটি এসেছে দুটি সংস্কৃত শব্দ ‘শাম’ ও ‘খাম’ থেকে। ‘শাম’ শব্দের অর্থ শুভ এবং ‘খাম’ শব্দের অর্থ জল।
৮) শঙ্খ কতবার বাজানো উচিত?
শাস্ত্র মতে নিত্য পুজোর পরে যদি নিয়ম করে তিনবার শঙ্খ বাজানো যায়, তাহলে গৃহস্থের অন্দরে অশুভ শক্তির প্রভাব কমতে থাকে এবং শুভ শক্তির মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। ফলে কোনও খারাপ ঘটনা ঘটার আশঙ্কা যেমন কমে, তেমনি ভাগ্যও ফিরে আসে। শাস্ত্রে বলা হয় বাড়িতে শঙ্খ তিনবার বাজানো উচিত।
শঙ্খের গুড়ার উপকারিতা
প্রাচীন আয়ুর্বেদে শঙ্খ বা conch অথবা সী শেল এর ভূমিকা অপরিহার্য। সৌন্দর্য চর্চায় এর ভূমিকা অতুলনীয়। ত্বক ও চুলের উভয়
ক্ষেত্রেই শঙ্খ গুড়ার উপকারিতা অপরিসীম।
এই শাঁখ গুঁড়ো করলে যে সাদা পাউডার পাওয়া যায় তাই সাধারণত স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্যচর্চায় ব্যবহার করা হয়। শঙ্খের সাদা এই
গুঁড়ায় থাকে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম এবং অন্য নানা ধরনের খনিজ যেমন আয়রন এবং ম্যাগনেসিয়াম। এসব কারণে
প্রাচীনকাল থেকেই এশিয়া মহাদেশের বিভিন্ন অংশে শঙ্খ ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
★ত্বকের যত্নে শঙ্খের উপকারিতাঃ-
-ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে।
-ত্বকের বলিরেখা দূর করে।
-চোখের নিচের কালো দাগ দূর করে।
-রোদে পোড়া ভাব দূর করে। ব্রন দূর করে
-ত্বকের তৈলাক্ত ভাব দূর করে ব্যবহার বিধি
-শঙ্খগুড়ার সাথে মুলতানি গুড়া পানিতে মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন।
-শঙ্খের গুড়া গোলাপের পাপড়ির গুড়া অথবা গোলাপ জল মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন।
–শঙ্খগুড়া সাথে চালের গুড়া মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন।
–শঙ্খ গুড়া +মুলতানি মাটির গুড়া + কস্তুরি হলুদ এর গুড়া একসাথে লেবুর রস মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।
-শঙ্খের গুড়া গোলাপের পাপড়ির গুড়া আথবা গোলাপ জল মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন।
–শঙ্খ গুড়ার সাথে চালের গুড়া মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন।
-শঙ্খগুড়া +মুলতানি মাটির গুড়া +কস্তুরি হলুদ এর গুড়া একসাথে লেবুর রস মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।
-শঙ্খগুড়া অ্যালোভেরা জেল দিয়েও ব্যবহার করতে পারেন
★চুলের যত্নে শঙ্খের উপকারিতা:-
-চুলের স্বাভাবিক রং বজায় রাখতে সাহায্য কতে।
-মসৃন করে। *চুলের খুশকি দূর করে।
-চুল পড়া বন্ধ করে। ব্যবহার বিধি
-শঙ্খ গুড়া সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে সেই পানির সাথে গোলাপজল মিশিয়ে সেই পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।
শঙ্খ গুড়া, তিলের তেল ও আমলকি একত্রে মিশিয়ে চুলে লাগালে চুল পড়া বন্ধ করে এবং খুসকী দূর করে।
-সব ধরনের ত্বকের জন্য উপযুক্ত। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য বেশি উপযুক্ত।
পুজোর সময় শঙ্খ বাজানোর সঠিক ৭টি নিয়ম শিখে নিন
১) বাড়িতে যদি শঙ্খ থাকে তাহলে দুইটি শঙ্খ রাখুন। একটি বাজানোর জন্য, অন্যটি হলো অভিষেক করার জন্য।
২) ঈশ্বরের যখন আরাধনা করবেন তখন ভুল করে কখনো শঙ্খ বাজাবেন না।
৩) কোন পুজো শুরু হতে না হতেই অথবা পুজো শুরু করার আগে শঙ্খ বাজানো কখনই উচিত নয়।
৪) যে সংখ্যাটি আপনি পুজো করার সময় বাজিয়ে থাকেন, সেই সঙ্গে একমাত্র পুজোর ঘরে রাখতে পারেন, এছাড়া অন্য শঙ্খ যেটি খুব একটা ব্যবহৃত হয় না, তাকে সাদা কাপড়ে মুড়ে পূজার মন্দির এর চারপাশে রেখে দিন।
৫) শুধুমাত্র সকাল এবং সন্ধ্যাবেলায় একমাত্র শঙ্খ বাজানো উচিত এছাড়া অন্য কোন সময় শঙ্খ বাজানো একেবারেই উচিত নয়।
৬) যে শঙ্খ দিয়ে পুজো করবেন সেই সব সময় জল ভর্তি করে রাখতে হবে, নিয়মিত পুজোর পর সেই জল সারা ঘরে ছড়িয়ে দিতে হবে এতে আপনার গৃহের নেগেটিভ সমস্ত শক্তি দূরে চলে যাবে।
৭) শঙ্খ এ ফুঁ আগে খানিকটা গঙ্গা জল দিয়ে ধুয়ে নিন।
ডিসক্লেমার: এই নিবন্ধে উল্লেখিত তথ্য কেবলমাত্র সাধারণ সংজ্ঞায়িত উদাহরণ এবং ধারাবাহিক বিশ্লেষণের ভিত্তিতে প্রদান করা হয়েছে। শঙ্খ বাজানোর প্রতিটি সুবিধা বা প্রভাব ব্যক্তি বা সম্প্রদায়ের অভিজ্ঞতা এবং পরিস্থিতিতে ভিন্ন হতে পারে। এই নিবন্ধে প্রদত্ত তথ্য দ্বারা কোনও চিকিৎসা বা ঔষধের অনুমোদন বা পরামর্শ দেওয়া হয়নি। আপনার যদি কোনও চিকিৎসা বা স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সমস্যার সঙ্গে পরামর্শ প্রয়োজন হয়, তাহলে দয়া করে তত্ত্বাবধায়ক চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করুন। এই নিবন্ধ থেকে প্রাপ্ত কোনও ফলাফলের জন্য আমরা দায়ী নয়।
আরো পড়ুন: