Raater Alo

Popular Poems of Jibanananda Das 2024 l জীবনানন্দ দাশের জনপ্রিয় কবিতা

Popular Poems of Jibanananda Das 2024 l জীবনানন্দ দাশের জনপ্রিয় কবিতা

জীবনানন্দ দাশ বাংলা সাহিত্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও আধুনিকতম কবি। তাঁর কবিতাগুলো যেন প্রকৃতি, স্মৃতি, প্রেম, এবং মানবিক বেদনার এক চিরন্তন প্রতিচ্ছবি। জীবনানন্দ দাশের জনপ্রিয় কবিতাগুলো (Popular Poems of Jibanananda Das 2024 l জীবনানন্দ দাশের জনপ্রিয় কবিতা) সময়ের সাথে সাথে আরও প্রাসঙ্গিক হয়েছে, যা পাঠকের হৃদয়ে গভীরভাবে নাড়া দেয়। তাঁর কাব্যের বিমূর্ত ও অন্তর্লীন ভাবনা, যেমন ‘বনলতা সেন’, ‘আবার আসিবো ফিরে’, এবং ‘অবনী বাড়ি আছো’ আমাদের নিয়ে যায় এক স্বপ্নিল জগতে, যেখানে নিস্তব্ধতা ও নিঃসঙ্গতাই হয়ে ওঠে কবিতার মূল উপজীব্য।

Popular Poems of Jibanananda Das 2024 l জীবনানন্দ দাশের জনপ্রিয় কবিতা

কার্তিক ভোরে

কার্তিকের ভোরবেলা কবে 

চোখে মুখে চুলের ওপরে 

যে শিশির ঝরল তা 

শালিক ঝরাল ব’লে ঝরে 

আমলকি গাছ ছুঁয়ে তিনটি শালিক 

কার্তিকের রোদে আর জলে 

আমারি হৃদয় দিয়ে চেনা তিন নারীর মতন; 

সূর্য? না কি সূর্যের চপ্পলে 

পা গলিয়ে পৃথিবীতে এসে 

পৃথিবীর থেকে উড়ে যায় 

এ জীবনে আমি ঢের শালিক দেখেছি 

তবু সেই তিনজন শালিক কোথায়?

স্বপ্ন

পান্ডুলিপি কাছে রেখে ধূসর দীপের কাছে আমি
নিস্তব্ধ ছিলাম ব’সে;
শিশির পড়িতেছিলো ধীরে-ধীরে খ’সে;
নিমের শাখার থেকে একাকীতম কে পাখি নামি

উড়ে গেলো কুয়াশায়, — কুয়াশার থেকে দূর-কুয়াশায় আরো।
তাহারি পাখার হাওয়া প্রদীপ নিভায়ে গেলো বুঝি?
অন্ধকার হাৎড়ায়ে ধীরে-ধীরে দেশলাই খুঁজি;
যখন জ্বালিব আলো কার মুখ দেখা যাবে বলিতে কি পারো?

কার মুখ? —আমলকী শাখার পিছনে
শিঙের মত বাঁকা নীল চাঁদ একদিন দেখেছিলো তাহা;
এ-ধূসর পান্ডুলিপি একদিন দেখেছিলো, আহা,
সে-মুখ ধূসরতম আজ এই পৃথিবীর মনে।

তবু এই পৃথিবীর সব আলো একদিন নিভে গেলে পরে,
পৃথিবীর সব গল্প একদিন ফুরাবে যখন,
মানুষ র’বে না আর, র’বে শুধু মানুষের স্বপ্ন তখনঃ
সেই মুখ আর আমি র’বো সেই স্বপ্নের ভিতরে।

(মহাপৃথিবী, ১৯৪৪)

সূর্যতামসী

কোথাও পাখির শব্দ শুনি;
কোনো দিকে সমুদ্রের সুর;
কোথাও ভোরের বেলা র’য়ে গেছে – তবে।
অগণন মানুষের মৃত্যু হ’লে – অন্ধকারে জীবিত ও মৃতের হৃদয়
বিস্মিতের মতো চেয়ে আছে;
এ কোন সিন্ধুর সুর:
মরণের – জীবনের?
এ কি ভোর?
অনন্ত রাত্রির মতো মনে হয় তবু।
একটি রাত্রির ব্যথা সয়ে –
সময় কি অবশেষে এ-রকম ভোরবেলা হয়ে
আগামী রাতের কালপুরুষের শস্য বুকে ক’রে জেগে ওঠে?
কোথাও ডানার শব্দ শুনি;
কোন দিকে সমুদ্রের সুর –
দক্ষিণের দিকে,
উত্তরের দিকে,
পশ্চিমের পানে?

