Quotes by Rudra Muhammad Shahidullah in Bengali: রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, বাংলার কবি ও সাহিত্যিক হিসেবে আমাদের মননে স্থায়ী আসন করে নিয়েছেন। তাঁর গভীর ও মর্মস্পর্শী লেখনী আমাদের ভাবতে শেখায়, ভালোবাসতে উদ্বুদ্ধ করে, এবং জীবনকে নতুন দৃষ্টিতে দেখতে সহায়তা করে। রুদ্রের কবিতা ও উক্তিগুলি একাধারে প্রেম, সংগ্রাম, এবং মানুষের অন্তর্দহনকে প্রকাশ করে।
এই ব্লগে আমরা রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহর বেছে নেওয়া কিছু মনোমুগ্ধকর উক্তি ও কবিতার লাইন উপস্থাপন করবো, যা পাঠকের হৃদয়কে স্পর্শ করবে এবং তাঁদের চিন্তাকে উদ্বুদ্ধ করবে। রুদ্রের ভাষার সৌন্দর্য, অনুভূতির গভীরতা, এবং চিন্তার স্বাধীনতা আপনারা এই ব্লগে পাবেন। আসুন, আমরা একসাথে ডুব দেই রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহর উক্তির জগতে এবং অনুভব করি তাঁর লেখনীর মাধুর্য।
রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ (১৬ অক্টোবর ১৯৫৬ – ২১ জুন ১৯৯১) ছিলেন একজন বাংলাদেশি কবি ও গীতিকার। তার জনপ্রিয় কবিতার মধ্যে অন্যতম “বাতাসে লাশের গন্ধ”। এই কবির স্মরণে বাংলাদেশের বাগেরহাট জেলার মোংলার মিঠেখালিতে গড়ে উঠেছে “রুদ্র স্মৃতি সংসদ”।
Quotes by Rudra Muhammad Shahidullah in Bengali l রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহর উক্তি বাংলায়
Table of Contents
১#
আঁকড়ে থেকো না কিছু।
যে যাবার তাকে যেতে দাও
যে ফেরার সেতো ফিরবেই..
২#
এমন কি ভালোবাসাও
ইদানীং আমাকে আর
ভালোবাসে না।
৩#
চলে যাওয়া মানেই প্রস্থান নয় ,
বিচ্ছেদ নয় ,
চলে যাওয়া মানেই নয় বন্ধন ছিন্নকরা আর্দ্র রজনী ।
চলে গেলে আমারো অধিক কিছু থেকে যাবে আমার না থাকা জুড়ে…
____রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ
৪#
যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন্য হতে পারে,,
সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন্য হতে পারে,,
তবুও ভালোবাসা থেকে যায়,,
হয়তো আক্ষেপে
নয়তো অপেক্ষায়।
—-রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ
৫#
আমি একা
এই ব্রহ্মান্ডের ভেতর একটি বিন্দুর মত আমি একা।
৬#
কে থাকে এমন একলা থাকায়
কে ডাকে অমন নিরব ডাকায়।
৭#
যুবতী বুক থেকে ঝলমলে তলপেট উলঙ্গ কোরে
বিনিময়ে দুখানা ঝলসানো রুটি নিলো।
৮#
বাড়াই তৃষ্ণার হাত ফিরে আসে শূন্যতাকে ছুঁয়ে।
৯#
বিস্মিত তুমি যতোবার টানো বন্ধন – সুতো ধ ’রে ,
আমি শুধু যাই দূরে।
১০#
নিদ্রার বুকে মাথা রেখে জেগে আছি আজো
অনিদ্রা মিশে গেছে বুকের রক্তে।
১১#
দূরত্ব জানে শুধু একদিন খুব বেশী নিকটে ছিলাম,
১২#
না-পাওয়া ব্যথার আছে উদ্ধার,
পাওয়ার বেদনা প্রতিকারহীন ।
১৩#
এমন কি ভালোবাসাও
ইদানীং আমাকে আর
ভালোবাসে না।
১৪#
কী ভয়ংকর এই একাকীত্ব!
কী নির্মম এই বান্ধবহীনতা!
কী বেদনাময় এই বিশ্বাসহীনতা!
১৫#
এবং জন্ম মানেই মৃত্যুর প্রতি অমােঘ যাত্রা
১৬#
প্রেম দুর্বোধ্য, নারী দুর্বোধ্য
এবং তুমিও তোমার
প্রেমের মতোই দুর্বোধ্য।
১৭#
মাঝে মাঝে ভুল হয়ে যায় । আগে হতোনা
ভুলবশত অনেক ভুল হয় ইদানিং আমার ।
১৮#
দিচ্ছো ভীষন যন্ত্রনা
বুঝতে কেন পাচ্ছ না ছাই
মানুষ আমি, যন্ত্র না।
১৯#
নীলাকে কখনো নীল শাড়ি পরতে দেখিনি।
২০#
হয়েছো গোপন ঘুন, শাঁস কাটো লুকায়ে ভেতরে –
পুড়ে মরি, কেমনে গো আমি তারে বাইরে দ্যাখাবো!
২১#
নিজের কাছে নিজেই আমি
প্রশ্নবোধক রেখা !
২২#
প্রত্যেকের বুকের নিভৃতে কিছু দগ্ধ ক্ষত থাকে লুকানো ,
কিছু অসম্পূর্ণ নির্মান , ভাংগাচোরা গেরস্হালি ঘরদোর ,
প্রত্যেকের নিজস্ব কিছু নিদ্রাহীন রাত্রি থাকে
যাকে চিরদিন নষ্ট নোখের মতো রেখে দিতে হয় কোমল অনিচ্ছার বাগানে
যাকে শুধু লুকিয়ে রাখাতেই সুখ , নিজের নিভৃতে রেখে
গোপনে পোড়াতেই একান্ত পাওয়া ।
২৩#
দুটি চোখ মনে আছে, আর কিছু নেই…
২৪#
আমার বয়স যেন সভ্যতার সমান
২৫#
নিদ্রার সম্মোহনে ফিরে গেলে তুমি খুলবে পোশাক
স্নানঘরে জলের শব্দ হবে, ভেজা চুলে খেলবে এক
বাতাশের দারুন কিশোরী।
২৬#
এলবামে স্মৃতি নেই বলে
আদৌ দুঃখ করিনা,
সোনালি নিসঙ্গতায় আমার
বিচিত্র দুঃখের সমাবেশ সঞ্চয় – ।
২৭#
শেষমেশ যে যার সন্ধার কাছে ফিরে যায়,
যে যার অন্ধকারের কাছে।
২৮#
কেন এলে বলো বেশতো ছিলাম
শুধু শুধু করাঘাত করলে চেতনায়
বড়ো অবেলায় এলে – বড়ো অবেলায় ।
২৯#
আমি একা
এই ব্রহ্মান্ডের ভেতর একটি বিন্দুর মত আমি একা
৩০#
নিজেকে নিয়ে আছি, নিজে নিজে আছিনা-পাওয়া ব্যথার আছে উদ্ধার,
পাওয়ার বেদনা প্রতিকারহীন।
৩১#
এমন কি ভালোবাসাও
ইদানীং আমাকে আর
ভালোবাসে না।
৩২#
কী ভয়ংকর এই একাকীত্ব!
কী নির্মম এই বান্ধবহীনতা!
কী বেদনাময় এই বিশ্বাসহীনতা!
