Quotes of Bankim Chandra Chattopadhyay in Bengali l বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের অসাধারণ কয়েকটি বানী

By raateralo.com

Updated on:

Quotes of Bankim Chandra Chattopadhyay in Bengali

Quotes of Bankim Chandra Chattopadhyay in Bengali: প্রথম আধুনিক বাংলা ঔপন্যাসিক হিসেবে খ্যাত, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ২৬ জুন ১৮৩৮ সালে জন্মগ্রহণ করে এবং ৮ এপ্রিল ১৮৮৯ সালে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি একাধারে বাঙ্গালী সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও ব্রিটিশ সরকারের আওতাধীন সরকারী কর্মকর্তা ছিলেন। তবে সরকারী চাকুরীজীবির চেয়ে তিনি লেখক এবং হিন্দু পুনর্জাগরণের দার্শনিক হিসেবেই বেশি প্রখ্যাত ছিলেন। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত উল্লেখযোগ্য রচনাবলী দুর্গেশনন্দিনী, কপালকুন্ডুলা, বিষবৃক্ষ, কৃষ্ণকান্তের উইল, রাজসিংহ, কমলাকান্তের দপ্তর ইত্যাদি। এসকল গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধে তিনি সময় উপযোগী অসংখ্য উক্তি ও বাণী(Quotes of Bankim Chandra Chattopadhyay in Bengali) করে গিয়েছেন। যা কালের সীমা ছাড়িয়ে আজো জ্বলজ্বল করছে এই সময়ে এবং অতিক্রম করে যাবে অনেক প্রজন্ম। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় উক্তি সমূহের কিছু অংশ নিয়েই আজকের বিশেষ নিবেদন

Quotes of Bankim Chandra Chattopadhyay in Bengali

দুর্বল শরীর ইন্দ্রিয় জয় করিতে পারে না, ব্যায়াম ভিন্ন ইন্দ্রিয় জয় নাই।

যাহাকে স্বয়ং বিবাহ করিতে না পারি তাহার বিবাহ দিতে ইচ্ছে করে।

• সমাজে কোনো অভাব হইলেই পূরণ হয় – সমাজ কিছু চাহিলেই তাহা জন্মে।

• যত্ন ভিন্ন কোনো কাজই সফল হয় না।

• বাঙলার ইতিহাস চাই। নহিলে বাঙালি কখনও মানুষ হইবে না।

• যদি অন্য কেহ তোমার প্রণয়ভাগী না হইল, তবে তোমার মনুষ্যজন্ম বৃথা।

• সাহিত্যও ধর্ম ছাড়া নহে, কেন না, সাহিত্য সত্যমূলক।

• প্রণয় জন্মিলেই তাহাকে যত্নে স্থান দিবে; কেননা প্রণয় অমূল্য।

• সুশিক্ষিত-অশিক্ষিতে সমবেদনা চাই।

•. বিধবা বিবাহ ভালোও নহে, মন্দও নহে, সকল বিধবার বিবাহ হওয়া কদাচ ভালো নহে। তবে বিধবাগণের ইচ্ছামতো বিবাহে অধিকার থাকা ভালো। যে সাধ্বী, পূর্বপতিকে আন্তরিক ভালোবাসিয়াছিল, সে কখনোই পুনর্বার পরিণয় করিতে ইচ্ছা করে না।

Quotes of Bankim Chandra Chattopadhyay in Bengali l বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উক্তি | বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বিখ্যাত কিছু উক্তি

• নাটকের উদ্দেশ্য হৃচ্চিত্র।

• রাজা যেরূপ হয়েন, রাজানুচর এবং রাজপৌরজন প্রভৃতিও সেইরূপ হয়।

• বাঙালিরা আপন গৃহিণীকে সর্বাপেক্ষা সুন্দরী দেখে।

• ধন লিপ্লাই মনুষ্যজাতির অধিকতর মঙ্গলকর হইয়াছে। বস্তুত জ্ঞানলিঙ্গা কদাচিৎ, ধন লিপ্সা সর্বসাধারণ, এজন্য অপেক্ষাকৃত ফলোপদায়ক। দেশের উৎপন্ন ধনে জনসাধারণের গ্রাসাচ্ছাদনের কুলান হইতেছে বলিয়া সামাজিক ধনলিপ্সা কমে না। সর্বদা নূতন নূতন সুখের আকাঙ্ক্ষা জন্মে। পূর্বে যাহা নিষ্প্রয়োজন বলিয়া বোধ হইত, পরে তাহা আবশ্যকীয় বোধ হয়।

• যখন হৃদয় কোনো বিশেষভাবে আচ্ছন্ন হয়, স্নেহ, কি শোক, কি ভয়, কি যাহাই হউক, তাহার সমুদায়াংশ কখনও ব্যক্ত হয় না। কতকটা ব্যক্ত হয়, কতকটা হয় না। যাহা ব্যক্ত হয়, তাহা ক্রিয়ার দ্বারা বা কথা দ্বারা। সেই ক্রিয়া এবং কথা নাটককারের সামগ্রী, যেটুকু অব্যক্ত থাকে, সেইটুকুই গীতিকাব্য প্রণেতার সামগ্রী।

• সংসার সমুদ্রে স্ত্রীলোক তরণী স্বরূপ।

Bankim Chandra Chatterjee | বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বাণী

• সন তারিখ শূন্য যে ইতিহাস, সে পথশূন্য অরণ্যতুল্য।

.সামান্য কণ্ঠভঙ্গীতেও মনকে চঞ্চল করে। কণ্ঠভঙ্গীর সেই চমোকই সঙ্গীত। কণ্ঠভঙ্গী মনের ভাবের চিহ্ন। অতএব সঙ্গীতের দ্বারা সকল প্রকার মনের ভাব প্রকাশ করা যায়।

• যাহার যাহাতে অভাব, তাহার তাহাতেই লোভ।

• পশুবৃত্তির জন্য বিবাহ ব্যবস্থা দেবতা করেন নাই। পশুদিগের বিবাহ নাই। কেবল ধর্মার্থেই বিবাহ।

• পরকাল নাই মান, কেবল ইহকালকে সার করিয়াও সম্পূর্ণরূপে ধার্মিক হওয়া যায়।

• প্রেমবুদ্ধি বৃত্তিমূলক। প্রণয়াস্পদ ব্যক্তির গুণ-সকল যখন বুদ্ধিবৃত্তি দ্বারা পরিগৃহীত হয়, হৃদয় সেই সকল গুণে মুগ্ধ হইয়া তৎ প্রতি সমাকৃষ্ট এবং সঞ্চালিত হয়, তখন সেই গুণাধারের সংসর্গে লিপ্সা এবং তৎপ্রতি ভক্তি জন্মে। ইহার ফল, সহৃদয়তা এবং পরিণামে আত্মবিস্মৃতি ও বিসর্জন। এই যথার্থ প্রণয়।

• দুঃখময় জীবনে দুঃখ আছে বলিয়া তাহাকে অসার বলিব না। কিন্তু অসার বলি এইজন্যে যে দুঃখই দুঃখের পরিণাম-তাহার পর আর কিছু নাই।

• ধনের ধার বড়ো ধার।

• সস্তা খরিদের অবিরত চেষ্টাকে মনুষ্য জীবন বলে।

• কেহ একা থাকিও না।

• কবিরা জগতের শ্রেষ্ঠ শিক্ষাদাতা, এবং উপকার কর্তা এবং সর্বাপেক্ষা অধিক মানসিক শক্তিসম্পন্ন। কি প্রকারে কাব্যকারেরা এই মহৎ কার্য সিদ্ধি করেন? যাহা সকলের চিত্তকে আকৃষ্ট করিবে, তাহার সৃষ্টির দ্বারা। সকলের চিত্তকে আকৃষ্ট করে, সে কি? সৌন্দর্য, অতএব সৌন্দর্য অর্থ কেবল বাহ্য প্রকৃতির বা শারীরিক সৌন্দর্য নহে। সকল প্রকারের সৌন্দর্য বুঝিতে হইবেক।

।। জীবন দর্শন ও জীবনবোধ নিয়ে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় উক্তি।।

★ “আত্মোপকারীকে বনবাসে বিসর্জন করা তাহাদিগের প্রকৃতি, তাহারা চিরকাল আত্মোপকারীকে বনবাস দিবে-কিন্তু যত বার বনবাসিত করুক না কেন, পরের কাষ্ঠাহরণ করা যাহার স্বভাব, সে পুনর্বার পরের কাষ্ঠাহরণে যাইবে। তুমি অধম-তাই বলিয়া আমি উত্তম না হইব কেন?” (‘কপালকুণ্ডলা’ উপন্যাস)

★ “মরিলে যদি রণজয় হইত, তবে মরিতাম। বৃথা মৃত্যু বীরের ধর্ম নহে।” (‘আনন্দমঠ’ উপন্যাস)

★ “পাহাড় যত নিকট দেখায়, তত নিকট নয়।” (‘রাজসিংহ, ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ, অষ্টম খণ্ড)

★ “ওপারে যে যন্ত্রণার কথা শুনিতে পাও, সে আমরা এই পার হইতে সঙ্গে করিয়া লইয়া যাই। আমাদের এ জন্মের সঞ্চিত পাপগুলি আমরা গাঁটরি বাঁধিয়া, বৈতরিণীর সেই ক্ষেয়ারীর ক্ষেয়ায় বোঝাই দিয়া, বিনা কড়িতে পার করিয়া লইয়া যাই। পরে যমালয়ে গিয়া গাঁটরি খুলিয়া ধীরে সুস্থে সেই ঐশ্বর্য্য একা একা ভোগ করি।”(‘সীতারাম, একাদশ পরিচ্ছেদ, প্রথম খণ্ড’)

★ “মীরজাফর গুলি খায় ও ঘুমায়। ইংরেজ টাকা আদায় করে ও ডেসপাচ লেখে। বাঙ্গালি কাঁদে আর উৎসন্ন যায়।”(‘আনন্দমঠ’ উপন্যাস)

★ “মনুষ্যের সুখ মনুষ্যত্বে, এই মনুষ্যত্ব সকল বৃত্তিগুলির উপযুক্ত স্ফূর্তি, পরিণতি ও সামঞ্জস্যের সাপেক্ষ। মনুষ্যের সমুদয় শক্তিগুলিকে চারি শ্রেণীতে বিভক্ত করা গেল: ১. শারীরিকী, ২. জ্ঞানার্জনী, ৩. কার্যকারিনী, ৪. চিত্তরঞ্জিনী। এই চতুর্বিদ বৃত্তির উপযুক্ত স্ফূর্তি, পরিণতি ও সামঞ্জস্যই মনুষ্যত্ব।”

★ “যদি মনে এমন বুঝিতে পারেন যে, লিখিয়া দেশের বা মনুষ্যজাতির কিছু মঙ্গল সাধন করিতে পারেন, অথবা সৌন্দর্য সৃষ্টি করিতেপারেন, তবে অবশ্য লিখিবেন। যাঁহারা অন্য উদ্দেশ্যে লেখেন, তাঁহাদিগকে যাত্রাওয়ালা প্রভৃতি নীচ ব্যবসায়ীদিগের সঙ্গে গণ্য করা যাইতে পারে।”

জীবন দর্শন যত উন্নত, গভীর তিনি পেয়েছেন পাঠকের মনে শীর্ষস্থান। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সময়ে তাঁর চেয়ে জীবনবোধ সম্পন্ন সাহিত্যিক ছিল না বললেই চলে। যার উদাহরণ আমরা তাঁর করা চয়ন এবং বাণী থেকে পেয়েছি।

★ “জ্ঞানে মনুষ্য মাত্রেরই তুল্যাধিকার। যদি সে সর্বজনের প্রাপ্য ধনকে তুমি এমত দুরূহ ভাষায় নিবদ্ধ রাখ যে, কেবল যে কয়জন পরিশ্রম করিয়া সেই ভাষা শিখিয়াছে তাহারা ভিন্ন আর কেহ তাহা পাইতে পারিবে না, তবে তুমি অধিকাংশ মানুষকে তাহাদিগের স্বত্ব হইতে বঞ্চিত করিলে। তুমি সেখানে বঞ্চক মাত্র।”

