Best Popular Bengali Poems by Mrinal Ganguly 2026 l মৃণাল গাঙ্গুলির সেরা জনপ্রিয় বাংলা কবিতা

By Shishir Shil

Updated on:

Best Popular Bengali Poems by Mrinal Ganguly 2026 by www.raateralo.com

Best Popular Bengali Poems by Mrinal Ganguly 2026: আধুনিক বাংলা কবিতার জগতে যাঁরা অনুভূতির অন্ধকার, অস্তিত্বের সংকট, প্রেম–বিচ্ছেদ আর মানুষের ভেতরের দ্বন্দ্বকে নির্ভীক ভাষায় তুলে ধরেছেন, তাঁদের মধ্যে মৃণাল গাঙ্গুলী এক স্বতন্ত্র নাম। এই ব্লগে আমরা তুলে ধরেছি Best Popular Bengali Poems by Mrinal Ganguly—যেখানে পাবেন তাঁর সেরা ও জনপ্রিয় কবিতাগুলোর সংকলন। Mrinal Ganguly Bengali poems মানেই শুধু শব্দের সৌন্দর্য নয়, বরং গভীর মানসিক ক্ষত, নিঃসঙ্গতার দর্শন, প্রেমের অপূর্ণতা ও জীবনের নিষ্ঠুর বাস্তবতার মুখোমুখি দাঁড়ানো।

এই Mrinal Ganguly poems collection–এ রয়েছে আধুনিক ও সমকালীন বাংলা কবিতার এক শক্তিশালী ধারা—Modern Bengali poems, Contemporary Bengali poetry এবং Bengali free verse poems–এর অনন্য মেলবন্ধন। এখানে মিলবে Emotional Bengali poems, Love poems in Bengali, Sad Bengali poems, আবার একই সঙ্গে Existential Bengali poems, Dark Bengali poetryPsychological Bengali poems, যা পাঠককে নিজের ভেতরের অচেনা জায়গায় নিয়ে যায়।

যাঁরা খোঁজেন Bengali poems on loneliness, love and loss, pain and separation, কিংবা inner conflict, identity crisis, exile and isolation—এই ব্লগ তাঁদের জন্য এক গভীর সাহিত্যিক অভিজ্ঞতা। মৃণাল গাঙ্গুলির কবিতা শুধুই পড়ার জন্য নয়, অনুভব করার জন্য; যেখানে জীবন ও যন্ত্রণার কবিতা এক হয়ে ওঠে।

আপনি যদি Bengali poetry for literature lovers, best Bengali poetry online, কিংবা literary Bengali poems খুঁজে থাকেন, তবে এই ব্লগ আপনার জন্যই। এখানে পাবেন মৃণাল গাঙ্গুলির সেরা জনপ্রিয় কবিতা, আধুনিক বাংলা কবিতার শক্তিশালী উচ্চারণ, আর শব্দের ভেতর লুকিয়ে থাকা এক নিঃশব্দ বিপ্লব।

আসতে দেরি হয়েছে

আমার দেরি হয়েছে আসতে—
কারণ চাহিদা আমাকে আটকে রেখেছিল
ফাঁসির দড়ির মতো অদৃশ্য প্রতিশ্রুতিতে।
আমি তো আগেই আসতে চেয়েছিলাম—
হৃদয়ে প্রেমের সুগন্ধ নিয়ে,
তোমার নাম ধরে উন্মত্ত আর্তনাদে।
আমি আসতে চেয়েছিলাম
দু’শো বছর আগেই।

পোড়া পাঁজরের ফাঁক দিয়ে
তোমাকে শেষবারের মতো জড়িয়ে ধরতে
আমি অসংখ্যবার আসতে চেয়েছি।

কিন্তু—
দেরি হয়েছে আসতে।

মৃত্যুরা যেমন আঁকড়ে ধরে,
আমি সেভাবেই আসতে চেয়েছিলাম—
দগ্ধ নক্ষত্রের মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে।
তবু দেরি হয়েছে।
তবু—আমি এসেছি।

বুকপকেটে অসংখ্য দুশ্চিন্তা,
চিরকালীন শূন্যতার হিমেল সীলমোহর নিয়ে
এই প্রথমবার আমি এসেছি।

এখন আমার চোখে ঘুম নেই,
কথায় রক্ত নেই—
অথচ বুকের ভেতর
এক মৃতপ্রায় শব্দের কান্না,
যেন সমুদ্রগর্ভে ডুবে থাকা
একটি কফিনের দীর্ঘশ্বাস।

আসলে তুমিই ঠিক ছিলে—
“ভালোবাসা অপেক্ষা করে না,
ভালোবাসা অন্য কাউকে জন্ম দেয়।”

তবুও আমি এসেছি—
সব দেরি নিয়ে,
সমস্ত পোড়ানো চিঠি নিয়ে।

তবে জানি—
আমার দেরি হয়েছে আসতে,
কিন্তু তুমি আর এসো না।

একটি কবিতার জন্য

আমি শব্দের শিরা চিরে দেখি—
অক্ষরগুলো নিস্তেজ পড়ে থাকে,
কোনো এক পুরনো ব্যাকরণে আটকে যায় তাদের শ্বাস।
নির্বাক বাক্যরা ধুলো জমায়
অভিধানের নিশ্বাসহীন খাঁচায়।

আমি একে একে ভেঙে ফেলি সব নিয়ম।
শব্দের মেরুদণ্ড টেনে ছিঁড়ে দিই
নিয়মের বেড়াজাল।
আমার কবিতারা বুনো হাওয়ার মতো দৌড়ায়—
তাই যে কবিতা জন্ম নেয় নির্বিকার, রক্তহীন,
তার ধমনিতে আমি ঢেলে দিই জ্বলন্ত সীসা।

আমি কোনো অক্ষর সাজাই না—
অক্ষররাই আমাকে ছিন্নভিন্ন করে।
তাদের তীক্ষ্ণ, ধারালো প্রান্তে
কেটে যায় ভাষা,
গড়িয়ে পড়ে অনুভূতির নিরবধি রক্ত।

আমি কবিতার হাড়গোড় ভাঙি নিরন্তর,
কসাইয়ের টেবিলে অস্ত্র চালাই—
শিরায় শিরায় ছড়িয়ে পড়ে উপমার বিষ,
নির্যাস গড়ায় কলমের শিরায়।
রক্তের নেশায় মত্ত
আমার ফুটন্ত চোখ মেখে নেয় কবিতার ছাই।

আমি বহুবার কবিতার কঙ্কাল তুলে দেখেছি।
একটি কবিতার জন্য
আমি কোনো আইন মানি না।
শব্দের মাংস ছিঁড়ে আনি নগ্ন প্রতিধ্বনি—
যেখানে কবিতা মানে
অরাজক শাসকের বুকে
দগদগে, কথা বলা এক ক্ষত।

নিজেকে দেখা হয়নি

মুগ্ধ চোখে শুধু তোমাকেই দেখে গেলাম—
মুখমণ্ডলে জমে থাকা জোৎস্না,
চৈত্রের সন্ধ্যাবেলা,
পলাশ আর মধ্যদুপুর।

সেই একুশের যুদ্ধের পর,
ক্ষয়িষ্ণু প্রহরের ধুলো মেখে
তোমার মুখের দিকে তাকিয়ে
কাটিয়ে দিলাম আমার শিশুকাল,
আমার যৌবন।
তারপর বছর গড়াল—
হেমন্তের শীর্ণ ধুলোয়
আমার আত্মা ঝরে গেল।
তবুও তোমাকে দেখার লোভে
একটিবারও নিজেকে দেখা হলো না।

ঝর্ণার কলধ্বনি,
দিগন্তজোড়া সর্ষেক্ষেত,
বাঁশবনের অন্ধকারে ঘুমিয়ে থাকা
নিঝুম রাত্রি—
আর সদ্যফোটা শিউলির মতো
উজ্জ্বল তোমার চোখ।
গোপনে আরও কত কিছুই না দেখলাম,
কিন্তু কখনো
নিজের চামড়া উল্টে দেখা হয়নি।

তোমাকে দেখতে দেখতে
আমার চোখে এখন কালশিটে,
শিরায় শিরায় ঘুণপোকার বাসা,
হাড়ের সন্ধিগুলোতে ধরেছে মরচে।
চুলের মধ্যে বাসা বেঁধেছে
পরিত্যক্ত রাতের শূন্যতা।

শুধু তোমাকে দেখার লোভে
কখন, কোথায়, কীভাবে
নিজেকে শেষ করে ফেলেছি—
তা দেখা হয়নি।

মৃণাল গাঙ্গুলী

কেবল আমি

আমি ছাড়া আর কেউ নেই।
ঘরের ভেতর আমি বসে আছি,
আর দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে আছি
আমিই—
আমার নিঃশ্বাসে কেবল আমি।

