Bengali Romantic Story Anuradhar Sinthir Sindoor 2026 l বাংলা রোমান্টিক গল্প – অনুরাধার সিঁথির সিঁদুর

By raateralo.com

Published on:

নতুন ভালোবাসার গল্প পাঠকের হৃদয় ছুঁয়ে যায় বারবার। বাংলা রোমান্টিক সাহিত্যের একটি অনন্য সংযোজন “অনুরাধার সিঁথির সিঁদুর”—একটি গল্প, যা শুধু প্রেম নয়, অনুভূতি, দায়িত্ব, বন্ধন এবং আত্মিক টানের কথা বলে। এই বাংলা প্রেমের গল্পটি ২০২৬ সালের নতুন প্রজন্মের পাঠকের জন্য যেমন আধুনিক, তেমনি রয়ে গেছে চিরায়ত বাঙালিয়ানা প্রেমের আবেশ।

এই হৃদয়স্পর্শী বাংলা গল্পে রয়েছে এক নারীর জীবনের সূক্ষ্ম টানাপোড়েন, সিঁথির সিঁদুরে লুকিয়ে থাকা সম্পর্কের গভীরতা, আর অনুরাধার নিঃশব্দ আত্মত্যাগ। যারা Bangla premer golpo, emotional bangla love story, bengali romantic fiction কিংবা bangla couple story পড়তে ভালোবাসেন, তাদের জন্য এই গল্পটি হবে একটি অনন্য অভিজ্ঞতা।

আসুন, হারিয়ে যাই অনুরাধা ও প্রেমের সেই পথে, যেখানে সিঁথির সিঁদুর শুধু একটি চিহ্ন নয়, বরং একটি প্রতিজ্ঞা—ভালোবাসার, অপেক্ষার, আর অনন্ত বিশ্বাসের।

এই ব্লগে আপনি পাবেন traditional bengali love story-এর স্বাদ, নতুন রোমান্টিক গল্প-এর উত্তেজনা, আর ভালোবাসার সেই নিঃশব্দ শব্দগুলো, যা কখনো উচ্চারণ হয় না, কেবল অনুভবে বাজে। 🌸💌

বাংলা রোমান্টিক গল্প – অনুরাধার সিঁথির সিঁদুর

পড়ন্ত বিকেল শরতের স্বচ্ছ নীল আকাশে হলুদ রঙের ভাঙ্গা ভাঙ্গা মেঘের ভেলা। দিগন্তের সীমানাজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে সিঁদুরের রঙ। সমস্ত বাগানজুড়ে গোটা কয়েক শিউলি, মধুমালতি, হাসনাহেনা আর থোকায় থোকায় ফুটে আছে জুঁই। বাগানের ঠিক মধ্যখানে ছোট একটি টেবিল আর দু’টি বেতের চেয়ার। অনুরাধা হয়তো সেটা আগে থেকেই আমার জন্য বরাদ্ধ করে রেখেছিল। বিজয়া ষষ্ঠী ক্রমাগত এগুচ্ছে প্রতিমা বিসর্জনের দিকে তাই দশমীর রেখায় অনেকটা টান পড়ে আছে। চারিদিকে সাজসাজ রব, অনুরাধার কপালের সিঁদুরও যেন সেই প্রতিক বহন করে চলেছে। আমার নিমন্ত্রণ ছিলো দশমীর সন্ধ্যায় প্রসাদ খাওয়ার। অনুরাধাও কথা দিয়েছিলো শতব্যস্তার মধ্যেও সন্ধ্যার কয়েকটি মুহুর্ত আমার জন্য নির্জন রাখবে। সেই থেকে সময় স্রোতের অসংখ্য ঢেউ এসে আমাকে ক্রমাগত ভাসিয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছে পূরণো স্মৃতির ভেলায়।