★ যাহাতে সাধারণের উন্নতি নাই, তাহাতে কাহারই উন্নতি সিদ্ধ হইতে পারে না।… অনেকে বিবেচনা করেন যে, বালকের পাঠোপযোগী অতি সরল কথা ভিন্ন কিছুই সাধারণের বোধগম্য বা পাঠ্য হয় না। এই বিশ্বাসের উপর নির্ভর করিয়া যাঁহারা লিখিতে প্রবৃত্ত হয়েন, তাহাদিগের রচনা কেহই পড়ে না। যাহা সুশিক্ষিত ব্যক্তির পাঠোপযোগী নহে, তাহা কেহই পড়িবে না, যাহা উত্তম তাহা সকলেই পড়িতে চাহে, যে না- বুঝিতে পারে, সে বুঝিতে যত্ন করে।”

★ “কাব্যগ্রন্থ মনুষ্যজীবনের কঠিন সমস্যা সকলের ব্যাখ্যা মাত্র, যিনি একথা না বুঝিয়া, একথা বিস্মৃত হইয়া, কেবল গল্পের অনুরোধে উপন্যাস পাঠে নিযুক্ত হয়েন, তিনি উপন্যাস পাঠ না করিলেই বাধিত হই।”

★ “কাব্যের উদ্দেশ্যে নীতিজ্ঞান নহে; কিন্তু নীতিজ্ঞানের যে উদ্দেশ্য, কাব্যেরও সেই উদ্দেশ্য। কাব্যের গৌণ উদ্দেশ্য মনুষ্যের চিত্তোতকর্ষ সাধন-চিত্তশুদ্ধি জনন। কবিরা জগতের শিক্ষাদাতা, কিন্তু নীতিব্যাখ্যার দ্বারা তাঁহারা শিক্ষা দেন না। কথাচ্ছলেও নীতিশিক্ষা দেন না। তাঁহারা সৌন্দর্যের চরমোতকর্ষ সৃজনের দ্বারা চিত্তশুদ্ধি বিধান করেন। এই সৌন্দর্যের চরমোতকর্ষের সৃষ্টি কাব্যের মুখ্য উদ্দেশ্য।”

★ “সাহিত্যের আলোচনায় সুখ আছে বটে, কিন্তু যে সুখ তোমার উদ্দেশ্য এবং প্রাপ্য হওয়া উচিত, সাহিত্যের সুখ তাহার ক্ষুদ্রাংশ মাত্র।”

★ “যে কণ্ঠ হইতে কাতরের জন্য কাতরোক্তি নিঃসৃত না হইল, সে কণ্ঠ রুদ্ধ হউক। যে লেখনি আর্তের উপকারার্থে না-লিখিল, সে লেখনি নিষ্ফলা হউক।”

★ “সাহিত্যও ধর্ম ছাড়া নহে। কেননা, সাহিত্য সত্যমূলক। যাহা সত্য, তাহা ধর্ম। যদি এমন কুসাহিত্য থাকে যে তাহা অসত্যমূলক ও অধর্মময়, তবে তাহার পাঠে দুরাত্মা বা বিকৃতরুচি পাঠক ভিন্ন কেহ সুখী হয় না।”

★ “গ্রন্থ পাঠ করিয়া পাঠক যে সুখ লাভ বা জ্ঞান লাভ করিবেন, তাহা অধিকতর স্পষ্টীকৃত বা তাহার বৃদ্ধি করা, গ্রন্থকার যেখানে ভ্রান্ত হইয়াছেন সেখানে ভ্রম সংশোধন করা, যে গ্রন্থে সাধারণের অনিষ্ট হইতে পারে সেই গ্রন্থের অনিষ্টকারিতা সাধারণের নিকট প্রতীয়মান করা -এইগুলি সমালোচনার উদ্দেশ্য।”

Also Read: Love Messages in Bengali

আপনি কি সরকারি চাকরির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন? তাহলে নিচের লিংকে ক্লিক করুন

Siksakul

raateralo.com

Leave a Comment