এখন আর কিছু শুনি না।
আমার অতিরিক্ত ‘আমি’-তে
আমি বধির হয়ে গেছি।

আয়নার সামনে দাঁড়ালে
আমি আমাকে দেখতে পাই না।
দু’জনেই ভান করি—
চোখ, চুল, কান
সবকিছু ভীষণ অচেনা।
তবু সব আমারই,
কারণ আমার আর কেউ নেই।

তবু দরজায় কড়া নাড়লে
আমি বলি—
“ভেতরে এসো।”
কারণ
ভয় লাগে।

মৃণাল গাঙ্গুলী

আমি কবিতা হতে চাই

আমি একটি কবিতা হতে চাই।
আমার শব্দেরা আগুনের মতো জ্বলবে—
প্রতিটি শব্দ বিদ্রোহের শিখা হয়ে
ফেটে পড়বে,
আর বিরামচিহ্নগুলো হবে
দগদগে ক্ষত।

হ্যাঁ, আমি সেই কবিতা হতে চাই—
যার অন্তরালে লেখা থাকবে
না-পাওয়ার হাহাকার,
প্রেমের অন্ধ আকুতি,
আর শোষিত বুকের
লুকিয়ে থাকা আগুন।

আমার প্রতিটি ছত্র
মাটি আর মানুষের ঘামের গন্ধ বহন করবে।
পড়তে গিয়ে থমকে যেতে হবে—
চোখে জমে উঠবে জল।
আর কোনো এক ক্লান্ত সন্ধ্যায়
কবি আমাকে বুকের কাছে টেনে নেবেন
অনন্ত স্নেহে।

আমাকে শুনতে
জনতার ভিড় জমবে।
লোকেরা পড়বে—
আর বুকের ভেতর
ফলতে থাকা শব্দগুলো
বারবার ফিরে আসবে,
ঠিক যেমন শরীরে জ্বর এলে
ফিরে আসে
মায়ের মুখের
মুগ্ধ করা লালনগীতি।

মৃণাল গাঙ্গুলী

ঘৃণা

আয়নার সামনে দাঁড়াই—
বা শূন্য দেয়ালে নিস্পলক তাকিয়ে থাকি।
কোথাও কোনো প্রতিবিম্ব নেই,
শুধু একটি ছেঁড়া ছায়ার কঙ্কাল।

আমার মুখটা যেন
কেউ ছুরি দিয়ে খোদাই করেছে।
চোখের গহ্বরে লেপ্টে আছে
দুর্গন্ধে ভরা গাঢ় পুঁজ।
আমি আঙুল চেটে দেখি—
লবণের স্বাদ বিষ হয়ে গেছে।

আসলে আমি কোনো মানুষ নই।
শুকনো গাছের ঝরে-পড়া পাতার মতো
আমার গায়ে গিজগিজ করে
অনুতাপের পোকা।
হাড়ের গুহায় ঝুলে থাকে
মাকড়সার বিষাক্ত লালা,
শিরায় শিরায় দৌড়ায়
আত্মগ্লানির ইঁদুর।
আর কপালের ব্রণে ব্রণে
অবাস্তব ভাগ্য।

যেদিন হৃদয়ের শিলালিপি থেকে
আত্মপরিচয় পেয়েছি,
সেদিন থেকেই নিজেকে খুঁজি না।
আমি নিজেই নিজেকে নষ্ট করি,
খুঁটে খুঁটে খাই।
বিদ্রোহী রাত নামলে
আমার নখগুলো
শরীরের চামড়া আঁচড়ে
রক্ত চুষে নেয়—
ভেঙে দেয় সমস্ত আলো।

সত্যিই—
এতটা অন্ধকার কি কোথাও আছে?
আমার বুকের ভেতর যেমন
এক অন্ধ কূপ,
অতলে জ্বলে ওঠে নির্বাক বহ্নি।
দগ্ধ হচ্ছি আমি—
আমার নাম,
আমার পরিচয়,
আর চিরকালের কোনঠাসা স্বভাব।

এখন খুব ঘৃণা হয়।
সমস্ত শিরা-উপশিরা ছিঁড়ে দেখি—
কোথাও রক্ত নেই।

শুধু অকালে উথলে ওঠা
আঁধি-বর্ষার মতো
ফেনিয়ে ওঠা ঘৃণা—
দুকূল ভাসিয়ে নিয়ে যায়
অনন্ত দুর্ভিক্ষের দিকে।