৩৩#
এবং জন্ম মানেই মৃত্যুর প্রতি অমােঘ যাত্রা
৩৪#
প্রেম দুর্বোধ্য, নারী দুর্বোধ্য
এবং তুমিও তোমার
প্রেমের মতোই দুর্বোধ্য।
৩৫#
ছুঁয়ে দাও।
আমি ভাসমান মগ্ন মেঘেদের মতো ঝ’রে পড়ি
বৃষ্টির পালক।
৩৬#
পুষ্পিত হাতে ডাক দিয়েছি, আসবে না কেন!
৩৭#
তোমরা কি প্রত্যেকেই অভিনয় করো?
৩৮#
এতোটা নিশব্দে জেগে থাকা যায় না, তবু জেগে আছি…
৩৯#
ইচ্ছে ছিলো বিরহের সাথে একরাত কাটাবো নিদ্রায় ,
৪০#
আমার কাছেই সকল কথা
অন্তরঙ্গ বলছি একা
এমনি ভাবে বলেই যাব।।
৪১#
আমার প্রকৃত ক্যানভাসে , তোমার স্কেচ আঁকা ছিলো
অথচ তুমিই থাকোনি আমার হয়ে ।
৪২#
যে পায় সে পেয়ে যায় – বাকিরা হারায়।
৪৩#
আমার বসন্ত আছে
আমার কোকিল আছে
শুধু কৃষ্ণচূড়া নেই।
৪৪#
রাত্রি বলবে নেই, নক্ষত্র বলবে নেই
শহর বলবে নেই, সাগর বলবে নেই
হৃদয় বলবে – আছে।
৪৫#
গুটিয়ে যাচ্ছি শামুকের মতো দ্রুত।
স্মৃতি ও স্বপ্ন বুকের ভেতরে রেখে,
খোলা চারদিক বর্মে নিয়েছি ঢেকে।
আরো পড়ুন: সুকান্ত ভট্টাচার্যের 20টি সেরা কবিতা
৪৬#
তবু বেঁচে আছি প্রানপনে
অন্তত কিছুদিনের জন্য
৪৭#
একা থাকার এই ভালো লাগায় হারিয়ে গেছি
নিসঙ্গতা আমাকে আর পাবে না।
৪৮#
তোমার কাছে পৌঁছাতে আমার এক যুগ কেটে গেল।
৪৯#
প্রচুর দূরত্ব হয়ে আছো
৫০#
সুন্দর রক্তাক্ত হও। তিক্ততায় ভেঙে পড়ো । কাঁদো।
না হলে কখনো তুমি কবির বেদনা বুঝবে না।
৫১#
আমি সেই অবহেলা , আমি সেই নতমুখ ,
নিরবে ফিরে যাওয়া অভিমান – ভেজা চোখ , আমাকে গ্রহন করো ।
৫২#
দু একটা গোপন চুমুর স্মৃতি তুমিও লুকিয়ে রাখো,
কে না রাখে!
৫৩#
অভিমান ভালোবেসে তোমায় ভুলতে গিয়ে তোমাকেই নির্মান করেছি॥
৫৪#
শরীর বেচি শোনো ভদ্রলোক,
রাতের নায়ক যারা–
তারাই দিনের বিচারক।
৫৫#
পেতে চাই লোভ-ঘৃনা-ভালোবাসা-হিংসাসহ জটিল তোমাকে।
৫৬#
আধখানা স্বপ্নে আছি ,আধখানা শ্রমে
আধখানা প্রেমে আর আধেক অপ্রেমে।
৫৭#
কারো জন্যেই তো কেউ অপেক্ষা করে না’
যে যার মতোন ব’য়ে যায়-
৫৮#
যেতে যেতে আমিও পৃথক হয়েছি, হয়েছি আলাদা মানুষ
আলাদা ভুবন-
৫৯#
ব্যথায় কাঁদিনি কখনো কেঁদেছি বেদনার সুখে ।
৬০#
আর কতো রাত কাটবে এভাবে এই অর্থহীনতায়
৬১#
ক্লান্ত গোলাপ
এখন আমার বিস্তৃতি চাই, নিভৃতি চাই,
এখন আমার পরানে চাই দখিন হাওয়া।
৬২#
পাতা ফুল খেয়ে গাছকে চিনতে পারিনি
এতটুকু দেখে কীভাবে তোমায় চিনবো !
৬৩#
কিছু দীর্ঘশ্বাস জমা হয়ে থাকবে বুকে
কিছু অশ্রু থেমে থাকবে চোখের নিকটে
ঝরাবে না শিশির।
৬৪#
তুমি জানিবে, আমি জানিব
এ প্রেম শুধু তোমার আমার।
৬৫#
আমরা কি কোনোদিন আর কোনো কথা বলবো না?
৬৬#
বুকের ভেতরে প্রতিবাদ নিয়ে একা একা পুড়ি অতন্দ্র–
৬৭#
মাধবী কাল চ’লে যাবে।
ওর হাতে ফুলগুলো তুলে দিয়ে বললাম
‘তুমিও কি ফুল হয়ে ঝ’রে যাবে?’
৬৮#
নীল অভিমানে পুড়ে একা আর কতোটা জীবন?
কতোটা জীবন!!
৬৯#
শরীরে অধঃপতন ভেতরে বাড়ছে প্রেম অনন্ত অভাব।
৭০#
কেউ কি ভেবেছিলাে এতাে সহজে সব কিছুই
স্মৃতি হয়ে যাবে, অতীত হয়ে যাবে!
৭১#
নিজের কাছে নিজেই আমি
প্রশ্নবোধক রেখা !
৭২#
চলো স্বপ্ন মিলাই।
৭৩#
প্রত্যাখ্যান দিয়েছো যখন
কিছুটা প্রত্যাশা রেখে যাও,
৭৪#
সহজে যদিও ভালোবেসে ফেলি
সহজে থাকিনা কাছে,
পাছে বাঁধা পড়ে যাই।
৭৫#
নিরবতা কোনো এক উদাসিন পাথরের নাম –
৭৬#
জোস্নার গন্ধে ভরা রাতে আকাশের হলুদ ছায়ায়
আমি আজীবন খুঁজে যাব তোমাকে ।
৭৭#
বন্ধুরা সব বিত্তে বাড়ে , চিত্তে বাড়ে
বাড়ে শনৈঃ গৃহস্থালি ,
আমার তবু বয়স হয় না , বুদ্ধি হয় না ।
৭৮#
আমার এখন সমস্তটাই স্মৃতিসৌধ,
৭৯#
আমার কিছু তুমি ছিলো তোমার কাছে !
৮০#
পুষে রাখে যেমন ঝিনুক
খোলসের আবরণে মুক্তোর সুখ
তেমনি তোমার গভীর ছোঁয়া
ভিতরের নীল বন্দরে।
৮১#
নেই। কেউ নেই-
৮২#
তুমি তারে প্রেম দাও, বিরহ অনল দাও–উপেক্ষা দিও না ।।
৮৩#
বিজন রাত্রি তছনছ ছোটে, ভীত হরিনের ঝাঁক
৮৪#
জীবনে যতোটা প্রয়োজন আছে
ততোটুকু নাও , ততোটুকু রাখো
তার বেশি নয় কিছু ।
৮৫#
তবে কি জীবন বেশি নির্মম নিয়মে বাঁধা?
৮৬#
কষ্ট পেতে পেতে
তুমি প্রতিদিনের সূর্যের মতো
স্পষ্ট হয়ে ওঠো।
৮৭#
তুমি নেই, কোথাও তোমার ছায়া নেই, ঘ্রান নেই।
৮৮#
কিছু থেকে যাবে মৃত্যুরও পরে – কেউ জানবো না।
৮৯#
আমি দূরে যাই –
স্বপ্নের চোখে তুমি মেখে নাও ব্যথা – চন্দন চুয়া,
সারাটি রাত্রি ভাসো উদাসীন বেদনার বেনোজলে..
