বাংলা অনুগল্প -“নিঃস্বার্থ ভালোবাসা” বাংলা সাহিত্যের একটি নতুন অনুগল্প, যা ভালোবাসার নিঃস্বার্থিক স্বভাব এবং এর গভীরভাবে মানুষের জীবনের প্রতি প্রভাব নিয়ে বিচার করে। এই অনুগল্পে প্রধান চরিত্র একটি নিঃস্বার্থ প্রেমের কাহিনী নিয়ে নানা সংক্রান্ত ঘটনা ও অবদানের নানান মুহূর্ত বর্ণিত হয়েছে। এই অনুগল্পে ভালোবাসা নিয়ে একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি দেখানো হয়েছে, যেখানে নিঃস্বার্থিকতা এবং মেধা নিয়ে উজ্জ্বল করা হয়েছে। চরিত্রের মধ্যে নিঃস্বার্থিক ভালোবাসা নিয়ে অনেক প্রশ্ন ও অনুভূতি বিষয়ে গভীরভাবে চিন্তা করা হয়েছে। অনুগল্পের ভাষা সহজ এবং বিষয়টি অত্যন্ত মনোহর। প্রতিটি ঘটনা যত্নে এবং মনোযোগে বর্ণিত হয়েছে, যা পাঠকদের মনের গভীরতা ছুঁয়ে তুলবে। “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা” বাংলা সাহিত্যে একটি নতুন চিত্র প্রদান করে, যা নিঃস্বার্থিক ভালোবাসার গুরুত্বপূর্ণ মূল্যবান স্বরূপ ও তা মানবিক সম্পর্কের গভীরতা ও মূল্যায়ন নিয়ে চিন্তা করতে উৎসাহিত করে।
গল্পপ্রেমী বন্ধুদের জন্য “রাতের আলো ডট কম” আজত্ত একটি প্রেমের অনুগল্প (নিঃস্বার্থ ভালোবাসা) পরিবেশন করছে, তবে গল্পটি একটু ভিন্ন, প্রকৃত ভালোবাসার কাছে সকল প্রকার দোষ ক্ষমা হয়ে যায়। যাকে খুব ভালোবাসা যায় তাকে ছেড়ে থাকাটা খুবই কঠিন হয়ে যায়। গল্পটি এমনই এক পুরুষের, ঠিক কতটা ভালোবাসলে একজন পুরুষ তার স্ত্রীর সমস্ত দোষ ক্ষমা করে তাকে আপন করে নিতে পারে। গল্পটি শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইল, আশাকরি গল্পটি আপনাদের হৃদয় ছুঁয়ে যাবে।
বাংলা নতুন অনুগল্প – “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা” l Bengali Pathetic Love Story
বিয়ের ১৫ দিন যেতে না যেতেই মেয়েটার মাথা ঘুরানি আর বমি বমি ভাব দেখে শুধু আমি অবাক হইনি, বরং অবাক হয়েছে আমার গোটা পরিবার।
অবশেষে পরিবারের চাপে পড়ে নিয়ে গেলাম ডক্টরের কাছে! চেকাপ করে সত্যাটা প্রকাশ পেলো, আমি বাচ্চার বাবা হতে চলেছি! যেখানে আমার খুশি হওয়ার কথা সেখানে আমি নারাজ!! মেয়েটাকে বাড়ি নিয়ে আসলাম। মেয়েটার চোখে চোখ রেখে জানতে চাইলাম, সত্যি কি এই বাচ্চার বাবা আমি?
মেয়েটা চুপ করে আছে!
কোন উত্তর নেই!!
মাথায় হাত বুলিয়ে সাহস দিলাম, ভয় পেয়োনা। আমি তোমাকে ত্যাগ করবোনা, শুধু একজন পুরুষ হয়ে সেই পুরুষেকে ধিক্কার জানাবো, যে আমার স্বপ্নটা পূরণ হতে দেয়নি!
মেয়েটার চোখ দিয়ে শুধু জল ঝরছে। কাদতে কাদতে হেস্কি উঠে গেছে তার। কান্নার আওয়াজ আমার অন্তর ভেঙ্গে খান খান করে দিচ্ছে। আমি উত্তর পেয়ে গেছি! তবুও তাকে দোষ দেয়নি।ভাগ্য বলে চালিয়ে নিলাম! ওকে এতটাই ভালোবাসি যে, ছুড়ে ফেলতে পারলাম না!
আমি পরিবার থেকে বঞ্চিত হলাম। অন্য অফিসে বদলি হলাম। মেয়েটা কেমন জানি বোবা হয়ে গেছে, বাড়ি একা একা মন মরা হয়ে থাকে সারাক্ষণ। কোন কথা বলে না। কাঁদতে কাঁদতে চোখের নিচে কালো দাগ পড়ে গেছে! হঠাৎ এক গভীর রাতে হু হু করে কেঁদে উঠেছে। আমি চমকে গেলাম। জেগে দেখি মেয়েটা আমার বুকের উপর মাথা রেখে চোখের জলের আমার গেঞ্জি ভিজিয়ে ফেলছে। চোখ মুছে দিয়ে আবার বুকে জড়িয়ে নিলাম। আমি ওকে একটুও ঠকাইনি তবে সে আমাকে ঠকিয়েছে এটাই তার দুঃখ। তবে বেপার না, আমি ঐ বাঁচ্চা কে নিয়েই স্বপ্ন দেখতে শুরু করলাম!
বিয়ের বয়স ৮ মাস হতেই বাচ্চা ভূমিষ্ঠ হলো।দুঃখের বিষয় বাচ্চাটা ছিলো মরা! মেয়েটার জ্ঞান ফেরার পরে যখন জানতে পারলো বাচ্চাটা মারা গেছে, সে তখন গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে আমাকে ডাক দিয়ে আবার বেহুশ হয়ে গেলো। তার পর থেকে মেয়েটা আর কথা বলতে পারেনা। এখনো দুজন দুজনকে পাগলের মত ভালবাসি!
বিয়ের বয়স আজ চার বছর, বাবা হওয়ার স্বপ্নটা আর পূরণ হলোনা। তবুও সারাদিন পরিশ্রম শেষে যখন জিও লাইটের আলো নিভিয়ে মেয়েটা আমার বুকের উপর মাথা রাখে, বিশ্বাস করুন….!! আমি তখন স্বর্গের ছোঁয়া পাই।
ভালো থাকুক ভালবাসা!! ভাল থাকুক ভালবাসার মানুষগুলো ভালবাসার কাছে অনেক বড় ভুলও ক্ষমার যোগ্য হয়ে যায়! ভালবাসুন, কিন্তু কিছু গোপন রেখে না। সম্পর্ক জড়াবার আগে সব সত্য বলে দিন, মাফ চেয়ে নিন!! তারপর দেখবেন আপনিই শ্রেষ্ট প্রেমিক-প্রেমিকা/স্বামী-স্ত্রী।
বাংলা অনুগল্প – রাতের কাছে l Premer anugolpo l
‘বাবা দেখেছিল অন্বেষকে? মানে… খেয়াল করেছিল?’… মাঝরাতের অন্ধকারের স্তব্ধতা ভেঙ্গে সোহিনী প্রশ্নটা ছুঁড়ে দেয় কন্যা ঐশীর দিকে।
ঐশী ক্লান্ত গলায় বলে, ‘জানিনা। পরে আবার যখন আমরা গেলাম সন্ধেবেলা, তখনই ভেন্টিলেশানে… একটা ঘোরে ছিল……। কেন?’
-‘না, একটু হয়ত নিশ্চিন্ত হত। তোর ব্যাপারে সারাক্ষণ একটা চিন্তা…’
-‘কিসের চিন্তা? উফফফ মা-আ-আ! অন্বেষ আমার বন্ধু, ব্যস। আর কিচ্ছু এই মুহূর্তে ভেবোনা।’
-‘না-আ-আ!’ বিরক্তস্বর সোহিনীর, ‘আমি ভাবছিনা। কিন্তু তুই একটু ভাব। ছেলেটা সারাক্ষণ আমাদের সঙ্গে দৌড়চ্ছে। হাসপাতাল, ডাক্তারের চেম্বার, প্যাথলজি-ল্যাব, কোথায় নয়? নিছক বন্ধুত্ব? হয়ত তোকে… তোর যা মেজাজ, আর তুই ওর সঙ্গে যা ঝগড়া করিস, হয়ত তোকে কিছু বলবার সাহসটাই পায়নি এদ্দিন।’
-‘উফফ মা, এখন বাবার এই অবস্থা! আচ্ছা… তোমার এই উদ্ভট ভাবনাগুলো আসে কোত্থেকে?’
-‘নিজে যেদিন মা হবি, বুঝবি। যাকে এসব ভাবনাগুলো বলি, সে তো এখন…’
-‘ভালো হয়ে যাবে বাবা। দেখো, ঠিক।’ ঐশী জড়িয়ে ধরে মাকে।
-‘আমি কচি খুকি নই। ডাক্তার তো সবই আমার সামনে বলল। চান্স কম।’ …ফুঁপিয়ে ওঠে সোহিনী… ‘হয়ত আমি হারিয়ে ফেলছি। আমার সবচেয়ে মুল্যবান জিনিস, সম্পর্ক… হারিয়ে ফেলছি। সেজন্যই বলছি, হারিয়ে ফেলিসনা। মুল্যবান সম্পর্ক সহজে পায়না মানুষ! চিনতে শেখ। ছেলেটা সারাক্ষণ পাশে থাকছে বিপদের দিনে। এরপরও যদি না বুঝিস… ‘
মা-মেয়ে দুজনে দুজনকে আঁকড়ে থাকে। রাত ফিকে হয়ে আসে সম্পর্ক ভাঙ্গাগড়ার খবর বুকে চেপে।
Premer Anugolpo l বাংলা অনুগল্প – একসাথে
চৈত্রসেলের ডিসকাউণ্টের লোভটা আজও ছাড়তে পারে না কমলিকা। যতই অনলাইন শপিং হোক আর শপিং মলের এসির হাওয়া থাক এই চৈত্রের বাজারে ঘরকন্নার হাজার-একটা টুকিটাকি কিনতে যা মজা তা আর অন্যকোথাও নেই। ছেলেমেয়েরা কেরিয়ারের সিঁড়ি চড়তে ব্যস্ত। এনিয়ে তার যদিও কোনও মন খারাপ নেই। এইটাই তো সময় এখন খাটবে না তো কবে খাটবে। সবার সঙ্গে সেভাবে দেখা না হলেও সবার জন্যই কেনাকাটা করে প্রতি বছরই। সে কারও ভালো লাগুক আর নাই লাগুক কেউ পরুক আর নাই পরুক। তবে ওর পছন্দ করে দেওয়া জিনিস কারও পছন্দ হয়নি এমনটা কেউ কোনোদিন বলতে পারবে না। সারা সন্ধ্যে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে সবকিছু জিনিসপত্র কিনে বাড়ির দিকে পা বাড়াল কমলিকা।
এমন সময় কালবৈশাখী শুরু হল সেই সাথে নামল বৃষ্টি আর সঙ্গে সঙ্গে আরও একজনের উদয় হল- সে অনন্ত, কমলিকার অফিসফেরতা স্বামী।
“একি, তোমার ছাতা কোথায়?”
“ছাতা? নিয়ে বেরোতে ভুলে গেছি…”
কমলিকার খটকা লাগে বলে,“আমি তো নিজে তোমার ব্যাগে ঢুকিয়ে দিয়েছিলাম…”
“তাই? তাহলে সিওর অফিসে ফেলে এসেছি…”
“আর ক’টা ছাতা হারাবে শুনি!!!…”
বৃষ্টির বেগ বাড়তে থাকে, বেশীরভাগটাই ভিজে যায় দুজনে। কমলিকারও গজরানি বেড়ে চলে।
বাড়ি ফিরে কমলিকা স্বামীর ব্যাগ হাতড়ায়। দেখে ছাতাটা ব্যাগেই আছে ঠিক। এতক্ষণে সবকিছু জলের মতো পরিষ্কার। রেগে আগুন হওয়ার বদলে হেসেই ফেলল।
ভাবে, বিয়ের পঁচিশটা বছর কেটে গেল। কিন্তু নিজের ছাতাটা লুকিয়ে একটাই ছাতার তলায় একসাথে যাওয়ার লোভটা অনন্ত আজও সামলাতে পারেনা।
আরও ভাবে এটাই তো চেয়েছিল কমলিকা হ্যাঁ এটাই তো চেয়েছিল…
গল্পগুলো পড়ার জন্য আপনাদেরকে ধন্যবাদ।
আমাদের এই বাংলা নতুন অনুগল্প যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে কমেন্টস বক্সে কমেন্ট করে জানাবেন আর বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করবেন।
আর আপনি যদি বিভিন্ন ধরনের উক্তি, গল্প, কবিতা পড়তে পছন্দ করেন তাহলে “রাতের আলো ডট কম” ওয়েব পোর্টালটি নিয়মিত ফলো করুন। এখন থেকে আমাদের ওয়েব পোর্টালে ‘ভূতের গল্পের’ একটি নতুন গল্পের সিরিজ শুরু হচ্ছে আশা করি এই বাংলা গল্পের সিরিজটাও আপনাদের মন কেড়ে নেবে।