আজ বিজয়া দশমী কতো প্রতিক্ষার মধ্যে যে দুপুর গড়িয়ে বিকেল ক্রমাগত বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হলো, কতোবার হৃদয়ের শব্দে চমকে উঠলাম তার হিসেব নেই। প্রতিক্ষিত সন্ধ্যায় আমি অনুরাধার সাথে নির্জন হতে চলেছি। প্রতিক্ষিত সময়ের পিছুটানে এক পা দু’পা করে এগিয়ে গেলাম তার বাড়ির দিকে। বাড়ির মূল দরজা খোলা, হয়তো পূজোর দিন বলে সবার আসা-যাওয়া তাই এমনটি হবে। দরজায় খটখট করে দু’বার শব্দ করতেই অনুরাধা বেড়িয়ে এলো। বহু প্রতিক্ষতি শুভক্ষণে কাঙ্খিত প্রিয়জন আকস্মিক দৃষ্টির সামনে এলে বুকের ভেতরটা যেমন ধড়ফড় করে ওঠে, আবেগে চোখ ছলছল হয়ে ওঠে, মস্তিস্ক হঠাত কিংকর্তব্যবিমুখ হয়ে পরে অনুরাধারও ঠিক তাই হলো। অনেক দিন পর নানা রকম চড়াই-উতড়াই পেরিয়ে আজ আবার আমাদের দেখা, সেটিও আবার বিজয়া দশমীর শুভলগ্নে।

সে নিজেকে বিশ্বাসই করতে পাচ্ছে না, সেটা সত্যি আমি কি না। হতভম্বের মতো ছলছল চোখে, আমার চোখে চোখ রেখে নির্বাক দাঁড়িয়ে রইলো। ভেতরে ভেতরে আমিও ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ি কারণ অনুরাধার চোখের জল আমার কাছে পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর জিনিস। কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমার হাতটা ধরে বাড়ির ভেতরে নিয়ে গেলো। ড্রইংরুমে আমার গা ঘেসে বসে অপলক দৃষ্টিতে চেয়ে রইলো। আমার বুঝতে আর বাকি রইলো না যে, সামান্যতম সময়ের ব্যাধানে হয়তো তার চোখে শ্রাবণের বাবিধারা নেমে আসবে। প্রসঙ্গতঃ একটু সহজ হবার জন্য আমি বললাম, প্রতিমা বিসর্জনের সাথে তোমার শাড়িটার কি আশ্চর্য মিল।

বাড়িতে আর কেউ আছে বলে মনে হলো না। মাসিমা থাকলে এতোক্ষণে এসে আমার পাশে বসতো। আমি প্রশ্ন করার আগেই সে বললো- ধ্রুব, চলো বাগানে যাওয়া যাক। নিঃশ্বঙ্গ আকাশ প্রদীপ নাটমন্দিরের চূড়ায় টিমটিমে আলো, চদ্রিমার অবারিত জোছনার হাতছানি। মা’ দূর্গার বির্সজণের রাত, হয়তো তাই প্রকৃতিটাও একটু ঝিমিয়ে পড়েছে। আমাকে একটু অন্য মনঃস্ক দেখে, সোজাসুজি সেদিকে তাকিয়ে খুব সন্তর্পণে একটা চাঁপা নিঃশ্বাস ফেললো অনুরাধা। তারপর খুব কাছে এসে আমার হাতটা ধরে বাগানের দিকে নিয়ে গেলো। গোধুলির আবছা আবছা আলো ক্রমশ সরে গিয়ে চাঁদের আলো সে জায়গাটা দখল করে ফেলেছে।

মন্দিরে তখনও পূজোর ঘন্টা বাজছে। চারিদিকে নীরবতা কোথাও কোনো সাড়া-শব্দ নেই। মাঝে মাঝে ঝিঁঝি পোকাগুলো দলবেঁধে একই সাথে ডেকে উঠছে। দূরের বাঁশ বাগানে কোনো উঁচু গাছের ডালে বসে নিঃসঙ্গ পাখিটা তার স্বজাতি গলায় বউ কথা কও, বউ কথা কও বলে-অবিরাম ডেকেই চলেছে। জানি না সে পাখিটা আমার মতো ভাগ্যহত কি না। পূর্বাকাশে কি ঝলমল করে উঠছে দশমী তিথির চাঁদ, বাঁধভাঙ্গা জোছনায় ভরিয়ে দিচ্ছে ধরণীর বুক। বাগানের উঁচু গাছের ভিতর দিয়ে একটু একটু করে লাল হয়ে সরে যাচ্ছে চাঁদটা। দুটো বনবিড়াল উচ্ছসিত আলিঙ্গনে একে অপরের উপর ঝাপিয়ে পড়ছে, তাদের কেউ একটু দুরে পালিয়ে যাচ্ছে আর অপর সঙ্গীটি আবার এক দৌড়ে গিয়ে তার অভিমান ভাঙ্গার জন্য মুখে মুখ লাগিয়ে আদর করছে।