৯০#
দুজনেই জেনেছি দুজন দ্যাখা হবে, একদিন দ্যাখা হবে কোথাও,
কোথাও দ্যাখা হবে- কোথাও কোথায়?
৯১#
দূরত্বের কাঁচে ঠেকে ফিরে আসছে আঙুল।
আমি তোমাকে স্পর্শ করতে পারছি না,
৯২#
আমার এখন ছুটতে হবে অনিশ্চিতের পথে,
আমায় এখন ছুটতে হবে রোদের বিপরীতে।
৯৩#
দূর থেকে যারে মনে হয়েছিলো ভীষন কঠিন
আসলে সে তার সবটুকু জুড়ে ছিলো সরলতা।
৯৪#
একদিন তোমার সমস্ত বুকে আমার সাম্রাজ্য ছিলো
একদিন আমার সাম্রাজ্যের তুমিই অধিস্বরী ছিলে।
৯৫#
যেভাবে ঝিনুক খুলে মুক্ত খোঁজে লোকে
আমাকে খুলেই তুমি পেয়েছো অসুখ,
পেয়েছো কিনারাহীন আগুনের নদী।
৯৬#
আজো আমার বোধ হলো না
ভেতরে নীল ক্রোধ হলো না
পরান-গলা রোধ হলো না –
৯৭#
এতো কাছে যার বসবাসখানা, এতোটা নিকটে
এতো চিৎকারে ডেকেছি তবু সে শোনেনি কিছুই,
৯৮#
আমি তো কাছেই আছি
দুয়োরের কাছে, ওই উদাসিন ভিক্ষুর মতো গভীর
একাকি
৯৯#
আমি এই বিষন্ন পৃথিবী নিয়ে একা একা ফিরে যাবো গভীর নেশায়
কোনদিন আসবোনা আর , কোনদিন আসবোনা আর …
১০০#
আজো দেখি ভালোবাসা ফিরে যায় ঘৃনার ছোবলে।
আরো পড়ুন: Nakshi Kanthar Math – Jashim Uddin l নকশী কাঁথার মাঠ – জসীম উদ্দীন
১০১#
পেয়েছে যে তার হারাবার ছাড়া কোনো ভয় নেই আর..
১০২#
এটা প্রস্থান নয়, বিচ্ছেদ নয়
শুধু এক শব্দহীন সবল অস্বীকার।
১০৩#
শূন্যতার দিকে চোখ, শূন্যতা চোখের ভেতরেও।
১০৪#
আমার স্নায়ুর সকল ইচ্ছা দিয়ে
তোমাকে চাইছি হৃদয়ের কাছে পেতে ।
১০৫#
শুধু অভিনয়,
শুধু কথার মুখোশ, চমৎকার, বনেদি মসৃন।
১০৬#
রাতের খুব কাছাকাছি নিসঙ্গতা আর আমি
মুখোমুখি বোসে আছি কথাহীন নির্বাক।
১০৭#
কেউ আসছে না। না স্বপ্ন, না ঘুম, কেউ নয়।
১০৮#
যেদিকে যাই , যেদিকে ফিরি
স্মৃতি কিংবা ভবিষ্যতে ,
আমার এখন তোমাকে চাই ।
১০৯#
তোমাকে জিততে হবে
মনে রেখো ফেরার সব পথ বন্ধ হয়ে গেছে!
১১০#
ছিঁড়তে গেলেই স্মৃতি উঠে আসে শিকড়ের সাথে, পালাতে পারি না লতা টেনে রাখে অন্তর্মূল-
১১১#
যা কিছু হারায় তার কতোটুকু খুঁজেছে মানুষ!
কতোটুকু পেয়েছে মানুষ!
১১২#
যদিও জেনেছি চোখ মুছলেও মুছবে না জল
যাবে না জলের স্মৃতি ।
১১৩#
কী বেদনাময় এই অনিশ্চয়তা !
কী বিভৎস এই ভালোবাসাহীনতা !
কী নির্মম এই স্বপ্নহীনতা !
১১৪#
স্মৃতিগুলো ডাস্টবিনের জঞ্জাল
আর আমিই অনুসন্ধানরত
আজীবন ডাস্টবিনের ব্যর্থ কাক ।
১১৫#
সঞ্চিত বারুদ বক্ষে তবু প্রয়োজন ছাড়া জ্বলি না কখনো ।
১১৬#
বোধের গোড়ায় ঢেলে কাড়ি কাড়ি জল
একটিও তাজা ফুল ফোটানো গেলনা ।
অথচ জলার ধারে কতো ফুল ফোটে,
একটিও ফুল তার বাঁচানো গেলনা ।।
১১৭#
আমার কোথাও ফিরে যাওয়া নেই
১১৮#
কারা যে কি ভেবে উঠে পড়েছিলো কারো আজ মনে নেই,
সৌভাগ্যের দূর-যাত্রায় স্বপ্নের মরীচিকা
টেনে এনেছিলো হয়তো এদের- আজ হারিয়েছে খেই।
১১৯#
আমার ভিতরে বাহিরে অন্তরে অন্তরে ,
আছো তুমি হৃদয় জুড়ে।
১২০#
পেছন থেকে তুমি পুরোনো প্রেমের স্বরে
ডাকলেও আমি তাকাবো না আর ভালোবাসা।
১২১#
বহুদিন ধ’রে খুঁজছি এখনো আজো
একজন বিশ্বাসী মানুষ খুঁজছি-
বড়ো একাকি আছি।
১২২#
মনে হলো একবার
তুলে এনে রাখি তারে বুকের নিকটে।
১২৩#
রাত্রি বলবে নেই, নক্ষত্র বলবে নেই
শহর বলবে নেই, সাগর বলবে নেই
হৃদয় বলবে – আছে।
১২৪#
যাকে কোনোদিন কেউ রাখেনি কোনো গৃহের আশ্রয়ে
ভালোবেসে বুকে নিয়ে চিরকাল তাকেই বলেছি প্রেম
প্রিয়তম তীর্থভূমি।
১২৫#
মনে হয় একদিন কাক – জোস্নায় তুমিও দরােজা খুলে ফিরে আসবে।
১২৬#
শূন্যতা ছোঁয়, অপূর্নতার বাউল রাতে
কান্দে শরীর-
১২৭#
তোমার শুন্যতা ঘিরে দীর্ঘশ্বাস , বেদনার ঘ্রাণ ,
তোমার নাথাকা জুড়ে জেগে থাকে সহস্র শ্মশান।
১২৮#
আমাকে কোথায় যেতে হবে
কোন দিকে
১২৯#
রাতের সুতীব্র স্রোত হুহু কোরে টেনে নিয়ে যায় ,
ফিরে এসো নিশ্চয়তা , ফিরে এসো রোদের সকাল ।
১৩০#
তোমাকে অনুবাদ করেছি স্বপ্নে।
তোমাকে অনুবাদ করেছি তৃষ্ণায়।
তোমাকে অনুবাদ করেছি উদাসিনতায়।
১৩১#
ইচ্ছাকৃত ভুলে ফেলে রেখে গেছি আমার বকুল
ভুলে ফেলে গেছি ভেবে ফিরিয়ে দিও না।
১৩২#
কেউ দেখবে না, তুমি কাঁদো কবি, কাঁদো
কেউ জানবে না তুমি কষ্ট পাও কবি
কেউ ছোঁবে না তোমাকে, তুমি তো পাথর।
১৩৩#
কথা কি শেষ হয়ে যায়- সব কথা?