মৃণাল গাঙ্গুলী

তোমাকে কখনো লিখিনি

আজ সব কবিতা পড়ে দেখলাম—
তোমাকে কোথাও লিখিনি।

যতবার কলম ছুঁয়েছে কাগজের বুকে,
ততবার শব্দেরা ঝরে গেছে বাতাসের কাছে।
তোমার নামের প্রথম অক্ষর লিখতে গিয়ে
আঙুল বারবার কেঁপে উঠেছে।
তুমি রয়ে গেছো অলিখিত—
অজানা,
শব্দের বাইরের কোনো অনন্ত জগতে।

আমি প্রেম লিখেছি,
ব্যথা লিখেছি,
শহরের নিঃসঙ্গ বিকেল লিখেছি।
জলভেজা শাড়ির নরম গন্ধ,
অচেনা রাতের দীর্ঘশ্বাস—সবই লিখেছি।
কিন্তু তোমাকে?
না,
তোমাকে কখনো লিখিনি।

তোমার চোখের গভীরতা,
তোমার কণ্ঠের অন্ধকার,
সকালবেলার কফিতে লেগে থাকা
তোমার নীরব ছোঁয়া—
সবই কবিতা হতে চেয়েছিল।
কিন্তু প্রতিবার
আমি নিজেকেই টেনে ধরেছি।

কারণ তোমাকে শব্দে বাঁধা
মানে ছিল—
এক অনন্ত অস্তিত্বকে
ক্ষুদ্র করে ফেলা।
আমি তা পারিনি।

তাই আজও
আমি শুধু তাকিয়ে দেখি—
শব্দেরা তোমাকে ছুঁতে এসে
পথ হারিয়ে ফেলে।
আর আমি
এক বুক শূন্যতা নিয়ে
লিখে যাই।

মৃণাল গাঙ্গুলী

নির্বাসন

একটা জীবন আমি একাই কাটিয়ে দিতে পারি—
হিমালয়ের বরফে কবর খুঁড়ে,
অথবা আটলান্টিসের ডুবন্ত নগরীর
চূর্ণস্মৃতিতে,
নির্বিকার এক অনাথ প্রেতের মতো।

কিংবা তুষের আগুনে
ছাই হয়ে যাওয়া
গলিত অশ্বথামা।

কেউ ডাকবে না,
কেউ ছোঁবে না।
আমার অস্তিত্ব শুধু ইতিহাসে লেখা থাকবে—
কোনো ভাঙা পিরামিডের
গোপন শিলালিপিতে।

আমি উড়তে থাকবো,
প্রতিরাতে,
প্রতিটা যুদ্ধের পর—
শহরের উলঙ্গ বাতিস্তম্ভের মাথায়,
তারপর এক পাণ্ডুলিপির মতো
ধুলো হয়ে মিশে যাবো বাতাসে।

হ্যাঁ,
একটা জীবন আমি এমনই কাটিয়ে দিতে পারি—
তামার গন্ধ মাখা প্রাচীন মুদ্রার মতো
মাটির নিচে শুয়ে থেকে,
কোনো পরিত্যক্ত খনির গহ্বরে,
অন্ধকারের ভেতর
সাপের খোলস হয়ে।

খেয়ে না-খেয়ে,
শুয়ে না-শুয়ে,
ভুলে না-ভুলে,

অথবা!

এক বুক শূন্যতা নিয়ে—
সমুদ্রের একাকীত্বে
মিশে যেতে পারি
একলা নাবিকের মতো।

হৃদয়দহন

কী আশ্চর্য রকম পেয়েছিলাম তোমায়—
হাত বাড়ালেই মুছে যাওয়া
জলছবির মতো
তুমি ছিলে প্রতিটি মুহূর্তে।

পরমাণুর আঘাতে মুছে যাওয়া হিরোসিমা—
যেমন দেখেছিল
তার বুকে লুটিয়ে থাকা
করুণ মুখগুলো,
তুমিও তেমন
ধ্বংস করার আগে
আমাকে মুগ্ধ করেছিলে।

আমার জিভে এখনো লেগে আছে
তোমার উচ্চারণ,
যেন নির্দয় বিষের মতো
মিহি স্বাদ—
আমি তা বারবার
পান করছি।

