বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বানী ও উক্তি: অনুপ্রেরণার এক অপূর্ব ভাণ্ডার: বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কথাশিল্পী, তাঁর অমর সাহিত্যকর্মের মাধ্যমে পাঠকদের হৃদয়ে অমর হয়ে আছেন। তাঁর রচনায় গ্রামীণ জীবনের সরলতা, মানবিক সম্পর্কের গভীরতা এবং প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য মূর্ত হয়ে উঠেছে। বিভূতিভূষণ শুধু গল্প এবং উপন্যাসের স্রষ্টা নন, তাঁর বানী ও উক্তিগুলি আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে অনুপ্রেরণা জোগায়।
বিভূতিভূষণের উক্তিগুলি জীবনবোধের গভীরতা, প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক, এবং মানবমনের বিচিত্র অনুভূতির প্রতিফলন। তাঁর শব্দগুলিতে মিশে আছে সহজ সরলতার মাধুর্য এবং গভীর দার্শনিকতা, যা আমাদের প্রতিদিনের জীবনে নতুন করে বাঁচার পথ দেখায়।
এই ব্লগে আমরা বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কিছু উল্লেখযোগ্য বানী ও উক্তি নিয়ে আলোচনা করব, যা আমাদের জীবনের বিভিন্ন মুহূর্তে শক্তি, প্রেরণা এবং শান্তি এনে দিতে পারে। আশা করি, এই উক্তিগুলি পাঠকের মনের গভীরে নাড়া দেবে এবং বিভূতিভূষণের সাহিত্যকর্মের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা আরও বাড়িয়ে তুলবে।
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বানী ও উক্তি: অনুপ্রেরণার এক অপূর্ব ভাণ্ডার
মানুষের আয়ু মানুষের জীবনের ভুল মাপকাঠি। দশ বছরের জীবন সে উপভোগ করেছে দেড় বছরে।
~ চাঁদের পাহাড়- বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়
কিন্তু মানুষের জীবনে এমন সব অদ্ভুদ ঘটনা ঘটে তা উপন্যাসে ঘটাতে গেলে পাঠকরা বিশ্বাস করতে চাইবে না, হেসেই উড়িয়ে দেবে।
~ চাঁদের পাহাড়- বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়
মানুষ কি চায় — উন্নতি, না আনন্দ? উন্নতি করিয়া কি হইবে যদি তাহাতে আনন্দ না থাকে? আমি এমন কত লোকের কথা জানি, যাহারা জীবনে উন্নতি করিয়াছে বটে, কিন্তু আনন্দকে হারাইয়াছে। অতিরিক্ত ভোগে মনোবৃত্তির ধার ক্ষইয়া ভোঁতা — এখন আর কিছুতেই তেমন আনন্দ পায় না, জীবন তাহাদের নিকট একঘেয়ে, একরঙা, অর্থহীন। মন শান-বাঁধানো — রস ঢুকিতে পায় না।
“জীবন বড় মধুময় শুধু এইজন্য যে,এই মাধুর্যের অনেকটাই স্বপ্ন ও কল্পনা দিয়া গড়া।হোক না স্বপ্ন মিথ্যা, কল্পনা বাস্তবতার লেশশূন্য;”
~ পথের পাঁচালী ~ বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়)
´বনের ফুল যারা ভালোবাসে না, সুন্দরকে চেনে না, দিক বলয় রেখা যাহাদের কখনো হাতছানি দিয়ে ডাকে নাই, তাহাদের কাছে এই পৃথিবী ধরা দেয় না কোন কালেই।’
~ আরন্যক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায় বানী
বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায় বানীঃ
জীবনকে খুব কম মানুষেই চেনে। জন্মগত ভুল সংস্কারের চোখে সবাই জীবনকে বুঝিবার চেষ্টা করে, দেখিবার চেষ্টা করে, দেখাও হয় না, বোঝাও হয় না। তাছাড়া সে চেষ্টাই বা ক’জন করে?