১৩৪#
এইভাবে অপেক্ষাহীন প্রতীক্ষায় বোসে থাকবো –
১৩৫#
কিছু বলার ছিলো তবু
নিজের কাছে নিজেই আমি
প্রশ্নবো্ধক রেখা !
১৩৬#
গুটিয়ে যাচ্ছি শামুকের মতো দ্রুত।
স্মৃতি ও স্বপ্ন বুকের ভেতরে রেখে,
খোলা চারদিক বর্মে নিয়েছি ঢেকে।
১৩৭#
সহজে যদিও ভালোবেসে ফেলি
সহজে থাকি না কাছে,
পাছে বাঁধা পড়ে যাই।
বিস্মিত তুমি যতোবার টানো বন্ধন-সুতো ধ’রে,
আমি শুধু যাই দূরে।
১৩৮#
চলে গেলে মনে হয় তুমি এসেছিলে,
চলে গেলে মনে হয় তুমি সমস্ত ভুবনে আছো।- এ কেমন ভ্রান্তি আমার!”
১৩৯#
থাকুক তোমার একটু স্মৃতি থাকুক
একলা থাকার খুব দুপুরে
একটি ঘুঘু ডাকুক।
১৪০#
কিছুটা তো চাই- হোক ভুল হোক মিথ্যে প্রবোধ,
অভিলাষী মন চন্দ্রে না পাক, জ্যোৎস্নায় পাক সামান্য ঠাঁই
কিছুটা তো চাই, কিছুটা তো চাই।
প্রেম, বিরহ ও ভালবাসা নিয়ে রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ উক্তি সমূহ
রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ প্রেমিক পুরুষ হিসেবে খ্যাত ছিলেন। ভালবেসে বিয়ে করেছিলেন তসলিমা নাসরিনকে। পাশাপাশি আরো বেশ কয়েকটি প্রেমের অভিযোগে তসলিমা নাসরিন তাঁকে ছেড়ে যান। তিনি ভালবেসে অসংখ্য কবিতা, গান ও উক্তির সমাবেশ ঘটিয়েছেন, যা এখনো তাঁর প্রেমিক হৃদয়ের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। প্রেম, বিরহ ও ভালবাসা নিয়ে রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ উক্তি সমূহ যুগান্তকারী এবং কালজয়ী প্রেমিক হৃদয়ের বচন। নিচে তাঁর অংশ বিশেষ উল্লেখ করা হলো-
“ ভুল ভেঙ্গে গেলে ডাক দিও,
আমি মৃত্যুর আলিঙ্গন ফেলে আত্মমগ্ন আগুন
ললাটের সৌমতায় তোমার লিখে দেবো একখানা প্রিয়নাম – ভালোবাসা। ”
“পরাজিত প্রেম তোমাকে দেবো না স্বাতি ।
এই উন্মুল জীবনের বোনা স্বপ্নের ছেঁড়া তাঁত
তোমাকে দেবো না, তোমাকে দেবো না স্বাতি ।
পরাজিত প্রেম তোমাকে দেবো না প্রিয়।”
উপরোক্ত রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ উক্তি ‘পরাজিত প্রেম’ কবিতা থেকে চয়ন করা হয়েছে।
“থাকুক তোমার একটু স্মৃতি থাকুক
একলা থাকার খুব দুপুরে
একটি ঘুঘু ডাকুক।”
“দিচ্ছো ভীষণ যন্ত্রণা
বুঝতে কেন পাছো না ছাই
মানুষ আমি, যন্ত্র না!”
“চোখ কেড়েছে চোখ
উড়িয়ে দিলাম ঝরা পাতার শোক।”
উপরের রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ উক্তি তিনটি ‘গুচ্ছ কবিতা’ থেকে সংগৃহীত।
“চত্রুান্তের খল বুকে কামড় বসাই।
আমারও ইচ্ছে করে
টুকরো টুকরো কোরে কেটে ফেলি তোমার শরীর।”
উপরোক্ত রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহর এই উক্তি ‘শোধবোধ’ কবিতা থেকে সংগৃহীত।
“কিছুটা তো চাই- হোক ভুল হোক মিথ্যে প্রবোধ,
অভিলাষী মন চন্দ্রে না পাক, জ্যোৎস্নায় পাক সামান্য ঠাঁই
কিছুটা তো চাই, কিছুটা তো চাই।”
উপরোক্ত রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ বানীটি ‘অভিমানের খেয়া’ কবিতা থেকে সংগৃহীত।
“তোমাকে পারিনি ছুঁতে,
তোমার তোমাকে- উষ্ণ দেহ ছেনে ছেনে কুড়িয়েছি সুখ,
পরস্পর খুড়ে খুড়ে নিভৃতি খুঁজেছি।
তোমার তোমাকে আমি ছুঁতে পারি নাই।”
রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ কবিতা ‘দূরে আছো দূরে’ হতে উক্তিটি সংগৃহীত।
“এ কেমন ভ্রান্তি আমার!
এলে মনে হয় দূরে সরে আছো,
বহুদূরে, দূরত্বের পরিধি ক্রমশ বেড়ে যাচ্ছে আকাশ।”
উপরোক্ত রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ উক্তি ‘এ কেমন ভ্রান্তি আমার’ কবিতা থেকে সংগৃহীত।
“ঢেকে রাখে যেমন কুসুম, পাপড়ির আবডালে ফসলের ঘুম।
তেমনি তোমার নিবিঢ় চলা, মরমের মূল পথ ধরে। ”
“তোমার পেয়ালা উপচে পড়ুক ভালোবাসা,
ইটের নিসর্গে শুধু ঘাম, শুধু মেদ, প্রেম নেই,
অথবা অন্য কোনো নাম তার-
অন্য কোন নাম?
কি নাম তোমার ভালোবাসা??
উপরোক্ত রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ এর উক্তি ‘বৈশাখের নাগরদোলায়’ কবিতা থেকে সংগৃহীত।
“মাধবী কাল চ’লে যাবে।
ওর হাতে ফুলগুলো তুলে দিয়ে বললাম
‘তুমিও কি ফুল হয়ে ঝ’রে যাবে?’
ও নির্বাক উদাসীন।
ওর কাকের পাখার মতো কালো চোখ
মুহূর্তে জলে ভ’রে এলো
মৃদু কাঁপলো পাপড়িগুলো।”
উপরোক্ত রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ উক্তি ‘মাধবীর অবিশ্বাস্য স্মৃতি’কবিতা থেকে সংগৃহীত।
“ রাত্রি বলবে নেই, নক্ষত্র বলবে নেই
শহর বলবে নেই, সাগর বলবে নেই
হৃদয় বলবে- আছে ”
“যে কাছাকাছির মাঝে বিন্দু খানেক দূরত্বও আছে
মেঘের মেয়ে অতো কাছে এসোনা কোন দিন
দিব্যি দিলাম মেঘের বাড়ীর, আকাশ কিংবা আলোর সারির।”
উপরোক্ত রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ উক্তি ‘খুব কাছে এসো না’ কবিতা থেকে সংগৃহীত।
“ওর হাতে ফুলগুলো তুলে দিয়ে বললাম
‘তুমিও কি ফুল হয়ে ঝ’রে যাবে?’
ও নির্বাক উদাসীন।”
উপরোক্ত রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ এর উক্তি ‘মাধবীর অবিশ্বাস্য স্মৃতি’ কবিতা থেকে সংগৃহীত।
“ একটা ঠিকানা চাই।
যেই ঠিকানায় সপ্তাহ শেষে একটি করে চিঠি দিব…….
প্রেম-প্রেম, আবেগে ঠাসা, ভালোবাসায় টইটুম্বুর!
হবে একটা ঠিকানা?
