কিছু না-বলা কথা

By raateralo.com

Published on:

কিছু না-বলা কথা

কিছু না-বলা কথা: পর্ব ১

  • দীপঙ্কর ও কাকলির গল্প

কলেজের আঙিনায় আজ যেন এক অদ্ভুত নিস্তব্ধতা। শেষ ক্লাসের ঘণ্টা বাজানোর পর সবাই চলে গেছে, কিন্তু দীপঙ্কর দাঁড়িয়ে আছে বটগাছের তলায়। গাছটার নিচে সেই চিরচেনা জায়গাটি, যেখানে বহুবার একসাথে বসে ছিল তারা—দীপঙ্কর ও কাকলি। আজ সেই জায়গাটা কেমন শুনসান, একদম নির্জন।

প্রথম বার কাকলি যখন দীপঙ্করের কাছে এসেছিল, তখন সে জানত না, এই সম্পর্কটা তাকে কতটা বদলে দেবে। কলেজের প্রথম দিন। দীপঙ্কর যেমন একা ছিল, কাকলি ছিল তেমনি। দুই বন্ধু খুঁজে বের করেছিল একে অপরকে। কিন্তু সে বন্ধুত্ব কতটা গভীর হবে, সেটা কাকলি নিজেও ভাবেনি।

“তুমি তো জানো না, দীপঙ্কর।” কাকলি একদিন বলেছিল, “আমি কিছুতেই এখানে থাকতে পারব না। কিছু একটা করতে হবে, আমাকে পড়াশোনা করতে হবে। কলকাতা… আমি চলে যাব।”

কাকলি তখন যা বলেছিল, তা কেবল একটা সিদ্ধান্ত ছিল। কিন্তু দীপঙ্কর বুঝতে পারছিল, সেটা ছিল কিছু না-বলা কথার শুরু। কিছু শূন্যতা, কিছু অসম্পূর্ণতা। কাকলি হয়তো জানত না, তার কথাগুলো দীপঙ্করের মনে কেমন চিহ্ন রেখে গিয়েছিল।

কলেজের শেষ দিন ছিল আজ। কাকলি একটিবারও ফিরে তাকায়নি। দীপঙ্করের কাছে আসেনি, কিছু বলতেও হয়নি। তারা জানত, এই বন্ধুত্বের মতো গভীর কিছু কখনও বলা যায় না। তা হয়তো বলে যায় না। কাকলি তার পক্ষে এটুকু বলেই চলে গিয়েছিল, “ভালো থেকো, দীপঙ্কর।”

দীপঙ্কর জানে, সে যা বলতে চেয়েছিল—তা কখনও বলা হবে না। কাকলি হয়তো সেগুলো বুঝবে, কিন্তু যখনই সে ফিরবে, তার ফিরে আসা কখনোই আগের মতো হবে না। সময়ের সঙ্গে সব বদলে যায়। শুধু কিছু অনুভূতি চিরকাল থাকে, যা কখনও মুখে বলা হয় না।

আজ কাকলির চলে যাওয়ার পর ছ’মাস কেটে গেছে। কলেজের আঙিনায় বসে দীপঙ্কর ঠিক তেমনি ভাবনায় ডুবে গেছে। সে জানে, কাকলি তার জীবনে ছিল, থাকবেই। হয়তো তাদের সম্পর্কের কোনো পরিচয় হবে না, কিন্তু এই না-বলা কথাগুলো কখনো মুছে যাবে না।

বটগাছের নিচে দাঁড়িয়ে দীপঙ্কর আবার চিঠিটা বের করল, কাকলির লেখা সেই চিঠি। “আমি তোকে ভুলব না,” এই বাক্যটা বারবার চোখের সামনে ভাসছিল। দীপঙ্করের পকেটে থাকা এই চিঠি, যা সে এখনও পড়ে না। জানে, সে যা লিখতে চেয়েছিল—তা কাকলিকে কখনও লেখা হয়নি। কিন্তু কাকলি জানে, হৃদয়ের গভীরে থাকা ওই কথাগুলো—কখনো বলার প্রয়োজন ছিল না।

একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে দীপঙ্কর চিঠিটা আবার পকেটে রেখে দিল। তার মনে, কিছু না-বলা কথা অনেক বেশি অর্থপূর্ণ।

কয়েক মাস পরে, কলকাতার ব্যস্ত জীবন থেকে ফিরে এসে কাকলি আবার সেই পুরনো শহরে, দীপঙ্করের শহরে। কলেজের দিনগুলো যে তার মনে কোনো দাগ ফেলেছে, সে বুঝতে পেরেছে। তবে, তার জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু হওয়ার পর, সব কিছু বদলে গেছে। পড়াশোনা, ক্যারিয়ার, আর কলকাতার তাড়া—এসব মিলে একসময় তার একটুও সময় হয়ে ওঠেনি দীপঙ্করের জন্য। তবে আজ, কিছু একটা মনে হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল, পুরনো দিনগুলোর সেই আনন্দ আর শান্তি—তাকে আবার ডেকে আনছে।