সৃজনের ভয়াবহ মানে;
তবু জীবনের বসন্তের মতন কল্যাণে
সূর্যালোকিত সব সিন্ধু-পাখিদের শব্দ শুনি;
ভোরের বদলে তবু সেইখানে রাত্রি করোজ্জ্বল
ভিয়েনা, টোকিও, রোম, মিউনিখ – তুমি?
সার্থবাহ, সার্থবাহ, ওইদিকে নীল
সমুদ্রের পরিবর্তে আটলাণ্টিক চার্টার নিখিল মরুভূমি!
বিলীন হয় না মায়ামৃগ – নিত্য দিকদর্শিন;
যা জেনেছে – যা শেখেনি –
সেই মহাশ্মশানের গর্ভাঙ্কে ধূপের মত জ্ব’লে
জাগে না কি হে জীবন – হে সাগর –
শকুন্ত-ক্রান্তির কলরোলে।

(সাতটি তারার তিমির, ১৯৪৮)

লোকেন বোসের জর্নাল

সুজাতাকে ভালোবাসতাম আমি — 

এখনো কি ভালোবাসি? 

সেটা অবসরে ভাববার কথা, 

অবসর তবু নেই; 

তবু একদিন হেমন্ত এলে অবকাশ পাওয়া যাবে 

এখন শেলফে চার্বাক ফ্রয়েড প্লেটো পাভলভ ভাবে 

সুজাতাকে আমি ভালোবাসি কি না। 

পুরোনো চিঠির ফাইল কিছু আছে: 

            সুজাতা লিখেছে আমার কাছে, 

বারো তেরো কুড়ি বছর আগের সে-সব কথা; 

            ফাইল নাড়া কি যে মিহি কেরানীর কাজ; 

            নাড়বো না আমি 

            নেড়ে কার কি লাভ; 

মনে হয় অমিতা সেনের সাথে সুবলের ভাব, 

            সুবলেরই শুধু? অবশ্য আমি তাকে 

মানে এই — অমিতা বলছি যাকে — 

        কিন্তু কথাটা থাক; 

        কিন্তু তবুও — 

আজকে হৃদয় পথিক নয়তো আর, 

নারী যদি মৃগতৃষ্ণার মতো — তবে 

এখন কি করে মন কারভান হবে। 

প্রৌঢ় হৃদয়, তুমি 

সেই সব মৃগতৃষ্ণিকাতলে ঈষৎ সিমুমে 

হয়তো কখনো বৈতাল মরুভুমি, 

হৃদয়, হৃদয় তুমি! 

তারপর তুমি নিজের ভিতরে ফিরে এসে তব চুপে 

মরীচিকা জয় করেছো বিনয়ী যে ভীষন নামরূপে 

সেখানে বালির সৎ নিরবতা ধূ ধূ 

প্রেম নয় তবু প্রমেরই মতন শুধু। 

অমিতা সেনকে সুবল কি ভালোবাসে? 

অমিতা নিজে কি তাকে? 

            অবসর মতো কথা ভাবা যাবে, 

            ঢের অবসর চাই; 

            দূর ব্রহ্মাণ্ডকে তিলে টেনে এনে সমাহিত হওয়া চাই 

            এখনি টেনিসে যেতে হবে তবু, 

            ফিরে এসে রাতে ক্লাবে; 

কখন সময় হবে। 

হেমন্তে ঘাসে নীল ফুল ফোঁটে — 

            হৃদয় কেন যে কাঁপে, 

‘ভালোবাসতাম’ — স্মৃতি — অঙ্গার — পাপে 

            তর্কিত কেন রয়েছে বর্তমান। 

সে-ও কি আমায় — সুজাতা আমায় ভালোবেসে ফেলেছিলো?

            আজো ভালোবাসে নাকি? 

ইলেকট্রনেরা নিজ দোষগুনে বলয়িত হয়ে রবে; 

কোনো অন্তিম ক্ষালিত আকাশে এর উত্তর হবে? 

সুজাতা এখন ভুবনেশ্বরে; 

            অমিতা কি মিহিজামে? 

বহুদিন থেকে ঠিকানা না জেনে ভালোই হয়েছে — সবই।

ঘাসের ভিতরে নীল শাদা ফুল ফোটে হেমন্তরাগে; 

সময়ের এই স্থির এক দিক, 

            তবু স্থিরতর নয়; 

প্রতিটি দিনের নতুন জীবাণু আবার স্থাপিত হয়।

শীতরাত

এই সব শীতের রাতে আমার হৃদয়ে মৃত্যু আসে; 

বাইরে হয়তো শিশির ঝরছে, কিংবা পাতা, 

কিংবা প্যাঁচার গান; সেও শিশিরের মতো, হলুদ পাতার মতো। 

শহর ও গ্রামের দূর মোহনায় সিংহের হুঙ্কার শোনা যাচ্ছে — 

সার্কাসের ব্যথিত সিংহের। 

এদিকে কোকিল ডাকছে – পউষের মধ্য রাতে;

কোনো-একদিন বসন্ত আসবে ব’লে?

কোনো-একদিন বসন্ত ছিলো, তারই পিপাসিত প্রচার? 

তুমি স্থবির কোকিল নও? কত কোকিলকে স্থবির হ’য়ে যেতে দেখেছি, 

                                    তারা কিশোর নয়, 

কিশোরী নয় আর; 

কোকিলের গান ব্যবহৃত হ’য়ে গেছে। 

সিংহ হুঙ্কার ক’রে উঠছে: 

সার্কাসের ব্যথিত সিংহ, 

স্থবির সিংহ এক — আফিমের সিংহ — অন্ধ — অন্ধকার।

চারদিককার আবছায়া-সমুদ্রের ভিতর জীবনকে স্মরণ করতে গিয়ে

মৃত মাছের পুচ্ছের শৈবালে, অন্ধকার জলে, কুয়াশার পঞ্জরে হারিয়ে

                                       যায় সব। 

সিংহ অরন্যকে পাবে না আর

পাবে না আর

পাবে না আর

কোকিলের গান

বিবর্ণ এঞ্জিনের মত খ’শে খ’শে

চুম্বক পাহাড়ে নিস্তব্ধ।

হে পৃথিবী,

হে বিপাশামদির নাগপাশ,— তুমি

পাশ ফিরে শোও, 

কোনোদিন কিছু খুঁজে পাবে না আর। 

(মহাপৃথিবী, ১৯৪৪)

মৃত্যু স্বপ্ন সংকল্প

আমাদের জানা ছিলো কিছু;

কিছু ধ্যান ছিলো;

আমাদের উৎস-চোখে স্বপ্নছটা প্রতিভার মতো

হয়তো-বা এসে পড়েছিলো;

আমাদের আশা সাধ প্রেম ছিলো; – নক্ষত্রপথের

অন্তঃশূণ্যে অন্ধ হিম আছে জেনে নিয়ে

তবুও তো ব্রহ্মাণ্ডের অপরূপ অগ্নিশিল্প জাগে;

আমাদেরো গেছিলো জাগিয়ে

পৃথিবীতে;

আমরা জেগেছি – তবু জাগাতে পারিনি;

আলো ছিলো – প্রদীপের বেষ্টনী নেই;

কাজ ছিলো – শুরু হলো না তো;

তাহলে দিনের সিঁড়ি কি প্রয়োজনের?

নিঃস্বত্ব সূর্যকে নিয়ে কার তবে লাভ!