কারনে অকারনে চিঠি দিব… ”
“ ভালো আছি, ভালো থেকো
আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখ ”
“ তুমিই শুধু ভালোবাসা রাখতে গিয়ে
ছড়িয়ে ফেললে চতুর্দিকে অসাবধানে
ভালোবাসা ছড়িয়ে ফেললে চতুর্দিকে… ”
“ এতোটা নিশব্দে জেগে থাকা যায় না, তবু জেগে আছি….
আরো কতো শব্দহীন হাঁটবে তুমি, আরো কতো নিভৃত চরনে
আমি কি কিছুই শুনবো না- আমি কি কিছুই জানবো না! ”
“ যে রাত ‘পাশাপশি বসিবার বনলতা সেন’
সে রাত আমার নয়, সে রাত অন্য কারো ”
“ প্রনয়ীর প্রথম পরশ ছুঁয়ে দ্বিধাগ্রস্ত
চুপিচুপি চোখের উপকূলে জোয়ারের মতো
স্বপ্নালু হেঁটে আসা যে রাত আচ্ছন্ন আকাশের নিচে
সে রাত আমার নয়, সে রাত অন্য কারো ”
“ কিছুই অসাধ্য নয় আজ
আমি সবকিছুই দিতে পারি
বলো কী কী নেবে তুমি? ”
“ যৌবন, একাকি রাত
শিশিরের শুভ্রতা কাংখিত জীবন
তুমি কী নিতে চাও বলো? ”
“একা থাকার এই ভালো লাগায় হারিয়ে গিয়েছি, নিঃসঙ্গতা আমাকে আর পাবে না ”
“ আমি সেই অবহেলা, আমি সেই নতমুখ,
নিরবে ফিরে যাওয়া অভিমান-ভেজা চোখ,
আমাকে গ্রহণ করো।
উৎসব থেকে ফিরে যাওয়া আমি সেই প্রত্যাখ্যান,
আমি সেই অনিচ্ছা নির্বাসন বুকে নেওয়া ঘোলাটে চাঁদ।
আমাকে আর কি বেদনা দেখাবে? ”
“ তবু পৃথিবীতে রাত নামে নিবিড় তুষারের মতো,
তুমি শুধু উড়ে চলো ক্লান্তিহীন, তন্দ্রাহীন
অন্য এক সকালের দিকে ”
“ তবু তুমিও বলতে পারছো না – না, নেই, কোথাও নেই,
আমার কোথাও আজ তার ছায়া নেই, সে নেই কোথাও-
বৃষ্টির জলের দাগ মুছে গেছে একদিন সকালের রোদে ”
“ তবু তুমি বলছো না – সে তোমার কেউ নয়, প্রজাপতি,
অথবা পাখি সে, দুদন্ড জড়িয়ে গেছে জীবনের ডালে।
তোমার শাখায় বোসে দেখেছে সে অন্য ফুল, উজ্জ্বল অধিক,
প্রজাপতি উড়ে যাবে বিচিত্র বিভিন্ন ফুলে সে তো স্বাভাবিক ”
“ আমার কিছু কথা ছিলো কিছু দুঃখ ছিলো
আমার কিছু তুমি ছিলো তোমার কাছে ”
“ তোমার দুচোখে এক অস্পষ্ট স্বপ্নের ছায়া,
তুমি ভেসে যাও,
ভেসে ভেসে চিনে নাও
দূরবর্তী কূলের ঠিকানা,
অথবা নিজের মুখ দ্যাখো তুমি নিসর্গে, নির্জন আয়নায় ”
“ চলে যাওয়া মানে প্রস্থান নয়- বিচ্ছেদ নয়
চলে যাওয়া মানে নয় বন্ধন ছিন্ন-করা আর্দ্র রজনী
চলে গেলে আমারও অধিক কিছু থেকে যাবে
আমার না-থাকা জুড়ে ”
“ তুমি প্রেমের কলিংবেল টিপে এসে দাঁড়ালে
সংশয় সন্দিহান
আমি দরোজা খুলেই সরাসরি
তোমাকে এনে বসিয়েছি হৃদয়ে।
বুকের একান্ত বেডরুমে। ”
“ আমি যার শিয়রে রোদ্দুর এনে দেবো বলে কথা দিয়েছিলাম
সে আঁধার ভালোবেসে রাত্রি হয়েছে ।
এখন তার কৃষ্ণ পক্ষে ইচ্ছের মেঘ
জোনাকির আলোতে স্নান করে,
অথচ আমি তাকে তাজা রোদ্দুর দিতে চেয়েছিলাম ”
“ এইভাবে এই শূন্য করতলে আমি কি তোমায় লিখেছিলাম
তোমার একান্ত নাম ভালোবাসা, কুয়াশার বিনিদ্র শিশির! ”
“ তোমাকে অনুবাদ করেছি স্বপ্নে।
তোমাকে অনুবাদ করেছি তৃষ্ণায়।
তোমাকে অনুবাদ করেছি উদাসিনতায়। ”
“ তোমাকে প্রতিদিন লেখার মতো
অনেক রকম খবর আছে ”
“ উচিত ছিলো তোমার বাড়ি এক্কেবারে
আমার বাড়ির পাশেই হওয়া । জানলা খুলে
চোখ দুটোকে মেলে দিলেই দেখতে পাবো
টুকিটাকি জিনিশপত্র শোবার ঘরে
অলস চুলে বোলাচ্ছ সেই স্নিগ্ধ লাজুক আঙুলগুলো ।
উচিত ছিলো জানলা খুললে
তোমার আমার দেখতে পাওয়া সারাটি ক্ষন । ”
“ উচিত ছিলো । উচিত ছিলো রাত্রিবেলা
হাসনুহানার শাড়ির মতো তোমার চুলের
গন্ধচূর্ন আবেশ আবেশ ভেসে আসা,
উচিত ছিলো তোমার গাওয়া আনমনা গান
অসংলগ্ন একটু আধটু শুনতে পাওয়া
সম্পূর্ন অলক্ষিতে । উচিত ছিলো তোমার বাড়ি
এক্কেবারে আমার বাড়ির পাশেই হওয়া।”
“দেবদারু-চুলে উদাসী বাতাস মেখে
স্বপ্নের চোখে অনিদ্রা লিখি আমি,
কোন বেদনার বেনোজলে ভাসি সারাটি স্নিগ্ধ রাত?”
“সহজে যদিও ভালোবেসে ফেলি
সহজে থাকি না কাছে,
পাছে বাঁধা পড়ে যাই।
বিস্মিত তুমি যতোবার টানো বন্ধন-সুতো ধ’রে,
আমি শুধু যাই দূরে। ”
“আমি দূরে যাই-
স্বপ্নের চোখে তুমি মেখে নাও ব্যথা-চন্দন চুয়া,
সারাটি রাত্রি ভাসো উদাসীন বেদনার বেনোজলে… ”
“চলে গেলে মনে হয় তুমি এসেছিলে,
চলে গেলে মনে হয় তুমি সমস্ত ভুবনে আছো।- এ কেমন ভ্রান্তি আমার!”