কলেজ ক্যাম্পাসে এসে প্রথমে সে সরাসরি দীপঙ্করের কাছে যায়নি। এক মুহূর্ত, একটুও সাহস হচ্ছিল না। কেমন যেন ভয় লাগছিল, সে জানত না কেন। কতগুলো দিন কাটানোর পর, সেই ভালোবাসা যে এত গভীরে প্রবাহিত হয়ে গেছে, তা অনুভব করতে হবে—এটা সে জানত।

কাকলি আজও জানত, দীপঙ্করকে বলা হয়নি সে কী অনুভব করে। কিন্তু সেই ভালোবাসা কি আর বলা যায়? কি আর বলা সম্ভব, যখন সে নিজেই তার আবেগের দিক থেকে অন্ধকারে চলে গিয়েছিল। দীপঙ্কর অবশ্য বদলাতে পারেনি। তার মধ্যে কোন পরিবর্তন ছিল না। সে এখনো কলেজের সেই বটগাছের নিচে দাঁড়িয়ে থাকে, যেখানে একদিন কাকলি দাঁড়িয়ে ছিল।

কাকলি কিছুটা দ্বিধান্বিত হয়ে তার মোবাইল ফোনটা হাতে নিয়ে দীপঙ্করের নম্বর ডায়াল করল। ফোন রিং হতে শুরু করল। একে একে, রিংয়ের শব্দ কানের মধ্যে প্রবাহিত হচ্ছিল।

“হ্যালো?” দীপঙ্করের কণ্ঠ।

“দীপঙ্কর… এটা আমি, কাকলি।”

সঙ্গে সঙ্গেই দীপঙ্কর চুপ হয়ে গেল। তার মুখে কিছু শব্দ আসছিল না। কাকলি অনুভব করছিল, তার ভেতরেও কিছু একটা ছিল, যা তাকে বিরক্ত করছিল। তবে সে জানতো, তাদের গল্প শেষ হয়ে গেছে, তবুও, আজও কিছু না-বলা কথা রয়ে গেছে। একে অপরকে খুব কাছে পাওয়া, তারপর দূরে চলে যাওয়ার যন্ত্রণাটা অনেক বেশি কষ্টের ছিল।

“তুমি ফিরে এসেছো?” দীপঙ্কর অল্প গম্ভীর হয়ে বলল।

“হ্যাঁ… ফিরে এসেছি, দীপঙ্কর। কেবল তোমার সঙ্গে দেখা করতে চাইছিলাম।”

দীপঙ্কর কিছুক্ষণ চুপ থাকল, তার মনে নানা ভাবনা। শেষে সে বলল, “তুমি জানো, আমি এখানে ছিলাম। এখানে, তোমার জন্য।”

কাকলি আর কিছু বলল না, শুধু একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলল। তার মনে হয়েছিল, জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তটি এসেছে। সে যা চেয়েছিল, যা ভয় পেয়ে বলেছিল না, আজ সেই কথাগুলো বলার সময় এসেছে।

দীপঙ্কর জানত, কাকলি কখনো ফিরবে, কিন্তু কখনোই তারা সেই সম্পর্কের মধ্যে ফিরে যাবে না যা একসময় ছিল। তবে কাকলির ফিরে আসা, এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা। হয়তো এখন তারা কিছু না-বলা কথাগুলো মুখে বলে ফেলবে, কিন্তু সেগুলোও খুব বেশি কিছু বদলে দেবে না।

“তুমি কি কখনো বলবে না, কাকলি?” দীপঙ্কর তার সাদামাটা কণ্ঠে প্রশ্ন করল।

কাকলি মুচকি হেসে বলল, “কিছু না-বলা কথাই আমাদের জীবনের সবচেয়ে সুন্দর অংশ, দীপঙ্কর।”

কিছু সময় কেটে গেছে। দীপঙ্কর আর কাকলির মাঝে এখন একটা অদ্ভুত নিরবতা। একে অপরের সঙ্গে দেখা হচ্ছে, কিন্তু সেই আগের মতো মিলন—সে আর নেই। কাকলি জানত, দীপঙ্করের মধ্যে এখন আর কোনো আশা নেই। সে জানে, দীপঙ্কর শুধুই এক পাশে দাঁড়িয়ে থাকবে, তারই মতো। কিন্তু কাকলি নিজেকে ধরে রাখতে পারছিল না। ফিরে আসার পর, কিছু না-বলা কথা এখন আর তাকে সস্তুষ্টি দিতে পারছে না। সেই পুরনো অনুভূতিগুলো আবার মাথাচাড়া দিয়েছে।