এখন ঠিক মনে পড়ে না
ঠিক কীভাবে চুম্বন করতাম,
তবুও ঠোঁটের চৌকাঠে
তুমি তুমি নিয়ে পড়ে আছে
সেই নীলাভ সব
বিষের গুঁড়ো।

আসলে তুমি যাওনি,
কেবল বিদায় নিয়েছ,
আর আমি থেকে গেছি—
যেমন মরুভূমিতে
পথভুলে পথিক
নিজেকে রৌদ্রসমাধী দেয়,
ঠিক সেভাবেই
বিস্ফোরণে মরতে চেয়ে—
থেকে গিয়েছি
এক বুক
বিষের গুঁড়ো নিয়ে।

তুমি নেই

তুমি নেই।
ছুঁয়ে যাওয়া চোখের মায়া মুছে দেখেছি—
তুমি কোথাও নেই,
শুধু ফাঁকা বাতাসে
তোমার নামে
একটা পুরোনো প্রতিধ্বনি।

ঠান্ডা হাওয়া চারদিক থেকে
তোমার পচে যাওয়ার গন্ধ
নিয়ে আসে।

স্মৃতির ভাঙা দেয়ালে
শ্যাওলার মতো
লেগে থাকা মুখ,
ঘষে তুলতে গেলে
নোখের ভেতর
ঢুকে যায়।

আসলে তোমার স্মৃতি এখন—
একটা নোনা কুয়াশার মতো,
নিজেকে দেখতে গিয়ে
ভাঙা আয়নায়
অনেকবার হাত কাটিয়েছি,
আর সেই রক্তগুলো
তোমাকে ভেবে কুড়োতে গিয়ে
দেখেছি—
তুমি যতটা না আছো
তার চেয়ে
অনেক বেশি নেই।

আসলে তোমাকে ভেবে
আমি যা কিছু কুড়িয়েছি—
ছেঁড়া শব্দ,
ভেঙে যাওয়া প্রতিশ্রুতি,
অপূর্ণ বিকেলের
অস্পষ্ট দীর্ঘশ্বাস,
তার কোনোটাই
তুমি নও।

তুমি নেই!
যেমন পুরোনো বইয়ের ভাঁজে
লুকিয়ে থাকা ফুলগুলো
আর থাকে না—
শুধু
একটা দাগ
রয়ে যায়।

— মৃণাল গাঙ্গুলী

তোমার কথা বলাই হলোনা

তোমার কথা বলাই হলোনা…
একটা দীর্ঘ জীবন
প্রায় শেষের মুখে,
অবহেলায়
খেয়ে না-খেয়ে
অথবা শুয়ে থেকে!
কাটিয়ে দিলাম
অনন্ত যৌবন।

অনেকবার মুখোমুখি বসেও—
তোমার কথা
কখনো বলতে পারিনি,
সময় শুধু
পরীক্ষা নিয়েছে বারবার,
শহরের জট পাকানো
রাস্তাঘাটগুলো
গিলে খেয়েছে
আমাদের অটল বিশ্বাসকে,
আর আমরা
দাঁড়িয়ে থেকেছি
নীরব দর্শক হয়ে।

হয়তো তখন
আমার চোখে
প্রশ্ন জন্মেছিল
কিংবা
তোমার চোখে
জন্মেছিল
বিদায়।

তাই এখন
আমি একা একাই থাকি!
খুব অন্ধকারে
তোমার নাম
উচ্চারণ করলে
বুকের ভেতর
কিছু ভেঙে পড়ে,
মনে হয়
কতই না লিখে দিলাম,
বন্ধুদের ডেকে ডেকে
তোমার কথা
কত শুনিয়েছি!

ভাবতে থাকি
সবাই জানে,
সবাই আলোচনা করে,
গোপনে
হয়তো আমাকে
না জানিয়েই
লোকেরা
তোমার কথা
এ’কান-ও’কান করে।

তারপর
খাতা খুলে
শব্দ সাজিয়ে দেখি—
কোনো শব্দই
আর কবিতা হয়ে
উঠতে চায় না।

— মৃণাল গাঙ্গুলী


আরও পড়ুন : বাংলা নতুন অনুগল্প – ” জীবনসঙ্গীনি” II বাংলা নতুন অনুগল্প – ” গোপন ক্রাশ”

সরকারি চাকরির পরীক্ষা প্রস্তুতি এখন ঘরে বসেই করুন www.siksakul.com এর সাহায্যে।

Shishir Shil

Leave a Comment