“দূরত্ব জানে শুধু একদিন খুব বেশি নিকটে ছিলাম”
উপরোক্ত রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ উক্তি ‘অমলিন পরিচয়’ কবিতা থেকে চয়ন করা হয়েছে।
“তোমারো চোখের খুব গভীরে এক বর্ণহীন দাহ-
হৃদয়ের ক্ষতের মতো তুমি তাকে গোপনে লুকিয়ে রেখে
মুখে শুধু এঁকেছো এক সুদূরের অচেনা হাসি …”
পড়ে নিতে পারেন >> প্রেম ভালবাসা নিয়ে হুমায়ূন আহমেদের উক্তি সমূহ
স্বাধীনতা, সমাজ এবং রাজনীতি নিয়ে রুদ্র মহাম্মদ শহীদুল্লাহ উক্তি সমূহ
রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ এমন এক সময়ের কবি যখন দেশ জুড়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা বিদ্যমান। সে সময়ে হাতে কলম তুলে নেয়ার সাহস সব কবি দেখাতে পারেননি। পেরেছিলেন সাহসী কবি রুদ্র, তিনি সকল অনাচার, অবিচার এবং দুঃশাসনের বিরুদ্ধে কলম তুলেছিলেন। সেই সময়ে তাঁর কলম নিঃসৃত কবিতা, গান, উক্তি সমূহ শাসকের বুকে কাঁপন ধরাতে সমর্থ হয়েছিল। স্বাধীনতা, সমাজ ও রাজনীতি নিয়ে রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ উক্তি সমূহের কিছু অংশ নিচে উল্লেখ করা হলো-
“বেশ্যাকে তবু বিশ্বাস করা চলে
রাজনীতিকের ধমনী শিরায় সুবিধাবাদের পাপ
বেশ্যাকে তবু বিশ্বাস করা চলে
বুদ্ধিজীবীর রক্তে স্নায়ুতে সচেতন অপরাধ
বেশ্যাকে তবু বিশ্বাস করা চলে
জাতির তরুন রক্তে পুষেছে নির্বীর্যের সাপ”
উপরোক্ত রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ এর উক্তি “হাড়েরও ঘরখানি” কবিতা থেকে সংগৃহীত।
“আজো আমি বাতাসে লাশের গন্ধ পাই
আজো আমি মাটিতে মৃত্যূর নগ্ননৃত্য দেখি,
ধর্ষিতার কাতর চিৎকার শুনি আজো আমি তন্দ্রার ভেতরে…
এ দেশ কি ভুলে গেছে সেই দু:স্বপ্নের রাত, সেই রক্তাক্ত সময় ?”
উপরোক্ত রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ বানীটি ‘বাতাসে’ লাশের গন্ধ কবিতা থেকে সংগৃহীত।
“জাতির পতাকা খামচে ধরেছে আজ পুরোনো শকুন।
বাতাশে লাশের গন্ধ
নিয়ন আলোয় তবু নর্তকীর দেহে দুলে মাংসের তুফান।
মাটিতে রক্তের দাগ –
চালের গুদামে তবু জমা হয় অনাহারী মানুষের হাড়
এ চোখে ঘুম আসেনা।”
উপরোক্ত উক্তিটি রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহর ‘বাতাসে লাশের গন্ধ’ কবিতা থেকে সংগৃহীত।
“কোথাও সুস্থতা নেই।
এ সময়ে শোষণের সুশোভন নামই সুস্থতা —
তুমি সেই সুস্থতার নির্বোধ প্রতিক
আত্মপ্রকাশের সামনে তুমি দাঁড়িয়ে ছিলে।”
“ রাজনীতিহীন সাহিত্যচর্চা কপটতা ছাড়া আর কী? ”
“ যে মাঠ থেকে এসেছিল স্বাধীনতার ডাক, সেই মাঠে আজ বসে নেশার হাট ”
“ স্বাধীনতা, সে আমার – স্বজন, হারিয়ে পাওয়া একমাত্র স্বজন –
স্বাধীনতা – আমার প্রিয় মানুষের রক্তে কেনা অমূল্য ফসল।”
“ ধর্ষিতা বোনের শাড়ী ওই আমার রক্তাক্ত জাতির পতাকা।”
“ কথা ছিলো রক্ত-প্লাবনের পর মুক্ত হবে শস্যক্ষেত,
রাখালেরা পুনর্বার বাশিঁতে আঙুল রেখে
রাখালিয়া বাজাবে বিশদ।
কথা ছিলো বৃক্ষের সমাজে কেউ কাঠের বিপনি খুলে বসবে না,
চিত্রল তরুণ হরিনেরা সহসাই হয়ে উঠবে না
রপ্তানিযোগ্য চামড়ার প্যাকেট ”
“ কথা ছিলো, শিশু হবে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম সম্পদের নাম।
নদীর চুলের রেখা ধ’রে হেঁটে হেঁটে যাবে এক মগ্ন ভগীরথ,
কথা ছিলো, কথা ছিলো আঙুর ছোঁবো না কোনোদিন ”
“ কথা ছিলো, ভাষার কসম খেয়ে আমরা দাঁড়াবো ঘিরে
আমাদের মাতৃভূমি, জল, অরন্য, জমিন, আমাদের
পাহাড় ও সমুদ্রের আদিগন্ত উপকূল-
আজন্ম এ জলাভূমি খুঁজে পাবে প্রকৃত সীমানা তার ”
“ ইহকাল ভুলে যারা পরকালে মত্ত হয়ে আছে
চলে যাক সব পরপারে বেহেস্তে তাদের
আমরা থাকবো এই পৃথিবীর মাটি জলে নীলে,
দ্বন্দ্বময় সভ্যতার গতিশীল স্রোতের ধারায়
আগামীর স্বপ্নে মুগ্ধ বুনে যাবো সমতার বীজ ”
“ তাঁর চোখ বাঁধা হলো।
বুটের প্রথম লাথি রক্তাক্ত করলো তার মুখ।
থ্যাতলানো ঠোঁটজোড়া লালা-রক্তে একাকার হলো,
জিভ নাড়তেই দুটো ভাঙা দাঁত ঝরে পড়লো কংক্রিটে।
মা…..মাগো….. চেঁচিয়ে উঠলো সে।
“ পাঁচশো পঞ্চান্ন মার্কা আধ-খাওয়া একটা সিগারেট
প্রথমে স্পর্শ করলো তার বুক।
পোড়া মাংসের উৎকট গন্ধ ছড়িয়ে পড়লো ঘরের বাতাসে।
জ্বলন্ত সিগারেটের স্পর্শ
তার দেহে টসটসে আঙুরের মতো ফোস্কা তুলতে লাগলো। ”
“ তাকে চিৎ করা হলো।
পেটের ওপর উঠে এলো দু’জোড়া বুট, কালো ও কর্কশ।
কারণ সে তার পাকস্থলির কষ্টের কথা বলেছিলো,
বলেছিলো অনাহার ও ক্ষুধার কথা। ”
“ সে তার দেহের বস্ত্রহীনতার কথা বলেছিলো-
বুঝি সে-কারণে
ফর ফর করে টেনে ছিঁড়ে নেয়া হলো তার শার্ট।
প্যান্ট খোলা হলো। সে এখন বিবস্ত্র, বীভৎস। ”
“ তার দুটো হাত-
মুষ্টিবদ্ধ যে-হাত মিছিলে পতাকার মতো উড়েছে সক্রোধে,
যে-হাতে সে পোস্টার সেঁটেছে, বিলিয়েছে লিফলেট,
লোহার হাতুড়ি দিয়ে সেই হাত ভাঙা হলো।
সেই জীবন্ত হাত, জীবন্ত মানুষের হাত। ”
“ সে এখন মৃত।
তার শরীর ঘিরে থোকা থোকা কৃষ্ণচূড়ার মতো
ছড়িয়ে রয়েছে রক্ত, তাজা লাল রক্ত।”
“তার থ্যাতলানো একখানা হাত
পড়ে আছে এদেশের মানচিত্রের ওপর,
আর সে হাত থেকে ঝরে পড়ছে রক্তের দুর্বিনীত লাভা- ”
“ কিছুটা হিংস্র বিদ্রোহ চাই কিছুটা আঘাত
রক্তে কিছুটা উত্তাপ চাই, উষ্ণতা চাই
চাই কিছু লাল তীব্র আগুন। ”
“ হাত বাড়ালেই মুঠো ভরে যায় ঋণে
অথচ আমার শস্যের মাঠ ভরা।
রোদ্দুর খুঁজে পাই না কখনো দিনে,
আলোতে ভাসায় রাতের বসুন্ধরা। ”
“ ডাকছে কৃষ্ণপক্ষের রাত- ঘুমিয়ে পড়লে নাকি?