স্বচ্ছল শাণিত নদী, তীরে তার সারস-দম্পতি

ঐ জল ক্লান্তিহীন উৎসানল অনুভব ক’রে ভালোবাসে;

তাদের চোখের রং অনন্ত আকৃতি পায় নীলাভ আকাশে;

দিনের সূর্যের বর্ণে রাতের নক্ষত্র মিশে যায়;

তবু তারা প্রণয়কে সময়কে চিনেছে কি আজো?

প্রকৃতির সৌন্দর্যকে কে এসে চেনায়!

– অংশবিশেষ –

(বেলা অবেলা কালবেলা, ১৯৬১)

আমাকে একটি কথা দাও

আমাকে একটি কথা দাও যা আকাশের মতো

সহজ মহৎ বিশাল,

গভীর; – সমস্ত ক্লান্ত হতাহত গৃহবলিভুকদের রক্তে

মলিন ইতিহাসের অন্তর ধুয়ে চেনা হাতের মতন,

আমি যাকে আবহমান কাল ভালোবেসে এসেছি সেই নারীর।

সেই রাত্রির নক্ষত্রালোকিত নিবিড় বাতাসের মতো:

সেই দিনের – আলোর অন্তহীন এঞ্জিন চঞ্চল ডানার মতন

সেই উজ্জ্বল পাখিনীর – পাখির সমস্ত পিপাসাকে যে

অগ্নির মতো প্রদীপ্ত দেখে অন্তিমশরীরিণী মোমের মতন।

সপ্তক

এইখানে সরোজিনী শুয়ে আছে; – জানি না সে এইখানে

শুয়ে আছে কিনা।

অনেক হয়েছে শোয়া; – তারপর একদিন চ’লে গেছে

কোন দূর মেঘে।

অন্ধকার শেষ হ’লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে :

সরোজিনী চলে গেলো অতদূর? সিঁড়ি ছাড়া – পাখিদের

মত পাখা বিনা?

হয়তো বা মৃত্তিকার জ্যামিতিক ঢেউ আজ? জ্যামিতির

ভূত বলে: আমি তো জানি না।

জাফরান – আলোকের বিশুষ্কতা সন্ধ্যার আকাশে আছে লেগে:

লুপ্ত বেড়ালের মত; শূণ্য চাতুরির মূঢ় হাসি নিয়ে জেগে।

(সাতটি তারার তিমির, ১৯৪৮)

নির্জন স্বাক্ষর

তুমি তা জানো না কিছু—না জানিলে,
আমার সকল গান তবুও তোমারে লক্ষ্য করে;
যখন ঝরিয়া যাবো হেমন্তের ঝড়ে’—
পথের পাতার মতো তুমিও তখন
আমার বুকের ’পরে শুয়ে রবে?
অনেক ঘুমের ঘোরে ভরিবে কি মন
সেদিন তোমার!
তোমার এ জীবনের ধার
ক্ষ’য়ে যাবে সেদিন সকল?
আমার বুকের ’পরে সেই রাতে জমেছে যে শিশিরের জল,
তুমিও কি চেয়েছিলে শুধু তাই;
শুধু তার স্বাদ
তোমারে কি শান্তি দেবে;
আমি ঝ’রে যাবো–তবু জীবন অগাধ
তোমারে রাখিবে ধ’রে সেইদিন পৃথিবীর ’পরে,
—আমার সকল গান তবুও তোমারে লক্ষ্য করে।

রয়েছি সবুজ মাঠে—ঘাসে—
আকাশ ছডায়ে আছে নীল হ’য়ে আকাশে-আকাশে;
জীবনের রং তবু ফলানো কি হয়
এই সব ছুঁয়ে ছেনে’;—সে এক বিস্ময়
পৃথিবীতে নাই তাহা—আকাশেও নাই তার স্থল,
চেনে নাই তারে ওই সমুদ্রের জল;
রাতে-রাতে হেঁটে-হেঁটে নক্ষত্রের সনে
তারে আমি পাই নাই; কোনো এক মানুষীর মনে
কোনো এক মানুষের তরে
যে-জিনিস বেঁচে থাকে হৃদয়ের গভীর গহ্বরে

নক্ষত্রের চেয়ে আরো নিঃশব্দ আসনে
কোনো এক মানুষের তরে এক মানুষীর মনে।

একবার কথা ক’য়ে দেশ আর দিকের দেবতা
বোবা হয়ে পড়ে থাকে—ভুলে যায় কথা;
যে-আগুন উঠেছিলো তাদের চোখের তলে জ্ব’লে
নিভে যায়—ডুবে যায়—তারা যায় স্খ’লে।
নতুন আকাঙ্ক্ষা আসে—চ’লে আসে নতুন সময়—
পুরানো সে-নক্ষত্রের দিন শেষ হয়
নতুনেরা আসিতেছে ব’লে;
আমার বুকের থেকে তবুও কি পড়িয়াছে স্খ’লে
কোনো এক মানুষীর তরে
যেই প্রেম জ্বালায়েছি পুরোহিত হয়ে তার বুকের উপরে।
আমি সেই পুরোহিত—সেই পুরোহিত।
যে-নক্ষত্র ম’রে যায়, তাহার বুকের শীত
লাগিতেছে আমার শরীরে—
যেই তারা জেগে আছে, তার দিকে ফিরে
তুমি আছো জেগে—
যে-আকাশ জ্বলিতেছে, তার মতো মনের আবেগে
জেগে আছো;
জানিয়াছো তুমি এক নিশ্চয়তা—হয়েছো নিশ্চয়।
হ’য়ে যায় আকাশের তলে কতো আলো—কতো আগুনের ক্ষয়;
কতোবার বর্তমান হ’য়ে গেছে ব্যথিত অতীত—
তবুও তোমার বুকে লাগে নাই শীত
যে-নক্ষত্র ঝ’রে যায় তার।
যে-পৃথিবী জেগে আছে, তার ঘাস—আকাশ তোমার।
জীবনের স্বাদ ল’য়ে জেগে আছো, তবুও মৃত্যুর ব্যথা দিতে
পারো তুমি;
তোমার আকাশে তুমি উষ্ণ হ’য়ে আছো—তবু—
বাহিরের আকাশের শীতে

নক্ষত্রের হইতেছে ক্ষয়,
নক্ষত্রের মতন হৃদয়
পড়িতেছে ঝ’রে—
ক্লান্ত হ’য়ে—শিশিরের মতো শব্দ ক’রে।
জানোনাকো তুমি তার স্বাদ—
তোমারে নিতেছে ডেকে জীবন অবাধ,
জীবন অগাধ।

হেমন্তের ঝড়ে আমি ঝরিব যখন
পথের পাতার মতো তুমিও তখন
আমার বুকের ’পরে শুয়ে রবে? অনেক ঘুমের ঘোরে ভরিবে কি মন
সেদিন তোমার।
তোমার আকাশ—আলো—জীবনের ধার
ক্ষ’য়ে যাবে সেদিন সকল?
আমার বুকের ’পরে সেই রাতে জমেছে যে শিশিরের জল
তুমিও কি চেয়েছিলে শুধু তাই, শুধু তার স্বাদ
তোমারে কি শান্তি দেবে।
আমি চ’লে যাবো—তবু জীবন অগাধ
তোমারে রাখিবে ধ’রে সেইদিন পৃথিবীর ’পরে;
আমার সকল গান তবুও তোমারে লক্ষ্য করে।

অদ্ভুত আঁধার এক

অদ্ভুত আঁধার এক এসেছে এ-পৃথিবীতে আজ,

যারা অন্ধ সবচেয়ে বেশি আজ চোখে দ্যাখে তারা;

যাদের হৃদয়ে কোনো প্রেম নেই – প্রীতি নেই – করুণার আলোড়ন নেই

পৃথিবী অচল আজ তাদের সুপরামর্শ ছাড়া।

যাদের গভীর আস্থা আছে আজো মানুষের প্রতি

এখনো যাদের কাছে স্বাভাবিক ব’লে মনে হয়

মহত্‍‌ সত্য বা রীতি, কিংবা শিল্প অথবা সাধনা

শকুন ও শেয়ালের খাদ্য আজ তাদের হৃদয়।

যাত্রী

Exit mobile version