অথচ, কাকলি জানত, দীপঙ্কর তার জীবনে তখনই একটা বড় অংশ হয়ে ওঠে, যখন সে নিজেকে সত্যি সত্যি জানত না। কলেজের প্রথম দিনগুলোর সেই সরলতা, কথা না বলেও একে অপরকে বুঝে ওঠা—
আজও সেই অনুভূতিগুলো কাকলির মনের গভীরে তাড়া দেয়। কিন্তু এই সময়ের ব্যবধান, তাদের মাঝে এত দূরত্ব, এসবই কি এই সম্পর্কের ভবিষ্যত নির্ধারণ করবে?

কাকলি একদিন দীপঙ্করের কাছে আসার সিদ্ধান্ত নিল। তার মনে হয়েছিল, একে অপরের দিকে একবার সত্যিই তাকানো দরকার। একবার সেই পুরনো সম্পর্কের দিকে ফিরে যাওয়ার সাহস জোগাতে হবে। কিন্তু কাকলি জানতো, এসব কোনো সহজ কাজ নয়। তাদের সম্পর্ক যে কখনো ঠিক পথে ছিল না, এটা দীপঙ্করও জানত।

এবার কাকলি সিদ্ধান্ত নিল, তাকে কিছু বলতে হবে। দীপঙ্করের কাছে গিয়ে বলতে হবে, যেসব কথা কখনো বলা হয়নি। সেসব কথাই হয়তো তাদের সম্পর্কের খোলস ভেঙে দিতে পারে।

“দীপঙ্কর, আমি জানি অনেক সময় চলে গেছে, কিন্তু… আমি বুঝতে পারছি, কিছু কথা বলা দরকার ছিল,” কাকলি সরাসরি দীপঙ্করের চোখে চোখ রেখে বলল।

দীপঙ্কর একটু চুপ করে রইল। তার চোখের মধ্যে কিছুই পড়তে পারছিল না কাকলি। কিছু সময়ের জন্য সে জানত না, এর পরে কী বলবে। তারপর তিনি ধীরে ধীরে উত্তর দিলেন, “তুমি জানো, কাকলি… আমি কখনও কিছু বলিনি, কিন্তু তোমার চলে যাওয়ার পর, অনেক কিছুই অনুভব করেছি। এমন কিছু, যা বলারও সুযোগ হয়নি। তবে এখন আর কিছু বলতে ইচ্ছে করে না।”

কাকলি একটু অবাক হয়ে দীপঙ্করের কথা শুনছিল। সে জানত, দীপঙ্কর হয়তো তার মতো অনুভব করছে না। কিন্তু তারপরও, অন্তর থেকে এক অস্পষ্ট অনুভূতি তাকে কষ্ট দিতে লাগল। “তুমি কি বিশ্বাস করো, দীপঙ্কর, যে আমাদের মাঝে কোনো কিছু না-বলা কথা না থাকলে, আমাদের সম্পর্কটা আসলে অস্থায়ী হয়ে যাবে?”

এবার দীপঙ্কর কিভাবে উত্তর দেবে, তা পরিষ্কার ছিল না। তার চোখে একটা অদ্ভুত দৃষ্টিভঙ্গি ছিল—যেমন তাকে কিছু বোঝানোর চেষ্টা করছিল, কিন্তু সেসব কিছুই সহজ নয়। তবে শেষ পর্যন্ত, দীপঙ্কর বলে উঠল, “আমাদের সম্পর্কের পথ কখনও সহজ ছিল না, কাকলি। কিন্তু, তুমি তো জানো, কিছু সম্পর্ক যে কখনো শেষ হয় না। তারা চুপ থাকে, কিন্তু তাদের উপস্থিতি বাঁচিয়ে রাখে।”

কাকলি, কিছুটা বুঝতে পেরে, একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলল। তার চোখে জল ছিল। “তাহলে, আমরা কি শেষ পর্যন্ত একে অপরের পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে পারব, দীপঙ্কর? আমাদের জীবনের গল্প, কি তবে কোনো মোড় নেবে?”

