📘 দেবদাস উপন্যাসের বিখ্যাত উক্তি ও সংলাপ | Saratchandra’s Devdas Famous Quotes
‘দেবদাস’ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত এক কালজয়ী প্রেমের উপন্যাস। এটি তাঁর সাহিত্য জীবনের প্রথমদিককার সৃষ্টি, যার রচনার সমাপ্তি ঘটে ১৯০০ সালে, যদিও প্রকাশিত হয় ১৭ বছর পর, ১৯১৭ সালে। উপন্যাসটি নিয়ে লেখকের মনে ছিল দ্বিধা ও সংকোচ—এমনকি শরৎচন্দ্র নিজেই স্বীকার করেছেন, “দেবদাস” তিনি লিখেছিলেন মাতাল অবস্থায়। এক চিঠিতে তিনি লেখেন, “ওই বইটা একেবারে মাতাল হইয়া বোতল খাইয়া লেখা।”
দেবদাস, পার্বতী (পারো) এবং চন্দ্রমুখীর এই ত্রিভুজ প্রেমের গল্পে বেদনা, আত্মত্যাগ ও অতৃপ্ত ভালোবাসার গভীর চিত্রায়ণ রয়েছে। সাহিত্যিক শৈলীতে তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন প্রেমের ব্যর্থতা, সমাজের কঠোরতা এবং এক অসহায় প্রেমিকের করুণ পরিণতি।
এই ব্লগ পোস্টে আমরা তুলে ধরেছি দেবদাস উপন্যাসের কিছু স্মরণীয় উক্তি ও সংলাপ, যা আজও পাঠকের হৃদয়ে দাগ কাটে।
চলুন, ফিরে দেখা যাক প্রেম, অভিমান ও বিষাদের সেই চিরন্তন শব্দগুলো…
Top 20 Famous Quotes from Devdas Novel
কোন বড়লোকের কাছে কোনো ছোট মানুষ হতে পারে না।
প্রার্থনা করিও, আর যাহাই হোক, যেন তাহার মতো এমন করিয়া কাহারও মৃত্যু না ঘটে। মরণে ক্ষতি নাই, কিন্তু সে সময়ে যেন একটি স্নেহ-করস্পর্শ তাহার ললাটে পৌঁছে—যেন একটিও করুণার্দ্র স্নেহময় মুখ দেখিতে দেখিতে এ জীবনের অন্ত হয়। মরিবার সময় যেন কাহারও এক ফোঁটা চোখের জল দেখিয়া সে মরিতে পারে।
যেন একটিও করুণাদ্র’ স্নেহময় মুখ দেখিতে দেখিতে এ জীবনের অন্ত হয়। মরিবার সময় যেন কাহারো এক ফোটা চোখের জল দেখিয়া সে মরিতে পারে।
জোর করিয়া প্রতিজ্ঞা করানোটা কি ভালো… না তাতে বিশেষ ভালো আছে? আজকের প্রতিজ্ঞা কাল হয়তো থাকবে না।
দেবদাস নিজের পাতলা জামার খানিকটা ছিঁড়িয়া লইয়া জলে ভিজাইয়া পার্বতীর কপালের উপর বাঁধিতে বাঁধিতে কহিল, ভয় কি পারু!!এ আঘাত শীঘ্র সেরে যাবে-শুধু দাগ থাকিবে।
যে যথার্থ ভালোবাসে সে সহ্য করিতে পারে। শুধু অন্তরে ভালোবেসেও যে কত সুখ, কত তৃপ্তি,-যে টের পায় সে নিরর্থক সংসারের মাঝে দুঃখ-অশান্তি আনতে চায় না।।
লোকে থিয়েটার করে; মুখে চুনকালি মাখে, চোর হয়, ভিক্ষা করে, রাজা হয়, রানী হয়, ভালোবাসে, কত ভালোবাসার কথা বলে, কতো কাঁদে, ঠিক যেন সব সত্য।
সমস্ত ভাবনারে একটা ধরন আছে। যাহার আশা আছে, সে এক রকম করিয়া ভাবে, আর যাহার আশা নেই, সে অন্য রকম করিয়া ভাবে।
শিক্ষা, বিদ্যা, বুদ্ধি, জ্ঞান, উন্নতি যা কিছু সব সুখের জন্য। যেমন করেই দেখো না কেন, নিজের সুখ বাড়ানো ছাড়া এ সকল আর কিছুই নয়।।
মানুষ দুঃসময়ের মাঝে যখন;- আশা-নিরাশার কুল-কিনারা দেখিতে পায় না, তখন দুর্বল মন বড় ভয়ে ভয়ে আসার দিকটায় চাপিয়া ধরিয়া থাকে। যেটা হইলে তাহার মঙ্গল সেইটাই আশা করে। ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় সেই দিক পানেই নিত্যান্ত উৎসুক নয়নে চাহিয়া থাকে।।