অনুরাধা আমার নীরবতার দিকে একটা অর্থপূর্ণ দৃস্টিতে তাকিয়ে আছে। আমি সহজ হতে না হতেই সে বলে ফেললো- ধ্রুব, দেখ, কি অপূর্ব জোছনা, যেন হারিয়ে যাচ্ছে র্পথিবী, চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ছে তার রূপমাধুরী। প্রকৃতি যেন বিলিয়ে দিচ্ছে তার উজার করা ভালোবাসা। আমি অনুরাধার উচ্ছ¡সিত দুটি চোখের গভীরতম অতলে তন্ময় হয়ে অনেক্ষণ ধরে তাকিয়ে থাকি। বুঝতে পারি না তার স্বচ্ছ দুটি আঁখির মধ্যখানে গিরি প্রস্রবণ কুণ্ডের স্থির নীল জলের অতলে সবুজ শেওলাজাত কোন মায়া লুকিয়ে আছে। তার কপালখানি দশমী তিথির চন্দ্রের মতো চাপা বর্ণের স্থুল কোন অযাচিত কষ্ট খোদাইকৃত।

ধবধবে সাদা শিউলি ফুলের পাপড়ির মতো তার প্রতিটি অঙ্গ যেন সদ্য কোন প্রসাধনী প্রক্রিয়া থেকে টেনে বের করা হয়েছে। হাল্কা লিপস্টিক পড়া ঠোঁট দুটো টসটসে রসালো আঙ্গুরের মতো কোমলতায় কালের কোন নীলাভ আভা মাখিয়ে দেয়া হয়েছে। সাত জন্মে এমন লাবন্যময়ী ললনার অপরূপ অবয়ব প্রত্যক্ষ হয়েছে কিনা আমার জানা নেই। অনুরাধার হেসে ওঠে এই ধ্রুব, কি দেখছো এমন করে? না, মানে দেখেছি তোমার মুখের রেখা অবিচল, বাওরের স্থির জলরাশির বুকে কোন লাবণ্যময়ী পুষ্পমঞ্জরীর সমারোহ।

আমি দাঁড়িয়ে আছি প্রকৃতির নির্জনতায়। আকাশের রঙ ঘননীল তার নিচে শুধু তুমি আর আমি। আরে ধ্যাৎ, কি যে বলো আবোল তাবোল। একটু বসো, আমি চা নিয়ে আসছি। অনুরাধা সব দ্বিধাদ্ব›দ্ব ভুলে গিয়ে চায়ের কাপে ঠোঁট ছুঁয়ে গুনগুন সুরে গাইতেছিল-কবিগুরুর সেই বিখ্যাত গানের কলি- আমার পরাণ যাহা চায়, তুমি তাই, তুমি তাই গো.. আমারো পরান যাহা চায় অযাচিতভাবে হঠাত করেই সে আমার কয়েকটা আঙ্গুল স্পর্শ করে বলে- ধ্রুব, মনুষ্য হৃদয়ের জঠিলতম জায়গাটি-যেখানে বসবাস করে জীবনের অনাকাঙ্খিত দুঃখ কষ্ট জ্বালা যন্ত্রণা। আজ তুমি বেড়িয়ে আস সেখান থেকে।

আর কোন দিন ফিরবে না সেখানে। কষ্টের পাÐুলিপি পড়ে থাক, আর তাকে নিয়ে কোন মাতামাতি নেই, নেই কোন জঠিল হিসেব নিকেশ। অনুরাধা, জানা-অজানার মধ্যখানে যে বিশ্বাসের জন্ম হয়, তা কখনো পথ হারায় না, গন্তব্যে পৌছানোর পথ খুঁজে নেয় হৃদয়ের আলোকবর্তিকায়। আমার কল্পনার কেন্দ্র বিন্দুতে চিরন্তন সত্যের অস্তিত্বকে আমি তোমার মাঝে খুঁজে পেয়েছি।

