পতিতার লাশ (বেশ্যা)- বিখ্যাত বাংলা কবিতা: “পতিতার লাশ” (বাংলা কবিতা বেশ্যা) বাংলা সাহিত্যের এক অনন্য ও বিখ্যাত কবিতা, যা গভীর জীবন দর্শন ও সমাজের কঠিন বাস্তবতাকে মর্মস্পর্শীভাবে তুলে ধরে। কবিতাটি পাঠকদের অন্তরে দাগ কেটে যায়, কারণ এটি এক সমাজবঞ্চিত নারীর জীবন ও মৃত্যুর করুণ চিত্রকে কেন্দ্র করে রচিত। এই কবিতার প্রতিটি শব্দ, প্রতিটি পঙক্তি যেন সমাজের কঠোর সত্যকে সামনে এনে দাঁড় করায়, যেখানে মানবতা, অসম্মান এবং বঞ্চনার যন্ত্রণা স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
Table of Contents
পতিতার লাশ – বিখ্যাত বাংলা কবিতা l বাংলা কবিতা বেশ্যা
সাধুর নগরে বেশ্যা মরেছে পাপের হয়েছে শেষ,
বেশ্যার লাশ হবে না দাফন এইটা সাধুর দেশ।
জীবিত বেশ্যা ভোগে তো আচ্ছা মরিলেই যত দোষ,
দাফন কাফন হবে না এখান সবে করে ফোঁসফোঁস।
বেশ্যা সে তো ছিল খাস মাল, তোদের রাতের রানী,
দিনের বেলায় ভুরু কোচকাও মরিলে দাও না পানি।
সাধু সুনামের ভেক ধরিয়া দেখালি দারুন খেলা,
মুখোশ তোদের খুলবে অচিরে, আসবে তোদের বেলা।
রাতের আধারে বেশ্যার ঘর স্বর্গ তোদের কাছে,
দিনের আলোতে চিনোনা তাহারে তাকাও নাকো লাজে।
চিনি চিনি ভাই সব সাধুরেই হরেক রকম সাজ,
সুযোগ পেলেই দরবেশী ছেড়ে দেখাও উদম নাচ।
নারী আমাদের মায়ের জাতি বেশ্যা বানালো কে?
ভদ্র সমাজে সতীর ছেলেরা খদ্দের সেজেছে।
সাধুর নগরে বেশ্যা মরেছে পাপের হয়েছে শেষ l বাংলা কবিতা বেশ্যা
গরিবের বৌ সস্তা জিনিস সবাই ডাকো ভাবি,
সুযোগ পেলেই প্রস্তাব দাও, আদিম পাপের দাবি।
স্বামী যখন মরলো ভাবির দুধের শিশু কোলে,
ভদ্র দেবর সুযোগ খোঁজে সহানুভূতির ছলে।
দিনের মত দিন চলে যায় হয় না তাতে দোষ,
মরা লাশের সুযোগ পেয়ে কাঠ মোল্লার রোষ।
মোল্লা সাহেব নায়েবে রসুল ফতোয়া ঝাড়িয়া কয়,
পতিতা নারীর জানাজা কবর এই এলাকায় নয়।
সুধাই আমি ওরে মোল্লা জানাজায় যত দোস,
বেশ্যার দান নিয়েছো ঝোলায় তুমি বেটা নির্দোশ।
বেশ্যার তবু আছে পাপ বোধ নিজেকে সে ভাবে দোষী,
তোমরা তো বেটা দ্বীন বেচে খাঁও হচ্ছো খোদার খাসি।
আল্লাহর ঘর মসজিদেও আছে বেশ্যার দান,
কলেমা পড়েছে সেওতো তবে নামেতে মুসলমান।
বেশ্যা নারী বেশ্যা নারী পুরুষরা সব সৎ,
জানি ও মোল্লা খুলবেনা মুখ চাকরি যাওয়ার পথ।
আর কতকাল থাকবি অমন মুখোশধারীর দল,
আসবো এবার মশাল নিয়ে ভাঙতে তোদের কল।
সত্যের আলো জ্বলবে যখন চিনবে তোদের সবে,
লেবাসধারী মুখোশধারীর মুখোশ উপড়ে যাবে।
এইভাবে আর চালাবি কত ছলচাতুরির খেলা,
আসছেন তিনি এবার তোদের বিদায় নেওয়ার পালা।
সংগৃহীত
বিঃদ্রঃ কবিতাটি কোথাও কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর নামে আছে, যদিও নজরুল রচনাবলীতে নাই,
আবার কোথাও “পতিতার লাশ”— শেখ সাজ্জাদুল ইসলামের নামে আছে।