সহিষ্ণুতার প্রতিমূর্তি; লাঞ্ছনা, গঞ্জনা, অপমান, অত্যাচার, উপদ্রব, স্ত্রীলোকে যে কত সইতে পারে।
ভালোবাসা এক, আর রূপের মোহ আর এক; এ দু’য়ে বড়ো গোল বাধে! আর পুরুষেই বেশি গোল বাধায়া।
চঞ্চল আর অস্থির চিত্ত বলে স্ত্রীলোকের যত অখ্যাতি, ততখানি অখ্যাতির যোগ্য তারা নহে।
সতর্ক এবং অভিজ্ঞ লোেকদিগের স্বভাব এই যে, তাহারা চক্ষুর নিমেষে কোন দ্রব্যের দোষ গুণ সম্বন্ধে দৃঢ় মতামত প্রকাশ করে না।
সবটুকুর বিচার না করিয়া ‘সবটুকুর ধারণা করিয়া লয় না; দুটো দিক দেখিয়া চারিদিকের কথা কহে না।
কিন্তু আরেক রকমের লোক আছে, যাহারা ঠিক ইহার উল্টা। কোন জিনিস বেশিক্ষণ ধরিয়া চিন্তা করিবার ধৈর্য ইহাদের নাই, কোন কিছু হাতে পড়িবা মাত্র স্থির করিয়া লহে ভালো কি মন্দ।।
তালাইয়া দেখিবার পরিশ্রম টুকু ইহারা বিশ্বাসের জোরে চালাইয়া লয়।
মাঝরাতে পার্বতী দেবদাসের শোবার ঘরে এলে দেবদাস ভিতু হয়ে বলে; ভূতের ভয় না করুক কিন্তু মানুষের ভয়তো করে! নির্বিকার পারু জবাব দেয় দেবদা নদীতে কত জল, এত জলেও কি আমার কলঙ্ক চাপা পড়বে না!
সত্যি কি পারু আমাকে একেবারেই ভুলে গেছিস! কবে তোর উপর রাগ করেছিলাম? কবে মাফ করিনি?
✅ দেবদাস উপন্যাসের বিখ্যাত ২০টি উক্তি ও লাইন
১. “ভালোবাসার মানুষটা কাছেই থাকে, তবুও হৃদয়টা খালি লাগে।”
২. “আমি তাকে ভালোবাসি, কিন্তু তাকে পেতে চাই না — কারণ সে আমার নয়।”
৩. “প্রেমে অহংকার থাকা চলে না, আর আমি অহংকারই করেছি।”
৪. “ভালোবাসা মানেই পাওয়া নয় — কখনো কখনো ছেড়ে যাওয়াও ভালোবাসা।”
৫. “তুমি যাকে ভালোবাসো, সে যদি তোমায় না বোঝে — তবে সে ভালোবাসার যোগ্য নয়।”
৬. “আমি শুধু তোমার চোখে একবার তাকাতে চেয়েছিলাম — তাতেই আমার জীবন পূর্ণ হয়ে যেত।”
৭. “ভেতরের কান্না কারো চোখে পড়ে না, পড়ে শুধু ঠোঁটের হাসি।”
৮. “একজন পুরুষ যখন কাঁদে, তখন তার হৃদয়টা মরেই যায়।”
৯. “তুমি চলে যাও, আমি থাকবো আমার ভালোবাসা নিয়ে — নিঃশব্দে।”
১০. “যার প্রেম সত্য, সে কখনো প্রতিশোধ নেয় না — শুধু নীরবে সহ্য করে।”
১১. “ভালোবাসার দুঃখ মানুষকে অনেক বড় করে তোলে।”
১২. “তোমাকে ভালোবেসে নিজের অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলেছি।”
১৩. “আমি তোমার কাছ থেকে কিছু চাইনি — শুধু একটু ঠাঁই চেয়েছিলাম।”
১৪. “ভালোবাসা যদি বোঝার মানুষ না পায়, তবে তা নিঃশেষ হয়ে যায়।”
১৫. “আমার দুঃখের সাথেই আমি এক হয়ে গেছি, এখন দুঃখই আমার সঙ্গী।”
১৬. “জীবনের শেষ মুহূর্তেও তার মুখটাই চোখে ভেসে উঠল।”
১৭. “ভালোবাসার স্মৃতি মানুষকে ধ্বংস করে দেয়, আবার বাঁচিয়েও রাখে।”
১৮. “আমার শেষ নিঃশ্বাসেও তোমার নাম থাকবে।”
১৯. “পার্থনা করেছিলাম তুমি সুখী হও, আমি না হয় দুঃখের সঙ্গী হই।”
২০. “যে ভালোবাসা কখনো বলা হয়নি, সেই ভালোবাসাই সবচেয়ে গভীর।”
এই উক্তিগুলো বাংলা সাহিত্যপ্রেমীদের হৃদয়ে বিশেষ স্থান রাখে। এগুলো আপনি Instagram/Facebook ক্যাপশন, স্টেটাস, অথবা সাহিত্যচর্চার অংশ হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।
আরো পড়ুনঃ পরিণীতা উপন্যাসের বিখ্যাত উক্তি