এর চেয়ে বড় কোন সত্য নেই। ধ্রুব, আমার প্রতিটি নিঃশ্বাসের আমি কেবলই তোমারই অস্তিত্বকে খুঁজে পাই। আমার শরীরের প্রতিটি রক্তকণা কেবল তোমার নামেই সঞ্চালন করে। আমার হৃদপিণ্ডের প্রতিটি স্পন্দনে কেবলই তোমার নাম ধ্বনিত হয়। তোমাকে ছাড়া আমার বেঁচে থাকাটা নিঃশ্বিবাসহীন নির্জীব মনে হয়। তোমার অবর্তমানে ফেলে আসা স্মৃতিগুলো ভয়ঙ্কর শকুনের মতো আমার সম্ভাবনাময় তাজা মুহূর্তগুলোকে খুবলে খুবলে খায়। তুমি দু’চোখের কি ইন্দ্রজাল মেলে রাখ, আমি ছুটতেও পারি না, ফেরাতেও পারি না নিজেকে।

অনুরাধা, জীবনের নরম সন্ধ্যাগুলো যদি গোধূলির অন্ধকারে কখনো ঝাপসা হয়ে আসে, তোমার কষ্টবিলাসী মনকে আর কখনো কষ্টের ভেলায় ভাসিও না। হৃদয়ের গোপন কষ্টগুলোকে বুকের পাঁজরে আটকে না রেখে আমার ভালোবাসার অবশিষ্ট বিশ্বাসটুকু দিয়ে ভ্যালা বানিয়ে ভাসিয়ে দিও। হৃদয় নামক বিশাল জগতে দীর্ঘ নিঃশ্বাসের উষ্ণ বাতাসে ভাসতে ভাসতে একদিন ঠিকই পৌঁছে যাবে আমার কাছে। দোহাই তোমার, এই বিশ্বাসটুকু রেখো।

ধ্রুব, নৈঃশব্দের স্বপ্নপুরীতে পাহাড় সমান ধ্যানস্থ প্রিয় যুবকের নিস্তব্ধ বুকে আমি মাথা রাখার স্বপ্ন দেখি, সেই নৈঃশব্দের এক অপূর্ব ভাষা আছে। কারণ তুমি যে নিরানব্বই ভাগ পুরুষের দলে পড়োনা। অন্য পুরুষ শুধু শরীর চায়, এই নশ্বর শরীরটার উপরই যতো লোভ ওদের তুমি তা নও। কতদিন হয়ে গেল আমাদের বন্ধুত্ব হবার অথচ আমার শরীর নিয়ে তোমার কোন কৌতুহল নেই। জানো অনুরাধা, পুরুষের শরীর বড় নিষ্ঠুর, শরীর যখন তার নিজস্ব দাবি নিয়ে হাজির হয় তখন পুরুষ বড় অসহায় হয়ে পড়ে। কিন্তু তোমার শরীর ছুঁয়ে আমাদের সম্পর্ককে আমি সাধারণ করতে চাইনি। তুমি যখন বাথরুমের অনাবৃত শরীরে আয়নার সামনে দাঁড়াও তখন জেনো ঐ শরীরের উপর যাবতীয় অধিকার তোমার স্বামীর, আমার অধিকার আধখানা মনের উপর যা তুমি স্বেচ্ছায় তুলে দিয়েছো আমার হাতে।

তবে তোমার যোগ্য স্বামী হয়ে উঠবো যেদিন, সেদিন তুমি নৈঃশব্দে স্বপ্নপুরীর প্রিয় যুবকের নিস্তব্ধ বুকে মাথা রেখ। হাহাহা কবি, তুমি হয়তো জানোনা, আমি মরে গেছি অনেকদিন আগে। আমি আর বাঁচতে চাই না, তুমি কেন যে বারবার সোনার কাঠি স্পর্শ করে আমাকে বাঁচিয়ে তোলো। তোমাকে বাঁচতেই হবে অনুরাধা, বাঁচতে হবে শুধু আমার জন্য। আমার হাতে রয়েছে একগোছা শিউলি ফুল যার অপূর্ব মাতাল করা সুগন্ধ, তুমি তার ঘ্রাণ নাও আর নিজেকে বাঁচিয়ে রাখ। ফুল নয়, ফুল নয় ধ্রুব, আমি তোমার শরীরের মাতাল করা পুরুষালি ঘ্রাণ পাচ্ছি..হে। অনুরাধা, তোমাকে নিয়ে আমার বড় ভয় হয় জানো!

