বাংলা গল্প কিংবা বাংলা কবিতা পড়তে সকলেরই ভালো লাগে। বাংলা কবিতা – “আমিও চাই” | Poem In Bengali 2024
raateralo.com এখন থেকে আপনাদের জন্য পরিবেশন করতে চলেছে বিভিন্ন ধরনের গল্প ও কবিতা। আশাকরি গল্পপ্রেমী কিংবা কবিতা প্রেমীদের আমাদের পরিবেশন ভালো লাগবে।
আজকের পরিবেশন – “আমিও চাই”
কবিতার লেখিকা – নার্গিস মিস্ত্রি।
Table of Contents
আমিও চাই
এই জনাকীর্ণতার মাঝে ,
আমিও চাই একটু প্রস্ফুটিত হতে,,,
আমিও চাই,
আমার অকলঙ্কিত পাপড়িকে,
একটু নির্মল করে,
তাকে ব্যপ্ত করতে।
আমি চাই,
এই নিস্তেজ,অচেতন ধরাতলে,
একটু একটু করে
আমার অস্তিত্বের সঞ্চার ঘটাতে।
কিন্তু,, এই জনবহুল-এর মাঝে ,
মোর স্থান দেয় কয়জন??
এই ধীরূজ ধরাধামের,
নিষ্করূণ-দের পদাতলেই ,
হয় মোর অন্তর্ধান ।
আপনি কি সরকারি চাকরির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন? তাহলে এখানে ক্লিক করুন : siksakul.com
Poem In Bengali 2024 | Bangla premer Kobita
তোমার চোখে দেখেছি আমি ভোরের শিশির,
যেন হৃদয়ের গভীরে প্রেমের বিস্ময় মিশির।
প্রতিটি মুহূর্ত তোমায় ঘিরে, যেন এক স্বপ্নের নীড়,
তোমার প্রেমে বিভোর আমি, হৃদয়ে তোমারই ছবি আঁকি।
তোমার হাসিতে খুঁজে পাই আমি জীবনের সার,
তোমায় ছাড়া পৃথিবী যেন মরুভূমির ধূ ধার।
তুমি আমার প্রেমের কবিতা, শব্দে শব্দে প্রেম বুনি,
তোমার নামের মালা জপি আমি, প্রতিটি সুরে তুমি শুনি।
যখন তুমি আমার হাত ধরো, সময় থেমে যায়,
তোমার চোখে চোখ রেখে, সব দুঃখ ভুলে যাই।
তুমি আমার ভোরের সূর্য, মিটিয়ে দাও সব অন্ধকার,
তোমার প্রেমে জীবন পেয়েছে নতুন এক আকার।
আমার প্রেমের কবিতায় শুধু তুমিই আছো ভাসি,
তোমার প্রেমের ছোঁয়ায় আমার হৃদয় হয়ে ওঠে রাশি।
প্রতিটি দিন, প্রতিটি রাত, শুধু তোমায় ঘিরে,
তুমি আমার জীবনের সঙ্গীত, প্রেমের সুরে বিরে।
তোমার প্রেমে আমি বেঁচে থাকি, তোমার প্রেমে আমি মরি,
তুমি আমার জীবনের কবিতা, প্রেমের অমর গল্পগাথা গড়ি।
এই প্রেমের কবিতা তোমায় নিবেদন, শুধু তোমারি নামে,
তুমি আমার প্রেম, তুমি আমার ধ্যান, জীবনের সবচেয়ে সুন্দর প্রেমের কাব্য।
যদি মন কাঁদে – হুমায়ূন আহমেদ
যদি মন কাঁদে তুমি চলে এসো
চলে এসো এক বরষায়
এসো ঝরো ঝরো বৃষ্টিতে জল ভরা দৃষ্টিতে
এসো কমলো শ্যামলো ছায়
চলে এসো এক বরষায়
যদিও তখনো আকাশ থাকবে বৈরি
কদমও গুচ্ছ হাতে নিয়ে আমি তৈরী
উতলা আকাশ মেঘে মেঘে হবে কালো
ঝলকে ঝলকে নাচিবে বজলি আলো
তুমি চলে এসো
চলে এসো এক বরষায়
নামিবে আঁধার বেলা ফুরাবার পরে
মেঘমল্লার বৃষ্টিরো মনে মনে
কদমও গুচ্ছ খোপায় জড়ায়ে নিয়ে
জল ভরা মাঠে নাচিব তোমায় নিয়ে
চলে এসো
তুমি চলে এসো এক বরষায় ।
আমি খুব অল্প কিছু চাই – হুমায়ুন আহমেদ
আমাকে ভালবাসতে হবে না,
ভালবাসি বলতে হবে না.
মাঝে মাঝে গভীর আবেগ
নিয়ে আমার ঠোঁট
দুটো ছুয়ে দিতে হবে না.