লুট হয়ে গেল ইতিহাস, স্মৃতি, পতাকা কৃষ্ণচুড়া-
চেতনায় জ্বলে বৈরী আগুন- ঘুমিয়ে পড়লে নাকি? ”
পড়ে নিতে পারেন >> মানুষ ও সমাজ নিয়ে কাজী নজরুল ইসলামের উক্তি সমূহ
দর্শন ও মানুষ ও জীবন নিয়ে রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ উক্তি সমূহ
মানুষ ও জীবনের কবি ছিলেন রুদ্র। তাঁর কবিতায় বার বার উঠে এসেছে মাটি মানুষ এবং বেঁচে থাকার গান। জীবন নিয়ে তাঁর দর্শন ছিল একেবারে ভিন্ন। তাঁর জীবনবোধ গুলো আজো মানুষকে ভাবনায় নিমগ্ন করে। দর্শন, মানুষ এবং জীবন নিয়ে রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ উক্তি ও বাণী সমূহের কিছু অংশ নিচে উল্লেখ করা হল-
“জানি চরম সত্যের কাছে নত হতে হয় সবাইকে-
জীবন সুন্দর
আকাশ-বাতাস পাহাড়-সমুদ্র
সবুজ বনানী ঘেরা প্রকৃতি সুন্দর
আর সবচেয়ে সুন্দর এই বেঁচে থাকা
তবুও কি আজীবন বেঁচে থাকা যায়”
উপরোক্ত রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ উক্তি “চলে যাওয়া মানে প্রস্থান নয়” কবিতা থেকে সংগৃহীত।
“চলে যাওয়া মানে প্রস্থান নয়- বিচ্ছেদ নয়
চলে যাওয়া মানে নয় বন্ধন ছিন্ন-করা আর্দ্র রজনী
চলে গেলে আমারও অধিক কিছু থেকে যাবে
আমার না-থাকা জুড়ে।”
উপরোক্ত রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ উক্তি ‘চলে যাওয়া মানে প্রস্থান নয়‘ কবিতা থেকে সংগৃহীত।
“অতোটা হৃদয় প্রয়োজন নেই,
কিছুটা শরীর কিছুটা মাংস মাধবীও চাই।
এতোটা গ্রহণ এতো প্রশংসা প্রয়োজন নেই
কিছুটা আঘাত অবহেলা চাই প্রত্যাখান।”
উপরোক্ত রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ উক্তি ‘অবেলায় শঙ্খধ্বনি’ কবিতা থেকে সংগৃহীত।
“যে পায় সে পেয়ে যায় – সকলে পায় না।
কাকে বলো? অভিমান, কার সাথে তবে?
অমনই হবে, হয়, ভেঙে তছনছ
পুড়ে পুড়ে খাক হও বিষন্ন অঙ্গার
কিছুই পাবে না তবু-
যে পায় সে পেয়ে যায় – বাকিরা হারায়।”
“সারাদিন অন্ধকার চাষ করে ফিরে আসি ঘরে,
সারারাত বেদনার বীজ বুনি বুকের ভেতরে…”
“আত্মঘাতী আমি নিজের কাছে প্রশ্ন করি!
নিশব্দের এমন রাতে বুকের মাঝে শব্দ কেনো?”
“আঁকড়ে থেকো না কিছু।
যে যাবার তাকে যেতে দাও
যে ফেরার সেতো ফিরবেই-
কলমি লতার ফ্ল্যাটে ফিরে যাবে হলুদাভ হাঁস।”
উপরোক্ত রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ উক্তি ‘বৈশাখের নাগরদোলায়’ কবিতা থেকে সংগৃহীত।
“ আয়ু থাক নেশায় বিভোর
থাকুক বাসনা সারা দেহে,
ঝরার আগেই তুমি হাতটি মেল,
পতনের আগে শুধু জানিয়ে দিও
এ তোমার ভুল সাধ,ভুল বাসনা ”
“ জেগে আছি, জেগে আছি- যতদূরে যাও
জেনো রাত্রির ঘরে আমারো একখানা জানালা আছে,
চৈত্রের সব পাখি- সব ফুল- সব প্রতীক্ষারা
এই নিশব্দ জানালার কাছে নত হয়ে আসে
অঙ্গের সুষমা খুলে যায় সৌরভরাশি। ”
“ বাইরে এবং বুকের মধ্যে
হিয়ার ভেতর…হিয়ার মধ্যে
হারানো এক হলদে পাখি উড়ছে বসছে
দুলছে, যেন শৈশবে সেই দোলনা খেলা…
হায়রে আমার বয়স হয় না! ”
“কিছু সে চায়নি যেচে, কিছু সে পায়নি, তবু
কিছু কিছু না পাওয়া ব্যথা জমেছে সঞ্চয়ে তার,
যে রকম বীজধান তুলে রাখে অভিজ্ঞ কিষান
সুদিন অঘ্রানে ”
“ বিস্মৃতির বাসস্ট্যান্ডে দাড়িয়ে রয়েছি একা,
কেউ আসছে না। না স্বপ্ন, না ঘুম, কেউ নয়।
আঁধারপুরের বাস কতোদূর থেকে তুমি আসো? ”
“ কিছু দীর্ঘশ্বাস জমা হয়ে থাকবে বুকে
কিছু অশ্রু থেমে থাকবে চোখের নিকটে
ঝরাবে না শিশির ”
“মাখে আকাশের গভীর শান্তি,
আমি বসে থাকি প্রিয় আগুনের বেদনার ঘ্রানে
প্রতীক্ষমান মহুয়া-মুগ্ধ মাটি।”
উপরোক্ত রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ উক্তি ‘প্রতীক্ষমান মাটি’ কবিতা থেকে সংগৃহীত।
“ একটি মানুষ খুন কোরে এই তো এলাম আমি
প্রার্থনা ঘরে,
দ্যাখো শরীরে আমার কি মধুর আতরের ঘ্রান
কি মোহন স্বর্গীয় শোভা সারা অবয়ব জুড়ে,
আহা, ঈশ্বরই সব মংগল করেন ”
“ স্মৃতিগুলো ডাস্টবিনের জঞ্জাল
আর আমিই অনুসন্ধানরত
আজীবন ডাস্টবিনের ব্যর্থ কাক। ”
“দুচোখ বেয়ে রাত্রি ঝরে, পাংশুটে রাত,
রক্তমাখা চাঁদের দেহে জোস্না উধাও,
উল্টে পড়ে রোদের বাটি,
আমার এখন আকাশ জুড়ে দুঃস্বপ্নের দালানকোঠা।”
“আমি খুব গাঢ় ধ্বংসের ক্ষতচিহ্ন নিয়ে বুকের মাটিতে
পৃথিবীর মতো সুঠাম দাঁড়িয়ে থাকা অবিচল তনু
আমাকে এতটা অসহায়, এতো ম্রিয়মান ভাবো কেন?”