কেন, কেন ধ্রুব? মানুষ বড় অসহায়, মানুষ নিজেকেও নিজে চিনতে পারে না। দুজন মানুষের হৃদয়ের তন্ত্রী যখন এক লয়ে ঝংকৃত হয় তা যেমন আনন্দের তেমনই যন্ত্রণার। অনুরাধা, তোমার সঙ্গে দেখা করিনি ঠিকই কিন্তু আমরা এগিয়ে গেছি অনেকদূর। আমাদের বন্ধুত্ব দিগন্ত ছুঁয়ে গেছে। এই ধ্রুব, চলো- আজ না তোমার পূঁজোর লাড়– খাওয়ার নিমন্ত্রণ ছিলো আমার সাথে?

ওঃ হ্যাঃ তাইতো! সত্যি- একদম ভুলে যেতে বসেছি অনুরাধা। অনুরাধা, টেবিলে একগোছা জুঁই আগে থেকেই সাজিয়ে রেখেছিল। কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই সে জুঁইফুলের গোছাটি আমার হাতে দিয়ে সে পিছনে গিয়ে দাঁড়ালো আলোর ভয়ে। তবুও আমি নির্বোধের মতো একটার পর একটা লাড়– খেয়েই চলেছি। অবশেষে তার হাতটা ধরে আমার পাশে বসাতে গিয়ে দেখি-তার সিঁথিতে দেয়া টকটকে লাল সিঁদুর যেন তাকে আরও অপরূপ করে তুলেছে।

সে নিজে থেকে কিছু না বললেও আমি আমার জবাব পেলাম, তার বিরুদ্বে কোন অভিযোগ পড়েছে কিনা জানি না। শুধু জানি আমার বুকের উপর তার দীর্ঘশ্বাসের বাতাস ঝড়ের বেগে আঘাত করছে আর বৃষ্টির চিহ্নরূপে ক’ফোটা গরম অশ্রু এসে আমার বুক ভিজিয়ে দিচ্ছে।

আমি কোন কিছু বলে ওঠার আগেই অনুরাধা আমার মুখ চেপে ধরে বলতে শুরু করলো- ধ্রুব, ধর্মমতে যার সাথে আমার বিয়ে হয়েছে, ঠাকুরের দিব্বি করে বলছি- তার কথা আমার একটি বারের জন্যও মনে পড়ে না, তাহলে কি এটা ব্যভিচার? সত্যি যদি এটা ব্যভিচার হয়, তবে কেন একটা প্রাপ্ত বয়স্ক পূর্ণযৌবনা মেয়েকে তার জীবনের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে বিয়ে নামের পুতুল পুতুল খেলায় সাজিয়ে রাখে? সেটা কি ব্যভিচার নয়? সেটা কেমন ধর্ম? যেখানে ধর্মের দেয়াল তুলে দু’টো পরিপূর্ণ জীবনকে, জীবন্ত লাস বানিয়ে সবাই দূরে দাঁড়িয়ে খেলা দেখে। ধ্রুব, -এরূপ হাজার প্রশ্নের হিল্লোল প্রতিটি মুহুর্তে আমার শরীরের প্রতিটি শিরায় উপশিরায়, ধমনির ভাঁজে ভাঁজে তোলপার করে ওঠে। আমার শরীরের রাগ এতো কম কেন জানি না।

হয়তো রাগটা শরীরের কোন একটা গোপন জায়গায় গিয়ে জমা হয়ে থাকে, শরীর দিয়ে সেটা অনুভব করতে পারি না। মনে মনে বলি- ধ্রুব, তোমাকে আমি ভালোবাসি- শুধুই ভালোবাসি- খুব ভালোবাসি। ধ্রুব, তোমার অনুরাধা যে সুখের বাসরে চোখের জ¦লে বালিশ ভিজাচ্ছে, তা শুধু তোমারই দেয়া ভালোবাসার প্রতিদান। এ যেন এক অদ্ভুত রকমের পাগলামি, অদ্ভুত রকমের শিহরণ জাগা অনুভুতি।

Read More:

raateralo.com

Leave a Comment