দীপঙ্কর একটু হাসল। এই হাসিটা কাকলির মনে একটু সান্ত্বনা এনে দিল। “কাকলি, কখনও কখনও সম্পর্কটা মুখ দিয়ে বলার চেয়ে, চুপ করে থাকলেও অনেক বেশি শক্তিশালী হয়ে ওঠে। এবং আমরা যেভাবে একে অপরকে অনুভব করি, সেটাই শেষ পর্যন্ত সবচেয়ে বড় কথা।”

কাকলি দীপঙ্করের কথা শুনে আবারো মুচকি হাসল। তাদের মধ্যে সব কিছু ঠিক থাকুক বা না থাকুক, তারা জানে, কিছু না-বলা কথাগুলোই তাদের সম্পর্কের শক্তি।

একটা দীর্ঘ সময় কাটানোর পর, দীপঙ্কর আর কাকলি বুঝতে পেরেছিল, কিছু সম্পর্ক কখনো বলতে হয় না। কিছু সম্পর্ক একে অপরকে অনুভব করেই চলতে থাকে। কলেজের দিনগুলোর সেই সরলতা আর মুক্তিযাপন, তাদের মধ্যে একটি অদৃশ্য বন্ধন তৈরি করেছে, যা কখনো ভাঙে না।

দীপঙ্কর আর কাকলি এখন আর সেই পুরনো কথাগুলো নিয়ে ব্যস্ত ছিল না। তারা জানত, দুজনের মাঝে যা ছিল, তা কোনো শব্দের মাধ্য দিয়ে প্রকাশ করা সম্ভব নয়। সেই চুপ থাকা মুহূর্ত, যেখানে কোনো কথা ছিল না, তা ছিল সবচেয়ে বেশি গভীর।

কাকলি এখন বুঝতে পেরেছিল, তাকে আর দীপঙ্করকে কোথাও গিয়ে কিছু করতে হবে না। তাদের সম্পর্ক এখন কিছু নতুন রূপ নিতে চলেছে। সম্পর্কের গভীরতা, অনুভূতির শক্তি—এসবই এখন তাদের কাছে মূল্যবান। সময় বদলে গেছে, কিন্তু তাদের সম্পর্কের মূল চেতনা একই ছিল।

একদিন দীপঙ্কর ও কাকলি এক জায়গায় দাঁড়িয়ে ছিল। আকাশের নিচে সূর্য ডুবছিল। কাকলি মুখে মুচকি হাসি নিয়ে বলল, “আমরা অনেক কিছু না-বলা কথা বলেছি, দীপঙ্কর। তবে এই যাত্রা তো শেষ হয়ে যায়নি, তাই না?”

দীপঙ্কর তার চোখে চোখ রেখে উত্তর দিল, “না, কাকলি। এই যাত্রা কখনো শেষ হয় না। সম্পর্কের যাত্রা একে অপরকে জানার, বুঝে নেওয়ার, আর কখনো না-বলা কথাগুলো অনুভব করার।”

কাকলি কাঁপা কাঁপা স্বরে বলল, “তাহলে, তুমি কি মনে করো, আমরা কখনো কিছু ভুল করতে পারব না?”

দীপঙ্কর শান্তভাবে বলল, “আমরা ভুল করেছি, তবে সব ভুল শুদ্ধি পাওয়ার সুযোগ থাকে। আর তুমি জানো, কাকলি, যে সম্পর্ক দুজন মানুষের মধ্যে সত্যি হয়, তা কোনো ভুলের মধ্যে হারিয়ে যায় না। আমরা একে অপরকে খুঁজে পেয়েছি, আমাদের সম্পর্ক শক্ত, এবং আমি জানি, এর পরেও আমরা একে অপরের পাশে থাকব।”

কাকলি চোখে জল এনে হাসল। তার মুখের অদৃশ্য দুঃখের ছাপ আর ছিল না। এতদিন ধরে যে কিছু না-বলা কথাগুলো তাকে কষ্ট দিচ্ছিল, আজ তা এক নতুন ভাবনায় পরিণত হয়েছে। দীপঙ্করের কথা যেন তার মনের সবচেয়ে অন্ধকার জায়গাটিকে আলোকিত করে দিল।

তারা দুজন একে অপরকে ভালোবাসে, তবে সে ভালোবাসা এখন আর কোনও শব্দের মধ্যে বাঁধা নেই। তারা জানে, সম্পর্কের মধ্যে কোনো সীমা থাকলে, তা কখনো পূর্ণতা পায় না। তাদের ভালোবাসা ছিল চিরকালীন—কোনো শর্ত ছাড়াই, শুধুমাত্র অনুভূতির ওপর ভিত্তি করে।

শেষ কথা: কিছু না-বলা কথা কখনো মনের গভীরে চলে যায়। তবে, সেই না-বলা কথাগুলোর মধ্যেও এক ধরনের শক্তি থাকে। দীপঙ্কর ও কাকলি জানে, তাদের সম্পর্ক একেবারে সম্পূর্ণ, যেখানে কোনো কথা বলা হয়নি, কিন্তু সমস্ত অনুভূতি প্রকাশিত হয়েছে। তাদের একে অপরকে অনুভব করা, সঠিক সময়ে চুপ থাকা—এটাই ছিল তাদের সবচেয়ে বড় শক্তি।

raateralo.com

Leave a Comment