কিংবা আমার জন্য রাত
জাগা পাখিও
হতে হবে না.
অন্য সবার মত আমার
সাথে রুটিন মেনে দেখা
করতে হবে না. কিংবা বিকেল বেলায় ফুচকাও
খেতে হবে না. এত
অসীম সংখ্যক “না”এর ভিড়ে
শুধু মাত্র একটা কাজ
করতে হবে আমি যখন
প্রতিদিন এক বার “ভালবাসি” বলব
তুমি প্রতিবার
একটা দীর্ঘশ্বাস
ফেলে একটু
খানি আদর মাখা
গলায় বলবে “পাগলি”
বাবার চিঠি __হুমায়ূন আহমেদ
আমি যাচ্ছি নাখালপাড়ায়।
আমার বৃদ্ধ পিতা আমাকে পাঠাচ্ছেন তাঁর
প্রথম প্রেমিকার কাছে।
আমার প্যান্টের পকেটে সাদা খামে মোড়া বাবার লেখা দীর্ঘ পত্র।
খুব যত্নে খামের উপর তিনি তাঁর প্রণয়িনীর নাম লিখেছেন।
কে জানে চিঠিতে কি লেখা – ?
তাঁর শরীরের সাম্প্রতিক অবস্থার বিস্তারিত বর্ণনা ?
রাতে ঘুম হচ্ছেনা, রক্তে সুগার বেড়ে গেছে
কষ্ট পাচ্ছেন হাঁপানিতে – এইসব হাবিজাবি। প্রেমিকার কাছে
লেখা চিঠি বয়সের ভারে প্রসঙ্গ পাল্টায়
অন্য রকম হয়ে যায়।
সেখানে জোছনার কথা থাকে না,
সাম্প্রতিক শ্বাসকষ্ট বড় হয়ে উঠে।
প্রেমিকাও একটা নির্দিষ্ট বয়সের পর
রোগভুগের কথা পড়তে ভালবাসেন।
চিঠি পড়তে পড়তে দরদে গলিত হন –
আহা, বেচারা ইদানিং বড্ড কষ্ট পাচ্ছে তো
জন্মভূমি – গোবিন্দচন্দ্র দাস
জননী গো জন্মভূমি তোমারি পবন
দিতেছে জীবন মোরে নিশ্বাসে নিশ্বাসে!
সুন্দর শশাঙ্কমুখ, উজ্জ্বল তপন,
হেরেছি প্রথমে আমি তোমারি আকাশে।
ত্যাজিয়ে মায়ের কোল, তোমারি কোলেতে
শিখিয়াছি ধূলি‐খেলা, তোমারি ধূলিতে।
তোমারি শ্যামল ক্ষেত্র অন্ন করি দান
শৈশবের দেহ মোর করেছে বর্ধিত।
তোমারি তড়াগ মোর রাখিয়াছে প্রাণ,
দিয়ে বারি, জননীর স্তন্যের সহিত।
জননীর করাঙ্গুলি করিয়া ধারণ,
শিখেছি তোমারি বক্ষে বাড়াতে চরণ।
তোমারি তরুর তলে কুড়ায়েছি ফল,
তোমারি লতার ফুলে গাঁথিয়াছি মালা।
সঙ্গীদের সঙ্গে সুখে করি কোলাহল,
তোমারি প্রান্তরে আসি করিয়াছি খেলা।
তোমারি মাটিতে ধরি জনকের কর,
শিখেছি লিখিতে আমি প্রথম অক্ষর।
ত্যাজিয়া তোমার কোল যৌবনে এখন,
হেরিলাম কত দেশ কত সৌধমালা।
কিন্তু তৃপ্ত না হইল এ দগ্ধ নয়ন,
ফিরিয়া দেখিতে চাহে তব পর্ণশালা।
তোমার প্রান্তর নদী, পথ, সরোবর,
অন্তরে উদিয়া মোর জুড়ায় অন্তর।
তোমাতে আমার পিতা পিতামহগণ,
জন্মেছিল একদিন আমারই মতন।
তোমারি এ বায়ু তাপে তাঁহাদের দেহ
পুষেছিলে, পুষিতেছ আমায় যেমন।
জন্মভূমি জননী আমার যথা তুমি,
তাঁহাদেরও সেইরূপ তুমি—মাতৃভূমি।
তোমারি ক্রোড়েতে মোর পিতামহগণ
নিদ্রিত আছেন সুখে জীবলীলা‐শেষে
তাঁদের শোণিত, অস্থি সকলি এখন
তোমার দেহের সঙ্গে গিয়েছে মা মিশে।
তোমার ধূলিতে গড়া এ দেহ আমার
তোমার ধূলিতে কালে মিশাবে আবার।