“ মুগ্ধ চোখে চেয়ে চেয়ে থেকেছে সে পৃথিবীর বয়সের দিকে,
আলো আর আঁধারের দিকে, বৃত্তাবদ্ধ জীবনের দিকে।
কিছু সে চায়নি তবু, চেয়েছে সে সবচেয়ে বেশি-
একখানা গৃহ নয় সারাটা পৃথিবী ”
“যেতে যেতে এই বাস থেমে যাবে বকুল তলায়
যাত্রীরা পড়বে নেমে যে যার মতোন।”
“কাটা আঙুল থেকে রক্তের মতো ঝ’রে ঝ’রে পড়ে
ইচ্ছার নীল অক্ষমতা।”
উপরোক্ত রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ এর উক্তি ‘বিচ্ছিন্ন আঙুলে নীল অক্ষমতা’ কবিতা থেকে সংগৃহীত।
“নিসঙ্গ টেবিলে পা তুলে অসভ্য ভাষায়
আমি একাকি বোসে আছি নিখুঁত পোট্রেট।”
উপরোক্ত রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ উক্তি ‘জোস্নার জলে পলাতক পোট্রেট’ কবিতা থেকে সংগৃহীত।
“ আমি একা
এই ব্রহ্মান্ডের ভেতর একটি বিন্দুর মতো আমি একা ”
“ আর কী অবাক!
ইতিহাসে দেখি সব লুটেরা দস্যুর জয়গানে ঠাঁসা,
প্রশস্তি, বহিরাগত তস্করের নামে নানারঙা পতাকা ওড়ায়। ”
উপরোক্ত রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ উক্তি ‘কথা ছিলো সুবিনয়’ কবিতা থেকে সংগৃহীত।
“ আমি কবি নই – শব্দ শ্রমিক।
শব্দের লাল হাতুড়ি পেটাই ভুল বোধে ভুল চেতনায়,
হৃদয়ের কালো বেদনায় ”
“ ধূর্জটি-জটা পেতে রোধ করি অবক্ষায়ের সংশয়,
আমার এ-হাতে শব্দ-কাস্তে ঝলসায়।
ভাষার কিষান চোখ মেলে চেয়ে দেখি,
চারিপাশে ঘোর অসম জীবন,
সভ্য পোশাকে পাশবিক বন ”
“ আমি মস্তিস্কের সমস্ত জানালা খুলে দাঁড়িয়ে রয়েছি,
কেউ আসছে না। না রোদ, না পাখির নেকলেস।
কেবল উত্তর পাহাড়ের হিম, ঠান্ডা হাত
ছুঁয়ে যাচ্ছে ব্যথিত চিবুক ”
“ তপ্ত সীসার মতো পুড়ে পুড়ে একদিন
কঠিন হয়েছি শেষে, হয়েছি জমাট শীলা।
তবু সেই পাথরের অন্তর থেকে
কেঁদে ওঠে একরাশ জলের আকুতি,
ঝর্ণার মতো তারা নেমে জেতে চায় কিছু
মাটির শরীরে ”
“ প্রত্যেকের বুকের নিভৃতে কিছু দগ্ধ ক্ষত থাকে লুকানো,
কিছু অসম্পূর্ণ নির্মাণ, ভাংগাচোরা গেরস্হালি ঘরদোর,
প্রত্যেকের নিজস্ব কিছু নিদ্রাহীন রাত্রি থাকে
যাকে চিরদিন নষ্ট নোখের মতো রেখে দিতে হয় কোমল অনিচ্ছার বাগানে
যাকে শুধু লুকিয়ে রাখাতেই সুখ, নিজের নিভৃতে রেখে
গোপনে পোড়াতেই একান্ত পাওয়া ”
“ অথচ দ্রাক্ষার রসে নিমজ্জিত আজ দেখি আরশিমহল,
রাখালের হাত দুটি বড় বেশি শীর্ণ আর ক্ষীণ,
বাঁশি কেনা জানি তার কখনোই হয়ে উঠে নাই- ”
“ কথা ছিলো, চিল-ডাকা নদীর কিনারে একদিন ফিরে যাবো।
একদিন বট বিরিক্ষির ছায়ার নিচে জড়ো হবে
সহজিয়া বাউলেরা,
তাদের মায়াবী আঙুলের টোকা ঢেউ তুলবে একতারায়-
একদিন সুবিনয় এসে জড়িয়ে ধ’রে বোলবে: উদ্ধার পেয়েছি ”
“ ‘পাখি হয়ে যাই, অথচ খুলতে পারি না দেহের খাঁচা,
ডানা ঝাপটাই অভ্যন্তরে স্বপ্নের ডানা নাড়ি ”
“ হাত ধরো, হাত ধরো-
আমি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরিবর্তে এনে দেবো তৃতীয় পৃথিবীর শ্রেনীহীন কবিতার ভুবন”
“ বিদায়ের সেহনাই বাজে
নিয়ে যাবার পালকি এসে দাঁড়ায় দুয়ারে
সুন্দর পৃথিবী ছেড়ে
এই যে বেঁচে ছিলাম
দীর্ঘশ্বাস নিয়ে যেতে হয়
সবাইকে
অজানা গন্তব্যে
হঠাৎ ডেকে ওঠে নাম না জানা পাখি
অজান্তেই চমকে ওঠি
জীবন, ফুরালো নাকি!
এমনি করে সবাই যাবে, যেতে হবে… ”
“ যারা বলে অসম্ভব, অসম্ভব তাদের দুয়ারেই বেশি হানা দেয় ”
“ আমাদের বাসনায় ছিলো কিছু ভুলবোধ
প্রাপ্যের পূর্ণতা তাই এতো মনে হয়
নিঃস্ব করুণ
তাই এতো পাওয়াকেও মনে হয় ব্যর্থতা, মনে হয় ম্লান। ”
“ কতোখানি ডাক শুনে ছুটে যায় এই মুগ্ধ মানুষ
অভ্যন্তরে কতোখানি উৎসবে সব পথ ভেঙে একখানা পথ
শুধু একখানা ঘর জেগে ওঠে মর্মের মর্মস্থলে ”
“ বৈশাখি মেঘ ঢেকেছে আকাশ,
পালকের পাখি নীড়ে ফিরে যায়
ভাষাহীন এই নির্বাক চোখ আর কতোদিন?
নীল অভিমান পুড়ে একা আর কতোটা জীবন?
কতোটা জীবন!! ”
“ সুখ কি এমন! সূর্যের মতো গভীর মর্মে
প্রজ্জ্বলন্ত অন্তবিহীন লেলিহান স্মৃতি!
সুখ কি এমন একা একা জাগা রাত্রির ছায়া
লোনা সাগরের স্বপ্নে মগ্ন নগ্ন হৃদয়ে প্রমত্ত জল
আরেক সাগর! ”
“ রমনী এক রকম অনাবশ্যক ইচ্ছা বিবর্ণ ঝাঁঝাঁলো সম্প্রতি নারী শুধু কাচের ছায়া, অপ্রতিবিম্ব কাচ, শুধুমাত্র কাচ ”
“নির্দিষ্ট আবাসহীন বাউল যেন
জীবন নামে একতারাটি
আপন মনে বাজিয়ে ফিরি
শহর জুড়ে ঘর বেধেছি স্বাধীনতায়
আত্মগত আমি আবার
নিজের কাছে প্রশ্ন করি
নিঃশব্দের এমন রাতে বুকের মাঝে
শব্দ কেন?”
“সব কথা সাজিয়ে নিয়ে এইভাবে অপেক্ষাহীন প্রতীক্ষায়
অবোধ শিশুর মতো তীব্র দুহাতে খেলে যাবো অবিকল
ইচ্ছার পুতুল এইভাবে থেমে থাকবো শব্দিত নির্জন!”