~ অপরাজিতা – বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়
কিন্তু সহানুভূতি বা দুঃখ এক জিনিস, আর তা থেকে কাজের প্রেরণা সম্পূর্ণ অন্য- বিশেষত স্বার্থপর যৌবন চায় যা নাগালের বাইরে তাকে হাতে আঁকড়ে ধরতে, চায় তার রূপ, চায় উন্নতি, ছোট চায় বড়কে আয়ত্ত করার আত্মপ্রসাদ……
~ উন্নতি (ছোটগল্প) – বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়
এসব ভবিষ্যতের মেয়ে, অনাগত দিনের আগমনী এদের অলক্তরাগরক্ত চরণধ্বণিতে বেজে উঠেছে, কেউ কেউ শুনতে পায়। আজ গ্রাম্য সমাজের পুঞ্জীকৃত অন্ধকারে এইসব সাহসিকা তরুণীর দল অপাঙক্তেয়–প্রত্যেক চন্ডীমন্ডপে গ্রাম্য বৃদ্ধদের মধ্যে ওদের বিরুদ্ধে ঘোঁট চলচে, জটলা চলচে, কিন্তু ওরাই আবাহন করে আনচে সেই অনাগত দিনটিকে।
~ ইছামতী – বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়
বর্ষার দিনে এই ইছামতীর কূলে কূলে ভরা ঢলঢল রূপে সেই অজানা মহাসমুদ্রের তীরহীন অসীমতার স্বপ্ন দেখতে পায় কেউ কেউ..কত যাওয়া-আসার অতীত ইতিহাস মাখানো ঐ সব মাঠ, ঐ সব নির্জন ভিটের ঢিপি–কত লুপ্ত হয়ে যাওয়া মায়ের হাসি ওতে অদৃশ্য রেখায় আঁকা। আকাশের প্রথম তারাতা তার খবর রাখে হয়তো।
~ ইছামতী – বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়
বিপদে পড়িবার ভয়েই লোকে ভয় পায়। কিন্তু বিপদের মধ্যে পড়িলে তখন আর সে ভয় থাকে না।
করুণা ভালবাসার সবচেয়ে মূল্যবান মসলা, তার গাঁথুনি বড় পাকা হয়।
বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায় উক্তি
বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায় উক্তিঃ
ছেলে অবাক হয়ে বাপের মুখের দিকে তাকায়। কি সুন্দর, নিষ্পাপ অকলঙ্ক মুখ ওর। চাঁদে কলঙ্ক আছে কিন্তু খোকার মুখে কলঙ্কের ভাঁজও নেই।
~ ইছামতী – বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়
নানা প্রকার অজ্ঞানতায় ও মূঢ়তায় নিজেকে ডুবিয়ে রেখেও অজ্ঞানী ব্যাক্তি ভাবে, আমি বেশ আছি, আমি কৃতার্থ!
~ ইছামতী – বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়
পরের বাড়ি যেতে হবে যে। না হয় আর এক বছর। তারা খাঁটিয়ে নেবে তবে খেতে দেবে। বসে খেতে দেবে না। চকি ঘুম এলি তারা শোনবে না।
~ ইছামতী – বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়
জীবনে মানুষ ততক্ষণ ঠিক শেখে না অনেক জিনিসই, যতক্ষণ সে দুঃখের সম্মুখীন না হয়।
যে জাতির মধ্যে সৌন্দর্যবোধ দিন দিন এত কমে যাচ্ছে, সে জাতির ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে খুব সন্দেহ হয়।
বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায় ক্যাপশন
বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায় ক্যাপশনঃ
এ এক আলাদা জীবন, যারা ঘরের দেওয়ালের মধ্যে আবদ্ধ থাকিতে ভালোবাসে না, সংসার করা যাদের রক্তে নাই, সেই সব বারমুখো, খাপছাড়া প্রকৃতির মানুষের পক্ষে এমন জীবনই তো কাম্য।
~ অরণ্যক – বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়
সমাজ সমাজ করে গেল এ মহা-মূর্খের দল।
~ ইছামতী – বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়
অল্প বুদ্ধি লোক আগে বিরাটকে বুঝতে চেষ্টা করে না, আগে থেকেই সেই অনন্তের সঙ্গে একটা সম্বন্ধ পাঠিয়ে বসে থাকে। অসীমের ধারণা না হোক, সেই বড় কল্পনাও তো একটা রস। রস উপলব্ধি করতে জানে না – আগেই ব্যগ্র হয়ে সেই অসীমকে সীমার গন্ডিতে টেনে এনে তাঁকে ক্ষুদ্র করতে।
~ ইছামতী – বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়
একশত বৎসর একসঙ্গে থাকিলেও কেহ হয়তো আমার হৃদয়ের বাহিরে থাকিয়া যায়, যদি না কোনো বিশেষ ঘটনায় সে আমার হৃদয়ের কবাট খুলিতে পারে। কিন্তু মানুষের জীবনে এমন সব অদ্ভুদ ঘটনা ঘটে তা উপন্যাসে ঘটাতে গেলে পাঠকরা বিশ্বাস করতে চাইবে না, হেসেই উড়িয়ে দেবে।
বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায় কবিতা
বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায় কবিতাঃ
এক আলাদা জীবন, যারা ঘরের দেওয়ালের মধ্যে আবদ্ধ থাকিতে ভালোবাসে না, সংসার করা যাদের রক্তে নাই, সেই সব বারমুখো, খাপছাড়া প্রকৃতির মানুষের পক্ষে এমন জীবনই তো কাম্য।
শেষ কথাঃ
বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায় এর স্ট্যাটাস, বানী, উক্তি, ক্যাপশন ও কবিতা। বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায় এর স্ট্যাটাস, বানী, উক্তি, ক্যাপশন ও কবিতা পোস্ট পড়ে ভালো লাগে তাহলে এই পোস্টটি সকলের মাঝে শেয়ার করতে পারেন। আশা করি আপনাদের সকলের কাছে ভালো লাগবে। আমাদের সাথে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ।